আওয়ামী লীগ নেতার ছেলেকে ডেকে নিয়ে কুপিয়ে হত্যা

3
Spread the love

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে পূর্ব বিরোধের জেরে স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতার ছেলেকে ডেকে নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। শনিবার (২২ মে) দিবাগত রাত ১২টার দিকে উপজেলার পান্টি ইউনিয়নের পীতম্বরবশী গ্রামে হত্যাকা- ঘটে।

নিহত ব্যক্তির নাম মো. শিপন (৩৫)তিনি পান্টি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি ওই গ্রামের আলতাফ হোসেনের ছেলে। শিপন পেশায় একজন ব্যবসায়ী ছিলেন। নিহতের স্বজনরা দাবি করেন, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষরা এই হত্যাকা- ঘটিয়েছে।

এদিকে খবর পেয়ে কুমারখালী থানা পুলিশ রাতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে শিপনের মরদেহ উদ্ধার করে। রোববার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

নিহতের বাবা স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আলতাফ হোসেন বলেন, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে পান্টি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সামিউর রহমান সুমনের নেতৃত্বে মৃত আকবরের ছেলে কবির, কালাইয়ের ছেলে মিজান, বাবলু মাস্টার, ময়েনসহ বেশ কয়েকজন শনিবার রাত আনুমানিক ১১টায় শিপনকে গোদের বাজার এলাকা থেকে ডেকে নিয়ে যায়। পরে কবিরের বাড়ির সামনে রাস্তার পাশে ধারালো অস্ত্র দিয়ে বুকে আঘাত করে। এতে ঘটনাস্থলেই শিপনের মৃত্যু হয়।

বিষয়ে অভিযুক্ত কবিরের স্ত্রী রহিমা খাতুন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে মসজিদের জমি নিয়ে প্রতিপক্ষের সঙ্গে বিরোধ চলছিল। এরই জেরে শনিবার রাত ১২টার দিকে জাফর গ্রুপের এনামুল, এরাশাদসহ অনেকে ছুরি (চাকু) ইট, লাঠি নিয়ে আমাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। সময় ধারালো ছুরির আঘাতে শিপনের মৃত্যু হয়।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা জাহিদ হোসেন জাফর গ্রুপের সঙ্গে পান্টি ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সামিউর রহমান সুমন গ্রুপের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। এই বিরোধের জের ধরেই শনিবার রাতে শিপন খুন হন।

বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা জাহিদ হোসেন জাফর বলেন, প্রতিপক্ষের নেতা শনিবার বিকেলে গোদের বাজারে তার নেতাকর্মীদের নিয়ে মিটিং করেন। আর রাতে আমার সমর্থিত শিপনকে ডেকে নিয়ে যায়। পরে তাকে পরিকল্পিতভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।

বিষয়ে পান্টি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সামিউর রহমান সুমনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। পরে সুমনের বড় ভাই মামুন মুঠোফোনে বলেন, আমার ছোট ভাই একটি গ্রুপের নেতৃত্ব দেয়। সে কারণে এলাকায় কোনো কিছু হলেই তার দোষ হয়। তবে ঘটনায় সুমনের হাত নেই।

কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবুর রহমান বলেন, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এলাকায় জাফর সুমন গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এই বিরোধের জের ধরে শনিবার রাতেও দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে প্রতিপক্ষের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে শিপন নিহত হন।

তিনি জানান, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।