এক জেলার ৩ শতাধিক হাসপাতালের নেই পরিবেশগত ছাড়পত্র

1
Spread the love

হেদায়েৎ হোসেন, খুলনা ।।

খুলনা জেলায় সাড়ে তিন শতাধিক বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে। এর মধ্যে ৯৮ শতাংশেরই নেই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা। সেই সঙ্গে তিন শতাধিক হাসপাতাল ক্লিনিকের নেই পরিবেশগত ছাড়পত্র।

গত দুই বছরে ৭৪টি বেসরকারি হাসপাতাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার পরিবেশগত ছাড়পত্র পাওয়ার আবেদন করেছে। তবে একটি প্রতিষ্ঠানও পরিবেশগত ছাড়পত্র পায়নি। কারণ ছাড়পত্র পাওয়ার শর্তগুলো পূরণ করতে পারেনি এসব প্রতিষ্ঠান।

খুলনার পরিবেশ অধিদফতরের পরিদর্শক মারুফুল ইসলাম বলেন, পরিবেশ অধিদফতরে বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে ছাড়পত্রের জন্য ২০২০ সালে ৪১টি, ২০২১ সালে ৩৩টি আবেদন জমা হয়। পাশাপাশি আরও শতাধিক বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ডায়াগনস্টিক সেন্টারও বিভিন্ন সময়ে পরিবেশগত ছাড়পত্র পেতে আবেদন করে। কিন্তু একটি প্রতিষ্ঠানকেও পরিবেশ অধিদফতর থেকে ছাড়পত্র দেওয়া সম্ভব হয়নি। কারণ একটি প্রতিষ্ঠানেও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নেই।

খুলনা বেসরকারি প্রাইভেট হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. মিজানুর রহমান বলেন, স্বাস্থ্য বর্জ্য থেকে কঠিন, জটিল মারাত্মক সংক্রমণসহ বিভিন্ন রোগে অক্রান্ত হতে পারে মানুষ। এই বর্জ্য ব্যবস্থপনা আইনটি অনেক পরে চালু করা হয়েছে। এই কারণে অনেক বেসরকারি হাসপাতাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার এখনও পরিবেশ অধিদফতর থেকে অনুমোদন পায়নি।

তিনি বলেন, তরল স্বাস্থ্য বর্জ্য নষ্টের জন্য ইটিপি স্থাপনের জন্য পর্যাপ্ত জায়গা নেই ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক বেসরকারি হাসপাতালে। তবে প্রতিষ্ঠানের ছাদে ইটিপি স্থাপন করা যেতে পারে। আগামী তিন বছরের মধ্যে সব বেসরকারি হাসপাতাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার বর্জ্য শোধনের আওতায় আসবে।

খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক মঞ্জুরুল মুরশিদ বলেন, পরিবেশগত ছাড়পত্র না পাওয়া বেসরকারি হাসপাতাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারের তালিকা পরিবেশ অধিদফতর থেকে সংগ্রহ করার পর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

পরিবেশ অধিদফতর খুলনার পরিচালক সাইফুর রহমান খান বলেন, বেশ কিছু বেসরকারি হাসপাতাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার চিহ্নিত করা হয়েছে। চিহ্নিত করা এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রধান অফিসে পত্র প্রদান অনুমতি চাওয়া হয়েছে। অনুমতি পাওয়ার পর যেকোনও সময়ে এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এসব বেসরকারি হাসপাতাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার ঘুরে দেখা যায়, হাসপাতাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সামনে, যত্রতত্র ফেলে রাখা হয়েছে মেডিক্যাল বর্জ্য। এসব বর্জ্য থেকে ছড়াচ্ছে রোগ। ফেলে রাখা মেডিক্যাল বর্জ্যের মধ্যে রয়েছে জমাট বাঁধা রক্ত, ডায়রিয়া সংক্রমিত রোগীর কাপড়, রক্ত, পুঁজ, দেহে ব্যবহৃত স্যালাইন সিরিঞ্জ।

অ্যানাটমিক্যাল বর্জ্যের মধ্যে রয়েছে মানবদেহের কেটে ফেলা অঙ্গপ্রত্যঙ্গ, টিস্যু, গর্ভফুল কিংবা গর্ভসংক্রান্ত বর্জ্য, তেজস্ক্রিয় বস্তু দ্বারা সংক্রমিত বর্জ্য, অব্যবহৃত এক্স-রে মেশিন, হেড। তেজস্ক্রিয় বর্জ্যের মধ্যে রয়েছে রেডিও অ্যাকটিভ আইসোটোপ বিভিন্ন সরাঞ্জামাদি।

তাছাড়া স্বাস্থ্য বর্জ্যের মধ্যে কঠিন বর্জ্যগুলো খুলনা সিটি করপোরেশন প্রদিপন বেসরকারি হাসপাতাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে সংগ্রহ করে নিয়ে যায়। আর তরল বর্জ্যগুলো শোধনের জন্য ইটিপির প্রয়োজন হয়, যা এসব হাসপাতাল ক্লিনিকে নেই।