দপ্তরি রাকিব চাকরি হারালো, জানা গেলো অনেক কিছু

2
Spread the love

০ খুলনাঞ্চল রিপোর্ট

দপ্তরি রাকিব প্রধান শিক্ষক সম্পর্কে চাচাতো ভাই-বোন। তাদের মধ্যে জমি সংক্রান্ত বিরোধ রয়েছে। এমনকি তারা পাশাপাশি বাড়িতে থাকেন। তবে দপ্তরি প্রধান শিক্ষককে মারধর করার ঘটনা অত্যন্ত গর্হিত জঘন্যতম কাজ। শুধু গ্রেপ্তার নয়, বিদ্যালয় পরিষ্কার করতে বলায় প্রধান শিক্ষককে প্রহার করা দপ্তরি কাম প্রহরীকে চাকরি থেকে অব্যাহতিও দেয়া হয়েছে।

শনিবার বিকেলে ময়মনসিংহ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস গফরগাঁও উপজেলা অফিস ঘটনায় তদন্ত শেষে এমন তথ্যই বাংলাদেশ জার্নালকে জানিয়েছে।

বিষয়ে ময়মনসিংহ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের সহকারি প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. হারুন-অর-রশিদ বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরে ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের বারইহাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নীলুফা খানমকে দপ্তরি রাকিব যেভাবে আহত করেছেন তা জঘন্যতম কাজ। ঘটনার তদন্ত করে সত্যতা পাওয়ায় রাকিবকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, যেহেতু এটি একটি চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ কারণে বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটি তার চুক্তি বাতিল করেছে। তবে শুধু বিদ্যালয় পরিষ্কার নয় এর সঙ্গে আরো কিছু ঘটনাও আছে।

তবে বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তারা জানান, দপ্তরি রাকিব প্রধান শিক্ষক নীলুফা খানম সম্পর্কে চাচাতো ভাই বোন। এছাড়াও তদন্তে তাদের জমি সংক্রান্ত বিরোধের বিষয়টি উঠে এসেছে। যে কারণে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। শুধুমাত্র বিদ্যালয় পরিষ্কার করার বিষয়টি একমাত্র বিষয় নয়।

এদিকে বিভিন্ন গণমাধ্যমে এসছে, বৃহস্পতিবার দুপুরে ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের বারইহাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নীলুফা খানম স্কুলে ডাকেন দপ্তরি রাকিবকে। রাকিবকে ডেকে তিনি শ্রেণিকক্ষ পরিষ্কার করতে বলেন। কিন্তু রাকিব সরাসরি ক্লাসরুম পরিষ্কার করতে অপারগতার কথা জানান। বন্ধে কোনোরকম কাজ করতে পারবে না বলে সাফ উত্তর দেন তিনি। এরপর কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে প্রধান শিক্ষক নিলুফার মাথায় ঘুষি মেরে বসেন রাকিব। সময় রাকিবের ভাই এসেও প্রধান শিক্ষককে গালাগালি করেন।

তবে ময়মনসিংহ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. হারুন-অর-রশিদ বলেন, বিদ্যালয় পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার ঘটনাটি সত্যি। সেখানে তাদের কথা কাটাকাটিও হয়েছে। তবে ঘটনাটি বিদ্যালয়ে ঘটেনি। বিদ্যালয় থেকে যখন প্রধান শিক্ষক বাসায় ফিরছিলেন তখন রাস্তায় তার উপর রাকিব আক্রমন করে বসে। তিনি আরো জানান, প্রধান শিক্ষক এই দপ্তরি শুধু মাত্র সম্পর্কে আত্মীয় নয় প্রতিবেশীও বটে।

তিনি বলেন, এই ঘটনার পরে নীলুফা খানম মানসিকভাবে খুবই ভেঙ্গে পড়েন। আমি নিজেও তাকে দেখে এসেছি। আমার সঙ্গে তার কথাও হয়েছে। তিনি এখন অনেকটা স্বাভাবিক।

এই ঘটনায় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আলমগীর মুহম্মদ মনসুর আলম জানিয়েছিলেন, ঘটনার পর দপ্তরি কাম প্রহরীকে আটক করেছে পুলিশ। সে অস্থায়ী ভিত্তিতে কাজ করতো। তাকে কর্মস্থল থেকে বাদ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যেহেতু ঘটনাটি দিবালোকে ঘটানো হয়েছে, তাই বিষয়ে তদন্ত করার প্রয়োজন নেই।

বিষয়ে পাগলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাশেদুজ্জামান বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, শুক্রবার রাকিবের বিরুদ্ধে মারধর করার অভিযোগেই মামলা হয়েছে। মামলা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আমরা রাকিবকে আটক করি। পরে আদালতে তাকে নেওয়ার পর জামিন না হওয়ায় তাকে জেল হাজতে নেওয়া হয়েছে।

ওসি আরো বলেন, এই ঘটনায় মামলা হয়েছে। নিলুফা খানম বাদী হয়ে মামলাটি করেছেন। তদন্ত শেষে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে বলেনও তিনি জানান।

এদিকে দপ্তরি রাকিবকে গ্রেপ্তার চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়ায় সন্তষ্টি প্রকাশ করেছে একাধিক শিক্ষক সংগঠন। এই ঘটনায় প্রকৃত অপরাধীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিও দাবি করেন তারা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইতোমধ্যে এই ঘটনা নিয়ে সরকারি প্রাথমিক শিক্ষকদের মধ্যে ঝড় চলছে। অনেক শিক্ষক নেতায় শিক্ষক সুরক্ষা আইন তৈরির জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন।

এছাড়াও তারা ময়মনসিংহ বিভাগীয় উপ পরিচালক, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে তড়িৎ ব্যবস্থা গ্রহণে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।