রাস্তা দখল করে রাখা হয় ট্রাক: খুলনায় ৬ কোটি টাকার ট্রাক টার্মিনাল অব্যবহৃত

4



স্টাফ রিপোর্টার ||


খুলনায় ছয় কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা ট্রাক টার্মিনাল অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে। ১৯ বছর ধরে টার্মিনালের ভবনটি তালাবদ্ধ। মালিক-শ্রমিকদের অনাগ্রহ এবং খুলনা সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষের অবহেলায় এটি চালু হয়নি। অন্যদিকে দিনে রাতে নগরীর সড়কগুলো দখল করে রাখা হয় ট্রাক। এতে জনদুর্ভোগ বাড়ছে প্রতিনিয়ত। নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, শহরের জিরো পয়েন্ট এলাকা, খালিশপুর-দৌলতপুর, সোনাডাঙ্গা রূপসা, কেডিএ এভিনিউ সড়কের দুপাশে সারি সারি ট্রাক রাখা থাকে। দিনের অধিকাংশ সময় সড়কের এক- তৃতীয়াংশ দখল করে রাখা হয় এসব ট্রাক। এতে যান চলাচলে বাড়ে দুর্ভোগ। সড়কে তৈরি হয় যানজট। অথচ এসব ট্রাক রাখার জন্য খুলনা সিটি করপোরেশন বিশাল এলাকা নিয়ে গড়ে তুলেছে ট্রাক টার্মিনাল। শ্রমিকদের বিশ্রাম নেওয়ার জন্য তৈরি করা হয়েছে বিশাল ভবন। তবে সেখানে কোনো ট্রাক রাখা হয় না। ভবনটি তালাবদ্ধ অবস্থায় পড়ে আছে। দীর্ঘদিন ব্যবহার না করা এবং জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে থাকার কারণে এটি এখন ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।


খুলনা সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৮ সালে নগরীর গল্লামারী-সোনাডাঙ্গা সড়কের পাশে ৬ একর জমির ওপর ট্রাক টার্মিনাল গড়ে তোলার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের পর ২০০২ সালে পাঁচ কোটি টাকা ব্যয়ে ওই প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়। প্রকল্পের মধ্যে ছিল-জমি অধিগ্রহণ, বাউন্ডারি, লোড-আনলোড সুবিধা, টিকিট কাউন্টার, ড্রেন, ৪৯টি ঘর, পাবলিক টয়লেট ইত্যাদি। এরপর ওই বছরই টার্মিনালটি চালু করা হয়। টার্মিনালটি পূর্ণাঙ্গ রূপ দিতে ২০০৩ সালে এমএসপি প্রকল্পের আওতায় আরও এক কোটি টাকা ব্যয়ে তিন তলাবিশিষ্ট একটি প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ করা হয়। ওই ভবনে রয়েছে ২০টি জানালা, দুটি কলাপসিবল গেট, বাতি, রড লাইট, বেসিন, হাতল ও হাতল ছাড়া চেয়ার, প্লাস্টিক, রিভলবিং ও লোহার ফিটিংস চেয়ার, কিচেন রুম, সিলিং ফ্যান, সেক্রেটারিয়েট টেবিল, ফাইল ক্যাবিনেট, খাট, চার্জার, আলমারি, ফায়ার সিলিন্ডার, বাথরুমসহ নানা সুযোগ-সুবিধা। এরপরও টার্মিনালে ট্রাক রাখেন না মালিক ও চালকরা। নির্ধারিত ফি দিয়ে এখানে গাড়ি রাখার বিষয়ে আপত্তি মালিকদের। রাস্তার ওপরেই যত্রতত্র এসব গাড়ি রাখা হচ্ছে দেদার। এতে নাগরিক ভোগান্তি বাড়লেও ট্রাফিক বিভাগ ও খুলনা সিটি করপোরেশনের কাছে বিষয়টি উপেক্ষিত রয়েছে।


সিটি করপোরেশনের এস্টেট অফিসার নুরুজ্জামান তালুকদার বলেন, ট্রাক টার্মিনালটি চালু করার জন্য মোবাইল কোর্ট, ট্রাকচালককে জরিমানাসহ বেশ চেষ্টা চালানো হয়েছে। কিন্তু সম্ভব হয়নি। বেশির ভাগ ট্রাক দৌলতপুর-খালিশপুরসহ নানা স্থানে মালামাল আনলোড করে সেখানেই অবস্থান করে। টার্মিনালে যেতে চায় না। এছাড়া ট্রান্সপোর্ট, ট্রাকমালিক ও শ্রমিক সংগঠনের নেতাদেরও যথেষ্ট অবহেলা রয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।

টার্মিনালে ট্রাক না রাখার বিষয়ে বিভাগীয় ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম বক্স দুদু বলেন, অধিকাংশ ট্রাকমালিক ফি দিয়ে টার্মিনালে গাড়ি রাখতে চায় না। এজন্য রাস্তা বা গ্যারেজেই তারা গাড়ি রাখে। এটি মালিকদের বিষয়।-যুগান্তর