০ খুলনাঞ্চল রিপোর্ট
ঈদ মানেই আনন্দ, নতুন জামা আর আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধুদের মিলনমেলা। হৈ-হুল্লো, ঘুরে বেড়ানো, খাওয়া-দাওয়া আর আড্ডায় মেতে ওঠা। এ উৎসবে মুসলমানরা ঈদগাহে কোলাকুলি করে থাকেন। এছাড়া সৌহার্দ্য, সম্প্রীতি ও ভালোবাসার বন্ধনে সবাইকে নতুন করে আবদ্ধ করাও ঈদের অন্যতম অর্থ। কিন্তু বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে এবারের ঈদ আনন্দের সবকিছুতেই ভাটা পড়েছে।
অদৃশ্য এক ভাইরাসে পুরো বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও থমকে গেছে স্বাভাবিক জীবনযাপন। এক কথায় বলতে গেলে এবারও ঈদ উৎসব আনন্দ-খুশির ডালায় নয়, এসেছে শঙ্কা-অনিশ্চয়তার বার্তা নিয়ে।
আজ পবিত্র ঈদুল ফিতর। ৩০ দিন সিয়াম সাধনার পর মুসলিম সম্প্রদায় আজ ঈদ উদযাপন করছেন। গত বুধবার দেশের কোথাও পবিত্র শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা যায়নি। ফলে আজ শুক্রবার উদযাপিত হচ্ছে পবিত্র ঈদুল ফিতর।
ঈদুল ফিতরের তারিখ নির্ধারণে বুধবার সন্ধ্যায় ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার পর ধর্ম প্রতিমন্ত্রী জানান, দেশের কোথাও পবিত্র শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা যায়নি। ফলে শুক্রবার উদযাপিত হবে ঈদুল ফিতর। তিনি দেশবাসীকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপনের আহ্বান জানান।
বায়তুল মোকাররমে বাংলাদেশ ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সভাকক্ষে বাদ মাগরিব এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা শায়লা শারমীন বলেন, নিয়ম অনুযায়ী ২৯ রমজানে শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেলে পরদিন ঈদুল ফিতর উদযাপিত হয়। কিন্তু এদিন চাঁদ দেখা না গেলে রোজা ৩০টি পালন করতে হয় এবং ৩০ রোজার পরদিন ঈদুল ফিতর উদযাপন করা হয়। এজন্য আজ আর চাঁদ দেখা কমিটির বৈঠকের প্রয়োজন হবে না বলে তিনি জানান।
অনিশ্চিত ভবিষ্যতের আশঙ্কার মধ্যেই আসছে এবারের ঈদ। মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে ঈদকে ঘিরে যে আনন্দ-উচ্ছাস থাকার কথা তা এবারো গত বছরের ন্যায় ম্লান করে দিয়েছে মহামারি করোনাভাইরাস।
করোনা মোকাবেলায় ও সংক্রমণ বিস্তার রোধে সরকারের নির্দেশনায় এবার খোলা মাঠে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। ঈদ জামাত হবে মসজিদের ভেতরে শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে।
রাষ্ট্রপতি মো: আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণীতে দেশবাসীকে পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশ্যে শুভেচ্ছা ভাষণ দিয়েছেন।
খুলনায় কর্মসুচি:
খুলনায় ঈদ-উল-ফিতরের প্রধান ও প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল আটটায় টাউন জামে মসজিদে। গত বছরের ন্যায় এবারও করোনা ভাইরাস সংক্রমণের আশঙ্কায় উন্মুক্ত স্থানে বা মাঠে কোনো ঈদের জামাত হবে না।
প্রধান জামাতে ইমামতি করবেন টাউন জামে মসজিদের খতিব মাওলানা মোহাম্মদ সালেহ। একই স্থানে দ্বিতীয় জামাত সকাল নয়টায় এবং তৃতীয় ও শেষ জামাত সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া কোর্ট জামে মসজিদে সকাল সাড়ে আটটায় একটি ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
