দাকোপের মানুষ কাঁপছে হাড় কাঁপানো শীতে

3

মোঃ শামীম হোসেন- বাজুয়া (দাকোপ) ।।

 পৌষ মাসের শুরুতেই হঠাৎ করে হাড় কাঁপানো শীতে কাঁপছে খুলনার দাকোপসহ সারাদেশের মানুুুষ। উত্তর-পশ্চিমা কনকনে হিমশীতল হাওয়া মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশায় বিপর্যস্ত হয়ে উঠেছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। কনকনে হিম বয়ে আনা বাতাসে হাড় কাঁপুনি শীত। শীতের পারদ নামতে শুরু করার পরে জনজীবনেও শীতের চেনা ছবি ফিরে এসেছে। ঝলমলে রোদে শীতের পোশাক পরেও ঠক ঠক করে কাঁপছে মানুষ। গত সন্ধ্যার পরে শহরের অলিগলিতে আগুন জ্বেলে চলে হাত-পা সেঁকেছে মানুষ। রাত একটু গড়াতেই রাস্তা-ঘাট হয়ে পড়ে সুনসান। গত দু’দিন ধরে খুলনার দাকোপে এমন চিত্র দেখা যায়। সকালে পৌষের কনকনে ঠাণ্ডায় কাঁপছে শহর-গ্রাম। গত কয়েক দিনের শীতের কামড়ে অনেকেরই অবস্থা কাহিল। খুলনা জেলা আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা বলেন, খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। গত রাতের চেয়ে আজ রাতে তাপমাত্র আরও ২/ডিগ্রি কমতে পারে।

এলাকা ঘুরে দেখা যায় তাপমাত্রার পারদ দিনদিন যত নামছে, ঠাণ্ডায় জবুথবু শহরে-গ্রামে ততই বাড়ছে শীতের পোশাকের বিক্রি। দাকোপের চালনা পৌরসভার বাসিন্দা রেজা বলেন, দু’দিন থেকে জেঁকে বসেছে শীত। সকাল থেকে গরম কাপড় গায়ে দিয়ে, কানটুপি গলায় মাফলার পেঁচিয়ে বাইরে বের হতে হচ্ছে। শীতের তীব্রতা এত বেশি ঘর থেকে বের হওয়া দায়। শহর ছাড়া গ্রামে শীতের কামড় বেশি বলে জানান বাজুয়া গ্রামের দীপক সরদার গত দু’দিন থেকে প্রচণ্ড শীত পড়ছে। চুনকুড়ি বেড়ীবাঁধের ওপর বসবাসকারী গরিব অসহায় মানুষগুলো খুব কষ্টে আছে। এদিকে কনকনে শীত কুয়াশার কারণে বিশেষ করে শিশু-বৃদ্ধদের দুর্ভোগ বেড়ে গেছে। সর্দি-কাশি, জ্বর, শ্বাসকষ্টজনিত রোগ-ব্যাধির প্রকোপ বেড়েছে। হতদরিদ্র নিম্নআয়ের দিনে এনে দিনে খাওয়া মানুষজনের আয়-রোজগারের ক্ষেত্রেও পড়েছে বিরূপ প্রভাব। হঠাৎ করেই আবহাওয়ার পরিবর্তনে ছিন্নমূল মানুষকে চরম বেকায়দায় পড়তে হচ্ছে। হাঁড় কাঁপানো শীতে থেমে গেছে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। তীব্র শীতের কারণে মানুষ ঘর থেকে বের হতে পারছে না। ব্যবসা-বাণিজ্যসহ মানুষের দৈনন্দিন কাজ-কর্ম চলাফেরায় মারাত্মক বিঘ্নের সৃষ্টি হচ্ছে। খেটে খাওয়া মানুষগুলো কাজে যেতে পারছে না। এতে দরিদ্র, অসহায় ছিন্নমূল নিম্ন আয়ের মানুষের কষ্টের সীমা নেই। ছেলেমেয়ে নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। বিশেষ করে রেলস্টেশন, বস্তিত বেড়িবাঁধের ওপরে বসবাসকারী হতদরিদ্র ছিন্নমূলের মানুষদের। প্রচণ্ড শীত পড়লেও বিগত বছরগুলোর খুলনায় সরকারি-বেসরকারি বা ব্যক্তি উদ্যোগে এখনও পর্যন্ত তেমন শীতবস্ত্র বিতরণ করতে দেখা যায়নি। খুলনা শিশু হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. আল আমিন রাকিব বলেন, তীব্র শীতের কাবু হচ্ছে শিশুরা। ভাইরাস জ্বর, সর্দি-কাশি, শ্বাসকষ্টসহ নানান রোগে আক্রান্ত হচ্ছে তারা। হাসপাতালে রোগীর চাপ বেড়েছে। একই কথা বলছেন দাকোপ উপজেলা  হাসপাতালের ডাক্তাররাও ঢান্ডার সাথে সাথে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।