গ্রেপ্তারের ছয় দিন পর অবশেষে কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম। তবে শর্ত সাপেক্ষে। ৫ হাজার টাকা ও পাসপোর্ট জমা দেওয়ার শর্তে রোববার জামিন লাভের পর বিকেল সোয়া ৪টার দিকে কাশিমপুর কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি।
সার্বিক বিবেচনায় তার এই মুক্তি ব্যক্তি রোজিনা তো বটেই, সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম এবং দেশের প্রতিটি গণমাধ্যমকর্মীর কাছে বিরাট এক স্বস্তির বিষয়। আমাদের কাছেও এই মুক্তি সাধারণ কোনো ঘটনা নয়, মিথ্যার বিরুদ্ধে সত্যের জয়ের একটি ধাপমাত্র। তবে সেই লড়াইয়ে পুরোপুরি বিজয় এখনো আসেনি। যতক্ষণ না তাকে হেনস্তার সঙ্গে জড়িতদের বিচারের আওতায় না আনা যাবে, ততক্ষণ সত্য ও ন্যায়ের জয় নিশ্চিত হবে না।
আমরা এরই মধ্যে জেনেছি, ছয় দিন আগে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় রোজিনা ইসলামকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে প্রায় ছয় ঘণ্টা আটকে রেখে হেনস্তার পাশাপাশি নির্যাতন করা হয় বলে তার পরিবার ও সহকর্মীদের অভিযোগ। শুধু তাই নয়, তার বিরুদ্ধে ‘নথি চুরির’ কথিত অভিযোগে দণ্ডবিধি ও অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টে মামলা করে কারাগারেও পাঠানো হয়।
রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে, তা কতটা সত্য আর কতটা মিথ্যা; সেটা আদালতে প্রমাণের বিষয়। সময়ই তার উত্তর দেবে। তবে বেশির ভাগ মানুষ মনে করেন- কিছু ব্যক্তির দুর্নীতির খবর প্রকাশ করায় প্রতিহিংসা এবং আক্রোশ থেকেই তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে এমন অভিযোগ আনা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে এসব অভিযোগের সত্যতা নেই।
আর এমন বিশ্বাসের জায়গা থেকেই রোজিনা ইসলামের মুক্তির পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রত্যাহারের দাবিতে দেশে-বিদেশে বড় ধরনের আন্দোলন-জনমত গড়ে উঠেছে। কেননা পেশাদার গণমাধ্যম এবং সেই গণমাধ্যমকর্মীরা দেশ ও মানুষের জন্যই কাজ করেন। তারা দেশের শত্রু নন, দুর্নীতিবাজদের শত্রু।
আমরা মনে করি, সেই সব দুর্নীতিবাজরাই মূলত দেশ ও জনগণের শত্রু। এসব শত্রু দমনে রাষ্ট্র স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিবেশ নিশ্চিতে আরও কার্যকর ভূমিকা রাখবে।