খুলনা সিটি কর্পোরেশন পরিচালিত বায়তুন নূর জামে মসজিদ কমপ্লেক্স-এ পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরের দু’টি জামাত অনুষ্ঠিত হবে। সকাল ৮টায় প্রথম জামাতে ইমামতি করবেন মসজিদের খতিব হাফেজ মাওলানা ইমরান উল্লাহ এবং সকাল ৯টায় দ্বিতীয় জামাতে ইমামতি করবেন মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা আব্দুল গফুর।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজের জামাত বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে সকাল সাড়ে সাতটায় অনুষ্ঠিত হবে।
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর এর জামাত সকাল ৮টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে অনুষ্ঠিত হবে।
সোনাডাঙ্গা আল-আকসা জামে মসজিদ ও সোনাডাঙ্গা নাছির সড়ক বায়ইতুস সালাম জামে মসজিদ ঈদের নামাজ সকাল ৮টায়, ময়লাপোতা মোড়স্থ বায়তুল আমান জামে মসজিদে ঈদের প্রথম জামাত সকাল ৮টায় ও ২য় জামাত ৯টায়, ইকবাল নগর জামে মসজিদ, খানজাহান আলী জামে মসজিদে সকাল সাড়ে ৭টায়, রায়পাড়ায় মসজিদে মিনায় ঈদের প্রথম জামাত সকাল ৮টায় ও দ্বিতীয় জামাত সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটে, বাংলাদেশ ব্যাংক কোয়ার্টার জামে মসজিদে সকাল সাড়ে ৭টায়, তারের পুকুর আল-হেরা জামে মসজিদে প্রথম জামাত ৭টায়, ২য় জামাত ৮টায়, শিববাড়ি মোড়স্থ ইব্রাহীম সড়ক মিয়াবাগ গোরস্থান জামে মসজিদে সকাল সাড়ে ৮টায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
নূরনগর জামে মসজিদ, নূরনগর গণপূর্ত ভবন জামে মসজিদ ও জোড়াগেট সিঅ্যান্ডবি কলোনী জামে মসজিদে সকাল ৮টায় ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হবে।
লবনচরা হাজী আব্দুল মালেক জামে মসজিদে সকাল সাড়ে ৭টায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
দৌলতপুরের কৃষি কলেজ কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে সকাল সাড়ে ৭টায়, শাহী জামে মসজিদে প্রথম জামাত সকাল ৭টায় ও দ্বিতীয় জামাত ৮টায়, ফায়ার সার্ভিস জামে মসজিদে সকাল সাড়ে ৮টায়, দেয়ানা উত্তরপাড়া জামে মসজিদে সকাল সাড়ে ৮টায়, মোল্লাপাড়া জামে মসজিদে সকাল ৮টায়, বায়তুল কোবা জামে মসজিদ সকাল সাড়ে ৮টায়, বায়তুল মামুর জামে মসজিদ সকাল সাড়ে ৮টায়, দেয়ানা মোহাম্মাদীয়া মাদ্রাসা জামে মসজিদ সকাল সাড়ে ৮ টায়, বায়তুল আল আকসা জামে মসজিদ সকাল সাড়ে ৮টায়, ফাইতুল ফালাহ জামে মসজিদ সকাল সাড়ে ৮টায়, সুলতানিয়া জামে মসজিদে সকাল ৮টায়, মুহসীন মোড় জামে মসজিদে সকাল সাড়ে ৭টায়, আঞ্জুমান কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে সকাল সাড়ে ৮টায়, দৌলতপুর বাজার জামে মসজিদে সকাল ৮টায়, সরকারি বিএল কলেজ কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে সকাল ৮টায়, পাবলা বায়তুল রহমত জামে মসজিদে সকাল সাড়ে ৭টায়, নতুন রাস্তা জামে মসজিদে প্রথম জামাত সকাল সাড়ে ৭টায় ও দ্বিতীয় জামাত সকাল ৮টায়, মধ্যডাঙ্গা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে সকাল ৮টায়, ইস্পাহানী কোলনী জামে মসজিদে সকাল সাড়ে ৮ টায়, ইসলামবাগ জামে মসজিদ সকাল সাড়ে ৮টায়, জেএমসি জামে মসজিদ সকাল সোয়া ৮টায়, রেলিগেট কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে সকাল সাড়ে ৮টায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
এছাড়া খুলনা সিটি কর্পোরেশনের ৩১টি ওয়ার্ড ও জেলার ৯ উপজেলার বিভিন্ন মসজিদে নিজেদের সময় অনুযায়ী ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে।