বাগেরহাট প্রতিনিধি।।
বাগেরহাটে মাটি খুঁড়লেই বেরিয়ে আসছে নানা ধরনের প্রত্ন সম্পদ। দেশের প্রত্নতত্ব অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, ষাট গম্বুজ মসজিদের আশে পাশের এলাকায় মাটির নিচে হযরত খান জাহান আলীর বসবাসের নানা চিহ্ন রয়েছে। এগুলো ছয়শ’ থেকে সাড়ে ছয়শ’ বছরের পুরোনো।
ষাট গম্বুজ মসজিদ বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলীয় জেলা বাগেরহাটে অবস্থিত। ১৫ শতকের দিকে খান জাহান আলী নামের প্রখ্যাত সুফি দরবেশ এ মসজিদটি নির্মাণ করেন।
প্রত্নস্থলটিকে ইউনেসকো বিশ্ব ঐতিহ্য কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করেছে। মসজিদটিতে ৮১টি গম্বুজ রয়েছে। এটিকে ষাট গম্বুজ মসজিদ কেন বলা হয়, এর সঠিক কোনো ব্যাখ্যা পাওয়া যায় না।
এ মসজিদটি ছাড়াও এর আশপাশে আরও বেশ কিছু ঐতিহাসিক নিদর্শন রয়েছে; মসজিদের ঠিক পশ্চিমে সুবিশাল দিঘি ও পীর খান জাহান আলীর সমাধি উল্লেখযোগ্য।
আর, এই ষাট গম্বুজ মসজিদের আশপাশে একটু একটু করে মাটি খুড়লেই বেরিয়ে আসছে প্রায় সাড়ে ৬০০ বছর আগের সুলতানি আমলের পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শন।
এরই মধ্যে মাটির নিচে ইটের দেয়াল, বালুর তৈরি মেঝে, সুলতানি আমলে ব্যবহৃত মাটির তৈরি পানির পাত্র, ঢাকনাসহ নানা তৈজসপত্র পাওয়া গেছে।
প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের খুলনার আঞ্চলিক পরিচালক আফরোজা খান মিতার নেতৃত্বে বিভিন্ন গ্রেডের সাতজন কর্মকর্তা ও ১৪ জন শ্রমিক এই খননকাজে অংশগ্রহণ করছেন।
তিনি জানান, খানজাহানের বসত এলাকার ভূমির স্তর বিন্যাস, স্থাপত্য শৈলি ও কালানুক্রমিক সময় বের করাই এ খননের মূল উদ্দেশ্য।
২০২১ সালের অক্টোবর-নভেম্বর মাসে শুধুমাত্র বাগেরহাট সদর উপজেলায় প্রত্নতাত্ত্বিক জরিপ হয়। জরিপ চালিয়ে ১৫০টির বেশি পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শন রেকর্ড করা হয়।
যা পাঁচশ’ বছর ও তার বেশি আগেকার। সম্প্রতি যে খনন কাজ চলছে সেখান থেকে মধ্যযুগের মানুষের বসবাসের বিভিন্ন স্থাপনার নিদর্শন বেরিয়ে আসছে।
আর প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর বাগেরহাটের কাস্টোডিয়ান মো. যায়েদ বলেন, বিশ্ব ঐতিহ্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ সুলতানি আমলে বাগেরহাটে পুরাকীর্তিগুলো বিশ্বের দরবারে সমাদৃত।
ষাট গম্বুজ মসজিদসহ হযরত খানজাহানের বিভিন্ন পুরাকীর্তি দেখতে প্রতিনিয়ত বাগেরহাটে আসেন দেশি-বিদেশি হাজার হাজার দর্শনার্থীর।
২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর খনন কাজ শুরু হয়ে চলবে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত। ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত খননসহ নানা কাজে ব্যস্ত সময় পার করেছেন প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের লোকজন।