ঢাকা অফিস।।
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বড় সমস্যা পরিপাকতন্ত্রে রক্তক্ষরণ। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সেটা বন্ধ করার আপ্রাণ চেষ্টা করছেন। কিন্তু উৎস নির্ণয় হচ্ছে না।
এ প্রসঙ্গে খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন গনমাধ্যমকে বলেন, পরিপাকতন্ত্রে রক্ত ক্ষরণের উৎস নির্ণয় করতে হলে যত দ্রুত সম্ভব তাঁকে কোনো অ্যাডভান্স সেন্টারে নিতে হবে। অন্যথায় যে কোনো সময় বিপদ হয়ে যেতে পারে। তিনি আরও বলেন, এ ধরনের ‘অ্যাডভান্স সেন্টার’ আমাদের দেশে নেই। দেশের সবচেয়ে অভিজ্ঞ চিকিৎসকরা কয়েক দিন ধরে চেষ্টা করে যাচ্ছেন। কিন্তু একটা পর্যায়ে তারা প্রযুক্তির অভাবে আটকে যাচ্ছেন। খালেদা জিয়ার জীবন বাঁচাতে এই মুহূর্তে তাঁকে বিদেশের (যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য বা জার্মানি) কোনো উন্নত হাসপাতালে নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়ার পরিপাকতন্ত্রে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। তাঁর অনেকগুলো অসুখ। তার মধ্যে এটাই এখন প্রধান সমস্যা যা তাঁর জীবনকে প্রতি মুহূর্তে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে। এটা নির্ণয় ও চিকিৎসার জন্য পর্যাপ্ত প্রযুক্তি নেই। উন্নত চিকিৎসার্থে অতি দ্রুত তাঁকে বিদেশে নেওয়া প্রয়োজন। কিন্তু সেই সুযোগ না দেওয়ায় দিন দিন তাঁর অবস্থা খারাপ হচ্ছে। এভাবে সরকার তাঁকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ক্ষমা চাওয়ার জন্য বেগম খালেদা জিয়ার জন্ম হয়নি। রাজপথের ফয়সালার মাধ্যমেই তাঁকে মুক্ত করে সুচিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে হবে।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার সুযোগ না দিয়ে তিলে তিলে হত্যা করার চক্রান্ত চলছে। খালেদা জিয়াকে মুক্তি ও বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ না দিলে সমগ্র দেশ অচল করে দেওয়ারও হুমকি দেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সম্পর্কে আরও বলেন, কেন আমরা বিদেশে দেশনেত্রীর চিকিৎসার কথা বলছি? কী কারণে বলছি! এটা আমাদের সবারই জানা উচিত। তা হচ্ছে- বেগম খালেদা জিয়ার যে অসুখ তা প্রধানত পরিপাকতন্ত্রের। কোন জায়গায় তার রক্তপাত হচ্ছে, এটাকে বের করার জন্য আমাদের দেশের শ্রেষ্ঠ চিকিৎসকরা কয়েক দিন ধরে চিকিৎসার যে পদ্ধতি আছে, তার সব অনুসরণ করে কাজ করেছেন। কিন্তু একটা জায়গায় এসে তারা আর সামনে এগোতে পারছেন না। কারণ সে ধরনের কোনো টেকনোলজি আমাদের দেশে নেই। যে টেকনোলজি দিয়ে সেখানে পৌঁছাতে পারেন। যে কারণে চিকিৎসকরা বারবার বলছেন, বেগম খালেদা জিয়াকে একটি ‘অ্যাডভান্স সেন্টারে’ নেওয়া দরকার। যেখানে এ ডিভাইসগুলো আছে, টেকনোলজি আছে, অধুনিক যন্ত্রপাতিগুলো আছে। যেখানে গেলে তাঁর সঠিক রোগের জায়গাটা তারা ধরতে পারবেন। আর তখনই পরিপাকতন্ত্রের যেখান থেকে রক্তক্ষরণ হচ্ছে তা বন্ধ করা সম্ভব হবে। গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ’৯০-এর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে শহীদ ডা. শামসুল আলম খান মিলনের ৩১তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।