আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে যেন এমন ঘটনা আর না ঘটে

3
CREATOR: gd-jpeg v1.0 (using IJG JPEG v62), quality = 90
Spread the love

দেশে বহুল আলোচিত অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানকে গুলি করে হত্যা মামলার রায় ঘোষিত হয়েছে। হত্যার দায়ে টেকনাফের বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের তৎকালীন পরিদর্শক লিয়াকত আলী এবং ওই থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

একই মামলায় আরো কয়েকজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়ার পাশাপাশি উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কয়েকজনকে বেকসুর খালাসও দিয়েছেন বিজ্ঞ আদালত। কক্সবাজার জেলা দায়রা জজ আদালত থেকে ঘোষিত এই রায় হয়তো আরও আইনি লড়াইয়ের পদক্ষেপ পার হয়ে চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছাবে, তারপরেও বর্তমানে রায় যুগান্তকারী।

২০২০ সালের ৩১ জুলাই দিবাগত রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর তল্লাশি চৌকিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। এরপরে সাবেক ওই সেনা কর্মকর্তার পক্ষে দেশবাসীর সহমর্মিতা সাবেক সেনা কমিউনিটির ক্ষোভসহ নানা ঘটনাবহুল সময় দেখেছে দেশবাসী। সেনা পুলিশ বাহিনীর সর্বোচ্চ পর্যায়ের সরাসরি হস্তক্ষেপে যে কোন নেতিবাচক পরিস্থিতি এড়ানো গিয়েছে সফলতার সঙ্গে। সাম্প্রতিক সময়ে দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো কোনো বিপথগামী সদস্যের দ্বারা বিচার বর্হিভূত হত্যার বিষয়টি দেশে বিদেশে নানা মাত্রায় আলোচিত-সমালোচিত। মানবাধিকার সংস্থা গণমাধ্যমও সোচ্চার এইধরণের ঘটনার বিরুদ্ধে। এই প্রেক্ষাপটে মেজর সিনহা হত্যা মামলার রায় একটি ইতিবাচক মাইলফলক, এছাড়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য তথা পুলিশ সদস্যদের পেশাদারিত্ব বৃদ্ধিতেও একটি সতর্কতামূলক শিক্ষা বলে আমরা মনে করি।

বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে পুলিশের দায় দায়িত্ব সবচেয়ে বেশি বলে প্রতীয়মান হয়, আবার তারাই সবচেয়ে বেশি আইন প্রয়োগ করতে পারে। কোনো অপরাধ সংগঠিত হবার পরে মামলার যথাযথ তদন্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা, অপরাধীকে বিচারের আওতায় আনা, মামলার বাদী, ভিকটিম সাক্ষীদের নিরাপত্তা প্রদানসহ অর্পিত দায়িত্ব নির্মোহভাবে পালন করতে হয় তাদের। যা পুলিশের অগ্রাধিকারমূলক কাজ। এছাড়া মাঠ পর্যায়ে কাজ করতে গিয়ে সবচেয়ে বেশি জনসংশ্লিষ্ট হয়ে থাকেন তারা। এক কথায়, পুলিশ সদস্যদের উপরে জনগণের ভরসা যেমন বেশি, তাদের দায়িত্ব-কর্তব্যও বেশি। যা পুলিশ সদস্যরা নিজেদের জীবন বাজি রেখে সর্বদা পালন করে যাচ্ছেন। তাদের রয়েছে মহান মুক্তিযুদ্ধের বিরাট ঐতিহ্য।

দুঃখজনক হলেও সত্য যে, কিছু বিপথগামী উচ্চাভিলাষী পুলিশ সদস্য বিভিন্ন সময় নানা অনাকাঙ্খিত ঘটনার জন্ম দেওয়ার পাশাপাশি নানা অপকর্মে জড়িত হয়। যার দায় গিয়ে বর্তায় পুরো বাহিনীর উপরে, যা খুবই দুঃখজনক। আমাদের আশাবাদ, অদূর ভবিষ্যতে মেজর সিনহা হত্যাকাণ্ডের মতো কোন ধরণের কোনো ঘটনা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কারো দ্বারা দেশে সংঘটিত হবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিষয়ে যথেষ্ট যত্নবান সচেতন বলে আমাদের বিশ্বাস।