এক পায়ে লিখে জিপিএ-৫ পেলেন তামান্না

3
Spread the love

 যশোর  প্রতিনিধি।।

তামান্না আক্তার নূরা। জন্ম থেকেই দুটি হাত, একটি পা নেই। এক পায়ে লিখেই প্রতিটি পাবলিক পরীক্ষা (পিইসি, জেএসসি এসএসসি) অর্জন করেছেন জিপিএ-৫। এবার এইচএসসিতেও জিপিএ-পেয়েছেন তিনি। তামান্না জানান, তিনি যশোর শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ঝিকরগাছা উপজেলার বাঁকড়া ডিগ্রি কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে পরীক্ষা দিয়েছিলেন। তামান্না যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার বাঁকড়া ইউনিয়নের আলীপুর গ্রামের রওশন আলী খাদিজা পারভীন শিল্পী দম্পতির সন্তান। বাবা স্থানীয় ছোট পোদাউলিয়া দাখিল মাদ্রাসার (নন এমপিও) বিএসসির শিক্ষক। মা গৃহিণী। তিন সন্তানের মধ্যে তামান্না সবার বড়। তামান্না জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণাধর্মী কোনো বিষয়ে পড়াশোনা করে বিসিএস ক্যাডার হতে চান। পাশাপাশি দেশ মানুষের কল্যাণে গবেষণায় আত্মনিয়োগ করতে আগ্রহী তিনি। যদিও পরিবারের আর্থিক অনটনে সেই স্বপ্ন কীভাবে পূরণ হবে জানেন না তামান্না। স্বপ্নকে বাঁচিয়ে রাখতে ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটি চিঠিও লিখেছেন।

বাঁকড়া ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ সামছুর রহমান জানান, তামান্না আমাদের কলেজের শিক্ষার্থী। তার মেধার প্রশংসা আমাদের শিক্ষকরা সব সময়ই করেন। তামান্না জন্মপ্রতিবন্ধী হয়েও প্রতিবন্ধকতা জয় করেছে, দেখিয়ে দিয়েছে সমাজকে। শুধু পড়াশোনা নয়, তামান্না ভালো ছবিও আঁকে। এমনকি কম্পিউটার প্রযুক্তিতেও সে দক্ষ। জন্ম থেকেই তার দুটি হাত একটা পা নেই। অথচ একটা পা দিয়েই তামান্নার যুদ্ধ চলছে। সে ভবিষ্যতে অনেক ভালো কিছু করবে। তবে এখন সবচেয়ে বেশি দরকার সরকারের সহযোগিতা। তামান্নার বাবা রওশন আলী বলেন, ছোটবেলা থেকেই তামান্নার স্বপ্ন ছিল ডাক্তার হওয়ার। কিন্তু তার শারীরিক প্রতিবন্ধকতার বিষয়টি উপলব্ধি করে এখন সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে গবেষক হতে চায়। তিনি আরও জানান, তার আরও দুটি সন্তান লেখাপড়া করছে। তিনি নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক। তার আর্থিক অবস্থায় কীভাবে তামান্নার স্বপ্ন পূরণ করবেন তা নিয়েও চিন্তিত। এজন্য তিনি সরকারের সহযোগিতা কামনা করেছেন।