বিনোদন ডেস্ক ||
ঢাকা বোট ক্লাবে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার মামলায় পুলিশ প্রতিবেদনে অসন্তোষ প্রকাশ করে নারাজি দিয়েছেন ঢাকাই সিনেমার আলোচিত নায়িকা শামসুন্নাহার স্মৃতি ওরফে পরীমনি। বুধবার ঢাকার ৯ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে এ মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন গ্রহণ সংক্রান্ত শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল। পুলিশের দাখিল করা প্রতিবেদনে আপত্তি আছে কিনা তা জানতে ট্রাইব্যুনাল পরীমনিকে তলব করেছিলেন।
পরীমনি সকাল ১০টার দিকে ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত হন। এ ছাড়া মামলার এজাহার ও চার্জশিটভুক্ত আসামি ব্যবসায়ী ও বোট ক্লাবের সদস্য নাসির উদ্দিন মাহমুদ এবং পরীমনির বন্ধু আসামি তুহিন সিদ্দিকী অমিও আদালতে উপস্থিত হন। সকাল পৌনে ১১ টায় মামলার শুনানি শুরু হয়। শুরুতে আসামিপক্ষের আইনজীবী কাওছার হোসেন আসামিদের জামিন প্রার্থনা করেন।
পরীমনির আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত সুরভী আসামিদের জামিন বাতিলের আবেদন করে বলেন, ‘আসামিরা বাদী, সাক্ষীদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। তারা বাইরে থাকলে মামলার বিচারে বিঘ্ন ঘটবে। এ কারণে তাদের জামিন বাতিল করা প্রয়োজন।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য নারাজি দাখিল করেছি। মামলার তদন্তে অনেক বিষয় মিসিং আছে। গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীদের চার্জশিটে অর্ন্তভূক্ত করা হয়নি।’
এরপর বিচারক মোহাম্মদ হেমায়েত উদ্দিন নারাজির বিষয়ে পরীমনির জবানবন্দি গ্রহণ করেন। জবানবন্দিতে পরীমনি বলেন, ‘চার্জশিটে মামলার ভিডিও ফুটেজ নেই। গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীদের চার্জশিটে রাখা হয়নি। দুইজন ম্যাজিস্ট্রেটকেও সাক্ষী থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। যারা ভিডিওটি করেছেন এবং ঘটনার সময় যারা ছিল তাদের সাক্ষী করা হয়নি। তারা কোথায়? মামলা একতরফাভাবে তদন্ত হয়েছে। তাই মামলাটি অধিকতর তদন্তের প্রয়োজন।’
রাষ্ট্রপক্ষের প্রসিকিউটর শহিদ হোসেন ঢালীও পরীমনির বক্তব্যের সঙ্গে একমত প্রকাশ করে অধিকতর তদন্ত চান। এরপর আসামিপক্ষের আইনজীবী বলেন, ‘মামলাটি সঠিকভাবে তদন্ত হয়েছে। ফের তদন্তের প্রয়োজন নেই।’ উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক দুই আসামিকে জামিনের আদেশ দেন। আর নারাজির বিষয়ে পরে আদেশ দেবেন বলে জানান। মামলার শুনানি শেষ হওয়ার পর পরীমনি আদালত থেকে বের হলে সাংবাদিকরা তার ছবি তুলতে যান। তখন পরীমনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার ছবি না তুলে র্যাপিস্টদের ছবি তুলুন।’
চলতি বছরের ৮ জুন রাতে সাভারের বিরুলিয়া এলাকায় ঢাকা বোট ক্লাবে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ আনেন চিত্রনায়িকা পরীমনি। এরপর ১৪ জুন নাসিরউদ্দিন মাহমুদসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টার এ মামলা করেন তিনি। মামলাটিতে ২ মাস ২৩ দিন পর গত ৬ সেপ্টেম্বর আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে নাসির উদ্দিন ও অমি এবং শাহ শহিদুল আলমের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা।