স্টাফ রিপোর্টার||
ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ এর প্রভাবে উপকূলীয় জেলা খুলনায় বৈরি আবহাওয়া বিরাজ করছে। গত তিন দিন ধরে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন রয়েছে। শনিবার থেমে থেমে গুড়ি গুড়ি হলেও রোববার দুপুর থেকে অবিরাম বৃষ্টি হচ্ছে। এতে স্বাভাবিক জীবন-যাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। হিমেল হাওয়ার সাথে বেড়েছে শীতের তীব্রতা। বিপাকে রয়েছে দিনমজুর ও নিম্ন আয়ের মানুষরা। জেলার কৃষি ফসলের ক্ষয়ক্ষতি নিরুপনে কাজ করছে কৃষি বিভাগ। কৃষকরা জানান, তাদের ক্ষেতে এখন পাঁকা আমন ধান কাটতে বাকী রয়েছে। এ অবস্থায় ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বৃষ্টি হওয়ায় ধান গাছগুলো হেলে পড়ে অর্ধেক ধান নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। পাউকগাছা উপজেলার কৃষক আমান উদ্দীন বলেন, ‘এবার আমি ৪ বিঘা জমিতে আপন ধান চাষ করেছিলাম। এখন ধান পেকে গেছে। বৃষ্টি আসায় অনেক ধান ঝড়ে পড়েছে। আবার ধান গাছও নুয়ে পড়েছে।’ এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘উপজেলার অধিকাংশ ইউনিয়নের ধান কাটা শেষ হয়েছে। গড়ইখালী, চাঁদখালী ইউনিয়নের নিচু এলাকার কিছু ধান ক্ষেতের ধান কাটতে এখনো বাকী আছে। নিচু জায়গাতে হালকা পানি জমলেও ধানের তেমন একটা ক্ষতি হবে না। কৃষকদের নিচু জায়গার ধান ক্ষেতের আইলের উপর রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এতে ধানের ক্ষতি কম হবে।’ আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, রোববার সকাল ছয়টা থেকে সোমবার সকাল নয়টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় খুলনায় বৃষ্টি হয়েছে ২৫ মিলিমিটার। এদিকে আজ সকাল ছয়টা থেকে নয়টা পর্যন্ত ১৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
খুলনা আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ মো. আমিরুল আজাদ বলেন, ‘জাওয়াদের কারণে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে ঘন মেঘপুঞ্জ সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। তবে আজ মঙ্গলবার থেকে আবহাওয়ার উন্নতি হবে। আজ সকাল থেকে সূর্যের দেখা মিলতে পারে।’ খুলনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর খুলনায় ৯৩ হাজার ১২৫ হেক্টর জমিতে আমন ধান রোপন করা হয়েছিল। এর মধ্যে মাত্র ২৫ শতাংশ ধান কাটা হয়েছে। বর্তমানে প্রায় ৩০ ভাগ ধান পেকে গেছে। আর বাকি ধানে কেবল শিষ আসতে শুরু করেছে। জেলার মধ্যে দাকোপ, বটিয়াঘাটা, কয়রা, পাইকগাছা ও ডুমুরিয়া উপজেলায় সবচেয়ে বেশি ধান আছে। খুলনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান বলেন, ‘অসময়ের এই বৃষ্টি সবাইকে চিন্তিত করে তুলেছে। বৃষ্টির কারণে ধানের শিষকাটা পোকার আক্রমণ হতে পারে। এ ছাড়া জমিতে পানি জমে থাকায় পরবর্তী ফসল উৎপাদনও বাধাগ্রস্ত হবে। জেলায় কতটুকু জমির ধান ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে, তা নিরুপন করার কাজ চলছে।’