ঢাকা অফিস।।
তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এইচএসসি পরীক্ষার্থী এক তরুণীকে জনসম্মুখে পিটিয়ে রক্তাক্ত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ডিএনসিসির ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর তাইজুল ইসলাম চৌধুরি বাপ্পির বিরুদ্ধে। রূপনগর ২৩ নম্বর রোডের মাথায় মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে ঘটনাটি ঘটে। আহত ওই শিক্ষার্থীর নাম জুলিয়া আক্তার। তিনি রাজধানী মহিলা কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী রুপনগর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ (ডিজি) দায়ের করেছেন। সূত্র জানায়, কাউন্সিলর বাপ্পির ছোট বোনের রূপনগর আবাসিক এলাকার ২৩ নম্বর রোডে একটি গেঞ্জির ফ্যাক্টরি রয়েছে। সবুজা নামের এক গৃহকর্মী বাপ্পির ওই বোনের বাসায় কাজ করেন। আর ওই গৃহকর্মী সবুজা জুলিয়াদের বাসায় ভাড়া থাকেন। গতকাল (মঙ্গলবার) এক মাসের পাওনা টাকা চাইতে গেলে সবুজাকে ফ্যাক্টরিতে আটকিয়ে রাখেন বাপ্পির বোন। সবুজাকে উদ্ধার করতে গিয়ে বাপ্পির বোনের রোষানলে পড়েন জুলিয়া। তাদের দুজনকে সেখানে আটকিয়ে রাখেন কাউন্সিলেরর বোন ও বোনের জামাই। একপর্যায়ে জুলিয়া সেখান থেকে ছাড়া পেয়ে ২৩ নম্বর রোডের মাথায় আসলে কাউন্সিলর বাপ্পির রোষানলে পড়েন। কাউন্সিলরের সঙ্গে থাকা লোকজন তার ওপর হামলা করেন। কয়েক দফা তাকে মাটিতে ফেলে পেটাতে থাকেন কাউন্সিলরের লোকজন।জুলিয়াকে উদ্ধার করতে গিয়ে হামলার শিকার হন তার বাবা রানা ও ভাই জুয়েল। এদিকে হামলার শিকার জুলিয়া মঙ্গলবার রাতেই কাউন্সিলর বাপ্পির বিরুদ্ধে রূপনগর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগটি তুলে নিতে জুলিয়াকে কয়েক দফা হুমকি দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি স্থানীয় সংসদ সদস্যের কানে গেলে তিনি বুধবার সকালে জুলিয়া ও কাউন্সিলর বাপ্পিকে ডেকে একটি মধ্যস্থতা করেন। এতে উভয়পক্ষই আপসনামায় রাজি হয়। সংসদ সদস্যের উপস্থিতেতে আপসনামায় স্বাক্ষর করেন উভয়পক্ষ। জুলিয়া বলেন, আমি আমার অভিযোগ প্রত্যাহার করেছি। সকালে কাউন্সিলরের লোকজন আমাকে জোর করে তার অফিসে নিয়ে যায়। সেখান থেকে এমপি সাহেবের অফিসে যাই। তিনি বলেন, আমাকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করা হয়েছে। মানুষ মানুষকে কি এভাবে মারতে পারে? আমি নড়াচড়া করতে পারছি না। কাল (বৃহস্পতিবার) সকালে এইচএসসি পরীক্ষা। কীভাবে পরীক্ষা দিব। আজ (বুধবার) সকালে এমপি সাহেব আমাকে ডেকেছেন। সেখানে কাউন্সিলর বাপ্পিও ছিল। কাউন্সিলর তার ভুল বুঝতে পেরেছে। এমপি সাহেবের অনুরোধে আমি অভিযোগ তুলে নিয়েছি।
কাউন্সিলর তাইজুল ইসলাম বাপ্পি বলেন, আমার বোন, দুলাভাই ও ছোটভাইকে আটকিয়ে পিটানো হচ্ছে- এ খবর শুনে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে সত্যতা পাই। তারা আমার বোনকে মেরে কাপড় খুলে ফেলেছে। দুলাভাই অসুস্থ। হার্টের রোগী। তাকেও মেরেছে। ছোটভাইয়ের শরীরে অনেক জায়গায় জখম। ঘটনার পর তিনজনই হাসপাতালে ভর্তি। আমি তাদের উদ্ধার করেছি। চারপাশের লোকজন এ ঘটনার সাক্ষী। রূপনগর থানার ওসি আরিফুর রহমান সরদার বলেন, গতকালের (মঙ্গলবার) যে ঘটনা ঘটেছে- তা উভয়পক্ষ বসে মীমাংসা করেছে। একে অপরকে মিষ্টিও খাইয়েছে। এর বেশি আপাতত জানা নেই।