করোনাভাইরাস মহামারি শুরুর পর থেকে এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ চলমান ছিল। বিশ্বের অনেক দেশের মতো বাংলাদেশও এই যুদ্ধে অগ্রণী ভূমিকায় ছিল। সেই যুদ্ধে বিধ্বস্ত হতে হতে একটাই আকাঙ্খা ছিল, কবে মৃত্যুবিহীন দিন দেখবে বাংলাদেশ। এবার সেই মাহেন্দ্রক্ষণ দেখা গেল। দেশে কোভিড–১৯ সংক্রমণের ৬২৩তম দিনে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা শূন্য। জানা যায়, ‘গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কারও মৃত্যু না হওয়ায় ২০২০ সালের ১৮ মার্চের পর এই প্রথমবারের মতো মৃত্যুবিহীন দিন দেখল বাংলাদেশ।’ করোনা মহামারি শুরুর পর থেকে চলমান যুদ্ধে যারা অগ্রগামী সৈনিক ছিলেন, আমরা তাদের সশ্রদ্ধ চিত্তে স্মরণ করছি। তাদের সব ধরনের ত্যাগ স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। এছাড়া করোনাযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে যারা মৃত্যুবরণ করেছেন তাদেরকেও আমরা স্মরণ করছি।
বাংলাদেশ শুরু থেকেই করোনা মোকাবেলায় কৌশলী ছিল। মানুষের জীবন রক্ষায় লকডাউনের মতো কর্মসূচি যেমন ছিল, তেমনই ছিল নানা ধরনের সহায়তা। দেশের মানুষের একাংশকে বিভিন্ন ধরনের প্রণোদনা দেয়া হয়েছে। ব্যবসা–বাণিজ্য সচল রাখার জন্যও যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল। বিশ্বব্যাপী অর্থনীতি যেখানে মুখ থুবড়ে পড়েছিল, সেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ ছিল সচল। দেশের মানুষও নিয়মনীতি মেনে চলেছিল। এরই ধারাবাহিকতায় মৃত্যুবিহীন দিন পেল বাংলাদেশ।
ভারতে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই মূলত বিপাকে পড়েছিল বাংলাদেশ। প্রতিবেশি দেশ হিসেবে স্বাভাবিকভাবেই ধাক্কা আসে। সেক্ষেত্রেও এখানে ভালোভাবেই পরিস্থিতি সামাল দেয়া হয়েছে। ভারতের সাথে সীমান্ত বন্ধ করার মতো কঠোর ও নজিরবিহীন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, রাশিয়া ও ইউরোপের দেশগুলো যেখানে নাজুক পরিস্থিতিতে ছিল, সেই সময়েও বাংলাদেশের ভূমিকা ছিল প্রশংসনীয়। এজন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে আমরা আবারও অভিনন্দন জানাচ্ছি। তবে মৃত্যুবিহীন দিন পেলেও এতে আত্মতুষ্টির সুযোগ নেই। করোনা এখনও দেশে দেশে চোখ রাঙাচ্ছে। এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ চলমান রয়েছে। দীর্ঘস্থায়ী সফলতা পেতে হলে এখনও মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। ভ্যাকসিন কার্যক্রমও আরও গতিশীল করতে হবে। এক্ষেত্রে বিন্দুমাত্র গাফিলতি আবার ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি করে ফেলতে পারে। এজন্য সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে মেনে করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ চলমান রাখার জন্য আমরা আহ্বান জানাচ্ছি।