০ মোঃ শামীম হোসেন – বাজুয়া (দাকোপ) ।।
খুলনার দাকোপের বাজুয়ার সাপ্তাহিক হাটে মঙ্গলবার বসেছে আমন ধানের মেলা। বাজুয়া হাটে যেন আমন ধান বেঁচার হিড়িক পড়েছে। জানা যায় প্রতি মঙ্গলবার বাজুয়ার সাপ্তাহিক হাট আর বুধবার চালনায় সাপ্তাহিক বাজার বসে। আমন ধান বিক্রয় করতে আসা কৃষক প্রভাষ থান্দার বলেন এই দুই হাটে দাকোপের সকল এলাকার আমন ধান বিক্রয় করা হয়। এছাড়া বাড়িতে বাড়িতে ও যেয়ে ব্যাপারীরা ধান কিনে নিয়ে আসে। বাজুয়া হাটে ধান বেঁচতে এসে অনিমেষ রায় বলেন এবার আমন ধানের বাম্পার ফলন এক বুক স্বপ্ন নিয়ে কৃষক দিন গুনছে সোনালী দিনের আশায়। এলাকা ঘুরে দেখা যায় দাকোপের সকল এলাকার কৃষকেরা আমন ধান কাটার ও বিক্রয়ের মহা-উৎসবে মেতে উঠেছে। কেউ কেউ ধান কেটে বিলে ফেলে রেখেছে আবার কেউ কেউ ধান বাড়িতে এনে মাড়াই করছে। আবার কেউ কেউ ধান পাঁকার অপেক্ষায় প্রহর গুনছে। বাজুয়া চাঁদপাড়ার কৃষক সুপদ মন্ডল জানান যাদের জমি উঁচু ও যারা আগতি ধান রোপণ করতে পেরেছে তাদের ধান কাটা শেষ হয়েছে। এবার বিঘা প্রতি ১৮-২০ মন করে ধান হয়েছে বলে তিনি জানান। তবে প্রাকৃতিক আবহাওয়া এখনও কৃষকদের অনুকূলে আছে আর যদি এভাবে থাকে তবে প্রতিটি কৃষকেরাই এবার লাভবান হবে। কৈলাশগঞ্জ এলাকার তক্তামারী গ্রামের আমন চাষী প্রশান্ত রায় জানান প্রাকৃতিক আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় প্রায় কৃষকের আমন ধানের ফলন ভালো হয়েছে। এখন বাজার ধরের উপর নির্ভর করছে কৃষকের সকল সুখ-দুঃখ। লাউডোব এলাকার খুুটাখালী গ্রামের আমন চাষী বাবুরাম সরদার জানান এবার তরমুজের বাম্পার ফলনের পর আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। কেননা সকল কৃষকের জমিতেই ধানের ভালো ফলন হয়েছে তাই এভাবে যদি আমরা ভালো ভাবে জমি থেকে ধান কেটে ঘরে তুলতে পারি আর বাজার দর যদি ভালো থাকে তবে কৃষকের কষ্ট সার্থক হবে। একই কথা বলেন বানীশান্তা আমতলা গ্রামের আমন চাষী প্রীতিশ সরকার বাজার দর ঠিক থাকলে আমন চাষীদের স্বপ্ন এবার পুর্ন হবে খুশির হাসিতে হাসবে এলাকার সকল কৃষক। দাকোপ উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মেহেদী হাসান জানান এবার দাকোপে আমন ধানের বাম্পার ফলন এবং আমাদের লক্ষ মাত্রা অতিক্রম করেছে কৃষকেরা আর আমন ধানের ফলনও ভালো হয়েছে এখন দামের উপর নির্ভর করছে কৃষকের ভাগ্য। এবার আমন ধান উৎপন্ন হয়েছে ১৯১৩৫ হেক্টর জমিতে। টেকেরহাট থেকে ধান কিনতে আসা ব্যাপারী সিরাজুল ইসলাম বলেন আজ বাজুয়া বাজারে ইরি ধান টেন- তিরিশ বিক্রয় হয়েছে প্রতি মন ১০২০-১০৩০ টাকা পর্যন্ত, তেইশ ধান প্রতি মন ৯৩০-৯৪০ টাকা, চিনিকানাই ধান প্রতি মন ১৭০০-১৭৫০ টাকা পর্যন্ত। খুলনা থেকে ধান কিনতে আসা ব্যাপারী জনি শেখ জানান এবার ধানের বাজার চড়া গত বছরের চেয়ে ধানের দাম বেশি। দাকোপের কৃতি সন্তান এলাকার মা- মাটি মানুষের নেত্রী ও কৃষকদের নয়নের মনি বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি এ্যাডঃ গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার এমপি বলেন আমি নিজেও কৃষকের সন্তান তাই কৃষকের ব্যাথা আমি বুঝি। তাই এই এলাকার কৃষকদের চাষকৃত কৃষি পণ্য সঠিক ভাবে উৎপাদন করে সঠিক মূল্য পায় তার জন্য নদী খনন সহ রাস্তা-ঘাটের উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। এবার তরমুজের আগেই লাউডোব ঘাটে ফেরি চালু হবে। এর ফলে কৃষক তাদের চাষকৃত ধান ও তরমুজ সহ কৃষি পণ্য দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে নিয়ে বিক্রয় করে ন্যায্য মূল্য পাবে।