খবর বিজ্ঞপ্তি।।
নগরীর হাজী মহসীন রোডস্থ উদয়ন সংঘ মিলনায়তনে বুধবার (১ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় ‘মুজিব বাহিনী খুলনা জেলা একাত্তর’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠিত হয়। গ্রন্থে বৃহত্তর খুলনার মুজিব বাহিনীর লিডার পর্যায়ে দুইশ’ ৬৩ জনের যুদ্ধ জীবনের বর্ণনা করা হয়েছে।
উদ্বোধনী পর্বে এ গ্রন্থের রচয়িতা ও খুলনা জেলা মুক্তিযুদ্ধ সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: আবু জাফর এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। প্রধান অতিথি ছিলেন মুজিব বাহিনীর আঞ্চলিক কমান্ডার ও সাবেক সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা এ্যাড. স ম বাবর আলী। বিশেষ অতিথি ছিলেন খুলনা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি, ভাষা সংগ্রামী মনিরুল হুদা।
এ অনুষ্ঠানে আলোচনায় অংশ নেন বারোআড়িয়া যুদ্ধে শহীদ জ্যোতিষ চন্দ্র মন্ডলের ভাই শিক্ষক অরবিন্দ মন্ডল, বীর মুক্তিযোদ্ধা এস এম জিয়াউল ইসলাম ও বীর মুক্তিযোদ্ধা দিলীপ কুমার রায়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি স ম বাবর আলী বলেন, একাত্তরে মুজিব বাহিনী অসীম সাহসিকতা ও ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করেছেন। উচ্চতর প্রশিক্ষণের কারণে যুদ্ধ সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করায় পরিকল্পিতভাবে শত্রুপক্ষের ছাউনিগুলো একের পর এক দখল করা সম্ভব হয়েছে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালির স্বার্থের বিরুদ্ধে কখনও কোনো কাজ করেননি। বঙ্গবন্ধুর নামে এ বাহিনী হওয়ায় দেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষের কাছে দ্রুত সময়ের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা স্মরণীয় রাখতে এবং সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে প্রত্যেক মুক্তিযোদ্ধাকে তার যুদ্ধ জীবনের তথ্য আজকের প্রজন্মের হাতে দেয়ার জন্য তিনি যুদ্ধ জয়ীদের প্রতি আহ্বান জানান।
বিশেষ অতিথি মনিরুল হুদা বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তার নামের লাইসন্সেকৃত আগ্নেয়াস্ত্রের গোলাবারুদ দিয়ে সহযোগিতা করেন। যুদ্ধ পরবর্তী ১৯৭২ সালের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে খুলনার গণহত্যা সম্পর্কে দৈনিক বাংলায় তার পাঠানো প্রতিবেদন মুক্তিযুদ্ধের অষ্টম খন্ডে প্রকাশিত হওয়ায়তিনি নিজেকে ভাগ্যবান মনে করেন।
বক্তারা বলেন, স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নামে এ বাহিনী গঠন হওয়ায় একাত্তরের সাধারণ মানুষের কাছে দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। মুজিব বাহিনী মুক্তিযুদ্ধের চেতনা স্মরণীয় রাখতে স্বাধীনতা পরবর্তী ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করেছেন। একটি নির্দিষ্ট আদর্শ নিয়ে গঠন, বৃহত্তর প্রশিক্ষণ ও রাজনৈতিক দক্ষতার ফলে মুজিব বাহিনী সুসংগঠিত হওয়ায় একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা সহজ হয়। জনগণকে সম্পৃক্ত করে এ বাহিনী গেরিলা যুদ্ধ করায় বিজয়ও স্বল্প সময়ের মধ্যে ছিনিয়ে আনা সম্ভব হয়। এদেশের মুক্তিযুদ্ধে মুজিব বাহিনীর অবদান অনস্বীকার্য।
পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সংগীতের মধ্যদিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতির প্রতি নিরাবতা ও এ পর্যন্ত মৃত মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মার শান্তি কামনা করে দোয়া করা হয়।