০ শরণখোলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি
পূর্ব সুন্দরবনে মৌয়ালদের পারমিট আটকে রেখে লাখ টাকা জরিমানা আদায়ের চেষ্টা করছে বনবিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের কর্মকর্তারা। এ ব্যপারে কোন উপায় না পেয়ে রবিবার শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট সহ প্রধান বন সংরক্ষক ও সুন্দরবন পূর্ব বনবিভাগীয় বন কর্মকর্তার পৃথক পৃথক লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছে মৌয়ালরা।
ভুক্তভোগী মৌয়ালদের পক্ষে মোঃ অলি হাওলাদার জানায়, তারা উপজেলার সোনাতলা গ্রামের ৯ জনের একটি দল গত ১ এপ্রিল শরণখোলা স্টেশন থেকে ১৫ দিনের পারমিট নিয়ে সুন্দরবনে মধু সংগ্রহে যান। এরপর বনবিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী পারমিট নবায়ন করতে ১৫ এপ্রিল সকল মৌয়ালরা সুন্দরবনের কোকিলমনি টহল ফাঁড়িতে হাজির হয়। সেখানে হাজির হলে কোকিলমনির বনরক্ষীরা তাদের কাছে মধু উৎকোচ দাবী নিয়ে মৌয়ালদের সাথে বিরোধ সৃষ্টি হয়। এসময় কোকিলমনি টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আবুল হোসেন দেখার কথা বলে তাদের কাছ থেকে পারমিট নিয়ে নেয়। পারমিট ফেরৎ না দেয়ায় তারা কোষ্ট গার্ডের সহায়তায় শরণখোলায় ফিরে এসে বনবিভাগের স্টেশন কর্মকর্তা ও রেঞ্জ কর্মকর্তাকে পারমিট আটকে রাখার বিষয়টি অবহিত করেন। রেঞ্জ কর্মকর্তা এসময় পারমিট ফিরিয়ে এনে সমর্পন করার ব্যবস্থা করবেন বলে তাদের আশ্বস্ত করেন এবং বিকল্প পারমিট করে মধু সংগ্রহ করতে যাওয়ার পরামর্শ দেন। এরপর বিকল্প পারমিটের মাধ্যমে মধু সংগ্রহ করে ফিরে আসলে শরণখোলা স্টেশনের বনরক্ষীরা তাদের জানায় পূর্বের পারমিট সমর্পন না করায় প্রায় এক লাখ টাকা জরিমানা হয়েছে। যা এখন প্রতিদিন তিন হাজার টাকা করে বৃদ্ধি পাচ্ছে। টাকা পরিশোধ না করলে তাদের নামে বন মামলা দায়ের করা হবে। বনরক্ষীদের এমন কথা শুনে মৌয়ালরা দিশেহারা হয়ে পরেছেন। এমনকি তাদের ঘর-বাড়ি সব বিক্রী করলেও লাখ টাকা সংগ্রহ করা সম্ভব নয়। তাই কোন উপায় না পেয়ে তারা শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে বিষয়টি লিখিত ভাবে জানিয়েছেন। এছাড়া ডাকযোগে প্রধান বন সংরক্ষক ও বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ প্রেরণ করেছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরদার মোস্তফা শাহিন জানান, মৌয়ালদের অভিযোগের ব্যপারে বনবিভাগের সাথে কথা বলে বাগেরহাট জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করার উদ্যোগ গ্রহন করা হবে।
এব্যপারে শরণখোলা ষ্টেশন কর্মকর্তা অব্দুল মান্নান বলেন, কোকিলমনিতে পারমিট আটকে রাখার কথা মৌয়ালরা তাকে জানালে তিনি রেঞ্জে কর্মকর্তার শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত তারা পারমিট সমর্পন করতে না পারায় প্রায় এক লাখ টাকা জরিমানা হয়ে গেছে।
রেঞ্জ কর্মকর্তা (এসিএফ) মোঃ জয়নাল আবেদীন বলেন, পারমিট সর্মপন করানোর দায়িত্ব তার নয়। তা ছাড়া পারমিটের মেয়াদ একমাসের বেশী উত্তীর্ণ হয়ে প্রায় এক লাখ টাকা জরিমানা হয়েছে। এখন বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ছাড়া এর কোন সমাধান তাদের হাতে নেই।
বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, এ ব্যপারে তিনি রেঞ্জ কর্মকর্তার কাছ থেকে জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবেন।