ঢাকা অফিস।।
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত রয়েছে। সোমবার তার বেশকিছু পরীক্ষা করা হয়। যার রিপোর্ট মঙ্গলবার চিকিৎসকদের হাতে আসে।
ওইসব রিপোর্টে খালেদা জিয়ার উন্নতির কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন তার মেডিকেল বোর্ডের একজন চিকিৎসক। তিনি জানান, মলের সঙ্গে ফের রক্তক্ষরণ হচ্ছে কি-না সেজন্য Occult blood test (ওবিটি) টেস্ট করা হয়েছে। যার রেজাল্ট পজিটিভি এসেছে। সিবিসি টেস্টে তার পিসিভি ও এমসিভি মাত্রা কম রয়েছে। ইলেকট্রোলাইটস প্লাজমা পরীক্ষায় ক্রিয়েটিনিন মাত্রা বেড়ে গেছে। অ্যালবুমিন সিরাম ও ক্যালসিয়াম মাত্রা এখনো কম রয়েছে।
মেডিকেল বোর্ডের একজন চিকিৎসক জানান, খালেদা জিয়ার ডায়াবেটিসও নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা হচ্ছে। তবে রক্তের হিমোগ্লোবিন এখনও কম আছে। সবচেয়ে বেশি সমস্যা লিভার সিরোসিসের কারণে ব্লিডিং। এটা নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছেন চিকিৎসকরা।
খালেদা জিয়ার হিমোগ্লোবিন একেবারে কমে গেলে এবং রক্তবমি হতে থাকলে গত ১৩ নভেম্বর তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসকরা এন্ডোস্কপি করে তার লিভার সিরোসিস শনাক্ত করেন। তার শরীরে দফায় দফায় রক্ত দেওয়া হয়। তাকে সিসিইউতে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। বাংলাদেশে এর বেশি কিছু করার নেই বলে জানিয়েছেন খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা।
গত রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেন, লিভার সিরোসিসের কারণে খালেদা জিয়ার ব্লিডিং হচ্ছে। এজন্য যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র বা জার্মানির বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসার সুপারিশ করেন তারা।
খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি ভাষা মতিনের সহধর্মিনীর: বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবি জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন ভাষা সৈনিক আব্দুল মতিনের সহধর্মিনী গুলবেদুননেছা।
মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার চিকিৎসকরা বলেছেন- তিনি এখন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। দেশে তার জন্য আর কোনো চিকিৎসার ব্যবস্থা বা সুযোগ নেই। বিদেশে উন্নত চিকিৎসা এখন তার একমাত্র ভরসা।
গুলবেদুননেছা বলেন, ইতিমধ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, দেশের প্রতিথযশা চিকিৎসক এবং সিভিল সোসাইটির নেতারা খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে বিদেশে চিকিৎসার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। কিন্তু সরকার রহস্যজনকভাবে মানবিক আবেদন নাকচ করে অমানবিক আচরণ করে চলছে। এ অবস্থায় ভাষা মতিনের পরিবারের পক্ষ থেকে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।