চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি||
নাতিজামাই জাহিদ হাসান নয়, নাতনি কামনা খাতুন নিজেই হত্যা করেছেন নানা শামসুল শেখকে (৭৫)। রাশেদ নামের একজনের সঙ্গে পরকীয়ার বিষয়ে জেনে যাওয়ায় তাকে হত্যা করা হয়। রোববার কামনা খাতুন তার প্রেমিক রাশেদকে জড়িত করে ১৬৪ ধারায় চুয়াডাঙ্গা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইদুল ইসলামের আদালতে নানা শামসুল শেখকে হত্যার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, স্বামী জাহিদ হাসানের সঙ্গে তালাকের আগেই কামনা খাতুন (২০) রাশেদের সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। সেই সম্পর্কের কথা জেনে যান নানা। বকাঝকাও করেন। পরে রাশেদের বুদ্ধিতেই ঘুমন্ত নানার ঘাড়ে কীটনাশক পুশ করেন কামনা। নানা উঠেই রাশেদকে দেখে ফেলেন। কিন্তু জাহিদ হাসানের চেহারার সঙ্গে রাশেদের চেহারার মিল থাকায় অন্ধকারে তাকে জাহিদ হাসানই মনে করেন। তাই জাহিদ হাসানের নামই বলতে থাকেন। পরকীয়া প্রেম টেকাতে নিজ হাতেই নানাকে খুন করেন কামনা খাতুন।
গত সোমবার মধ্যরাতে চুয়াডাঙ্গা পৌর শহরের বেলগাছী গ্রামে নিজ বাড়িতে ঘুমিয়ে ছিলেন শামসুল শেখ। মধ্যরাতে তার ঘাড়ে কীটনাশক দিয়ে ইনজেকশন পুশ করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হলে বুধবার সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। শামসুল শেখের মৃত্যুতে তার ছেলে রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় বুধবার সন্ধ্যায় কামনা খাতুনের সাবেক স্বামী জাহিদ হাসানকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
রফিকুল ইসলাম জানান, কামনা খাতুন (২০) তার ভাগ্নি। বাবা-মা না থাকায় ছোট বেলা থেকেই নানাবাড়িতেই তার বেড়ে ওঠা। দু’বছর আগে কামনা খাতুনের সঙ্গে বিয়ে হয় জাহিদের। কিন্তু জাহিদের অত্যাচার নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে কিছুদিন পরই তাকে তালাক দেন কামনা। তালাক দেয়ার কিছুদিন পর জাহিদ ক্ষমা চেয়ে ভালো হয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলে কামনা আবারও তাকে বিয়ে করেন। কিন্তু বিয়ের পর জাহিদ ফের নির্যাতন শুরু করলে কামনা তাকে আবারও তালাক দেন।
