রূপসায় নৌকার প্রার্থীর হামলা ও হুমকিতে প্রচারণা চালাতে পারছেন না বিদ্রোহী প্রার্থী

5
Spread the love

স্টাফ রিপোর্টার ।।

খুলনার রূপসা উপজেলার টিএস বাহিরদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীর চাপে স্বতন্ত্র প্রার্থী প্রচারণা চালাতে পারছেন না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এরই মধ্যে নৌকার সমর্থকেরা আনারস প্রতীকের ওই স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মারধরও করেছেন। বর্তমানে আনারস প্রতীকের দুই নারী কর্মী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

দ্বিতীয় ধাপে টিএস বাহিরদিয়া ইউপি নির্বাচনের ভোট ১১ নভেম্বর। এখানে মোট তিনজন প্রার্থী চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বর্তমান চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর শেখ, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আনারস প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি খান শাহজাহান কবীর এবং জাকের পার্টির গোলাপ ফুল প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন শেখ ইউসুফ আলী। শাহজাহান কবীর ২০০৩ সাল থেকে পরপর দুবার নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলেন। ২০১৫ সালে ইউপি নির্বাচনে নৌকা প্রতীক না পাওয়ায় তিনি আর নির্বাচনে অংশ নেননি। তবে এবার দলীয় বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন।

খান শাহজাহান কবীর অভিযোগ করেন, তিনি এই ইউপিতে বিএনপি আওয়ামী লীগের সময়ে পরপর দুবার নির্বাচিত চেয়ারম্যান। তাঁর বাবাও একসময় সেখানকার চেয়ারম্যান ছিলেন। কারণে এলাকায় তাঁর ব্যাপক জনসমর্থন রয়েছে। কিন্তু দলীয় কারণে গত বছর নির্বাচন করতে পারেননি। আর এবার এলাকার মানুষের অনুরোধে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। কিন্তু শুরু থেকেই তাঁকে নির্বাচন না করতে ব্যাপক চাপ দেওয়া হয়। মনোনয়নপত্র জমা দিলেও তা উঠিয়ে নিতে চাপ দেন বর্তমান চেয়ারম্যান। তিনি মনোনয়নপত্র উঠিয়ে নেননি। তবে বর্তমানে কোনো ধরনের নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিতে পারছেন না। তাঁর কর্মী-সমর্থকেরা কোথাও বের হতে পারছেন না। এলাকায় নির্বাচনী পোস্টার লাগাতে পারছেন না। তাঁর নারী কর্মীরা নির্বাচনী প্রচারণায় নামলে তাঁদের মারধর করে আটকে রাখা হয়েছিল। পরে পুলিশ গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে। মারধরের শিকার হয়ে ইতিমধ্যে দুই নারী কর্মী বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

শাহজাহান কবীর ২০০৩ সাল থেকে পরপর দুবার নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলেন। ২০১৫ সালে ইউপি নির্বাচনে নৌকা প্রতীক না পাওয়ায় তিনি আর নির্বাচনে অংশ নেননি। তবে এবার দলীয় বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন।

নির্বাচনী প্রচারণায় বাধা, নেতা-কর্মীদের মারধরসহ বিভিন্ন কারণে জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপার, জেলা নির্বাচন কার্যালয়, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, রূপসা থানাসহ বিভিন্ন জায়গায় লিখিত অভিযোগ করেছেন শাহজাহান কবীরের স্ত্রী সেলিনা সুলতানা। শাহজাহান কবীর বলেন, সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, এমন আশ্বাস পেয়েই তিনি নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। কিন্তু শুরু থেকে যেভাবে তাঁকে কোণঠাসা করে রাখা হচ্ছে, তাতে নির্বাচনের শেষ পর্যন্ত টিকে থাকতে পারবেন কি না, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।

জানতে চাইলে নৌকার প্রার্থী জাহাঙ্গীর শেখ সব অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘শাহজাহান কবীর মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার ১০ দিন পর তাঁকে আমরা খুঁজে বের করেছি। ওই সময় তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, তিনি কেন দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে নির্বাচন করছেন। বর্তমানে এলাকার তাঁর কোনো ব্যানার, পোস্টার নেই। তিনি শুধু ফেসবুকের মাধ্যমে প্রচারণা চালাচ্ছেন। তাঁর নেতা-কর্মীদের মারধর করা বা হুমকি দেওয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি। যদি এমন ঘটনা ঘটত, তাহলে প্রশাসন নিশ্চয় কোনো ব্যবস্থা নিত।’

তবে রূপসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন বলেন, রোববার বেলা ১১টার দিকে এক নারী ফোন করে তালতলা গ্রামের একটি বাড়িতে আটকে রাখার অভিযোগ করেন। পুলিশ তাৎক্ষণিক সেখানে গিয়ে দেখেন, একটি বাড়িতে কয়েক নারী কর্মী ছিলেন। তাঁরা পুলিশকে জানিয়েছেন, কয়েকটি মোটরসাইকেলে করে লোকজন তাঁদের ঘিরে রেখেছিল। নারী কর্মী আহত হওয়ার ঘটনা জানা নেই। তবে এ–সংক্রান্ত একটি লিখিত অভিযোগ তাঁরা পেয়েছেন।