ভারতে করোনায় ১১০০ চিকিৎসক ও ৩০০ সাংবাদিকের মৃত্যু

2
Spread the love

আমিনুল ইসলাম মির্জা

ভারতে কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সম্মুখ-সারির যোদ্ধা বহু চিকিৎসক সাংবাদিক প্রাণ হারিয়েছেন। দেশটিতে গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে থেকে প্রাণঘাতী এই বৈশ্বিক মহামারিতে এপর্যন্ত প্রায় লাখ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে আরো ২.৬৩ কোটি আক্রান্ত হয়েছে।

ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ) এবং ইনস্টিটিউট অব পারসেপশন স্টাডিজ (আইপিএস) পৃথক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ভারতে করোনা ভাইরাস মহামারি শুরুর পর থেকে এপর্যন্ত ১হাজার ১শ’বেশি চিকিৎসক ৩শ’ সাংবাদিক করোনায় মারা গেছেন। দেশটিতে এই বৈশ্বিক মহামারি ভয়াবহ আকারে ছড়িয়ে পড়ে ব্যাপক ক্ষতি করেছে।

আইএমএ আজ জানিয়েছে, করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ে দিল্লীতে ১০০ জনসহ এখন পর্যন্ত ৪২০ জন চিকিৎসন প্রাণ হারিয়েছেন। ২০২০ সালে করোনা ভাইরাসের প্রথম ঢেউয়ে ৭৪৮ জন চিকিৎসক মারা গিয়েছিলেন।

করোনায় রোববার ৫০ জন চিকিৎসকের মৃত্যু হয়। বিহারে এই প্রাণহানির সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। বিহারের পর উত্তর প্রদেশ দিল্লীতে সবচেয়ে বেশি চিকিৎসক প্রাণ হারিয়েছেন।

প্রতিবেদনটিতে আরো বলা হয়, করোনায় আক্রান্ত হয়ে যে সব চিকিৎসক মারা গেছেন- তাদের মধ্যে মাত্র শতাংশ চিকিৎসক সম্পূর্ণ ভ্যাকসিন নিয়েছিলেন।

ভারতে, এখন পর্যন্ত ৬৬ শতাংশ স্বাস্থ্যকর্মী সম্পূর্ণ ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছেন।

যদিও, স্বাস্থ্য সংস্থার এই প্রতিবেদনে এও বলা হয় যে- করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এই মৃতের প্রকৃত সংখ্যা আরো অনেক বেশি হতে পারে। কারণ আইএমএ এর কাছে শুধুমাত্র তাদের ৩.লাখ সদস্যের রেকর্ড সংগ্রহ আছে। কিন্তু সারা দেশে আরো ১২ লাখ চিকিৎসক রয়েছেন।

পাশাপাশি, দিল্লী ভিত্তিক ইনস্টিটিউট অব পার্সেপশন স্টাডিজ (আইপিএস) প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনা বলা হয়েছে যে- ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে ২০২১ সালের মে মাস পর্যন্ত কোভিড-১৯ এর আক্রান্ত হয়ে বেশ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকসহ শতাধিক গণমাধ্যম কর্মী প্রাণ হারিয়েছেন।

২০২১ সালের এপ্রিল মাস থেকে প্রতিদিন গড়ে জন সাংবাদিক মারা গেছেন। সাংবাদিক মৃত্যুর এই হার বেড়ে দিনে জনে দাঁড়িয়েছে। করোনায় আক্রান্ত হয়ে যেসব সাংবাদিক প্রাণ হারিয়েছেন, তাদের অধিকাংশের বয়স ৪১ বছর থেকে ৫০ বছরের মধ্যে।

গবেষণায় বলা হয়, এই সময়ের মধ্যে যে সব সাংবাদিক মারা গেছেন- তাদের ৫৪ শতাংশ প্রিন্ট মিডিয়া, ২৫ শতাংশ টিভি ডিজিটাল মিডিয়া ১৮ শতাংশ ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করতেন।

আইপিএস জানায়, গণমাধ্যমে কোভিড-১৯ এর দ্বিতীয় ঢেউ- প্রথম ঢেউয়ের চেয়ে অনেক বেশি ভয়াবহ আকারে দেখা দিয়েছে। ২০২১ সালে এপ্রিল থেকে ১৬ মে’মধ্যে বৈশ্বিক মহামারিটির এই দ্বিতীয় ঢেউ ১৭১ জন সাংবাদিকের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে।

করোনার কারণে সৃষ্ট এই পরিস্থিতিতে ভারতের অনেক রাজ্য সাংবাদিকদের সম্মুখ-সারির যোদ্ধা হিসেবে ঘোষণা করেছে এবং অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করোনার ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে।

বিশ্বের মধ্যে ভারতে করোনা ভাইরাস সবচেয়ে বেশি ভয়াবহ আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। দেশটিতে প্রাণঘাতী ভয়াবহ এই ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত মোট লাখ ৯৫ হাজার ৫২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং কোটি ৬২ লাখ, ৮৯ হাজার ২৯০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে।

ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আজকের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে যে গত ২৪ ঘন্টার দেশটিতে নতুন করে ২.৫৭ লাখ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। এই সময়ে হাজার ১৯৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।-বাসস