করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা বর্তমানে স্থিতিশীল। গত ২৪ ঘণ্টায় সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীর অবস্থার উন্নতি বা অবনতি হয়নি। আগের মতোই আছেন তিনি। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় বিএনপির চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।
জাহিদ বলেন, ‘খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। এখনো সরকার তাকে (খালেদা জিয়া) বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দেয়নি। অনুমতি পেলে তার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ড বিদেশে চিকিৎসার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।’
এদিকে খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার বিষয়ে তার পরিবারের পক্ষ থেকে যে লিখিত আবেদন করা হয়েছে সে বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। শুক্রবার তিনি বলেন, ‘এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আজকে তো জুমাতুল বিদা। হয়ে যাবে (সিদ্ধান্ত)।’
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাকে অক্সিজেন দিতে হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন কোনো ব্যবস্থাপত্র চিকিৎসকেরা দেননি। আগের চিকিৎসাই অব্যাহত রয়েছে। গত ৩ মে থেকে তিনি সিসিইউতে আছেন।
চিকিৎসকেরা বলছেন, খালেদা জিয়ার করোনা-পরবর্তী বেশ কিছু উপসর্গ দেখা দিয়েছে। স্বাভাবিক শ্বাসপ্রশ্বাসে সমস্যা, ফুসফুসে তরল জমা, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না থাকা। এর বাইরে গত বুধবার তিনি বুকে ব্যথা অনুভব করেছিলেন।
খালেদা জিয়ার অবস্থা আগের চেয়ে ভালো হয়েছে কি না বা বিদেশে যাওয়ার মতো তার শারীরিক সক্ষমতা আছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে ডা. জাহিদ বলেন, ‘তার বিদেশ যাওয়ার বিষয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে, এটি আপনারা জানেন। সরকার কীভাবে তাকে যাওয়ার অনুমতি দেবে সেটি এখন সরকারের বিষয়। বর্তমানে তিনি দেশের স্বনামধন্য চিকিৎসকদের নিয়ে গঠিত বোর্ডের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন আছেন। আপনারা যে প্রশ্নটি করেছেন সেটি এখন রিলেটেড (সম্পর্কিত) না। সরকার অনুমতি দিলে পরবর্তী সময়ে তার মেডিকেল বোর্ড এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।’ তিনি বলেন, চিকিৎসকেরা আগের চিকিৎসাপত্র অব্যাহত রেখেছেন।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া গত ১১ এপ্রিল করোনায় আক্রান্ত হন। তিনি ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে বাসায় থেকেই চিকিৎসা নিয়েছেন। ২৭ এপ্রিল রাতে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। শ্বাসকষ্ট অনুভব করায় ৩ মে কেবিন থেকে তাকে সিসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। এখনো সেখানেই চিকিৎসা নিচ্ছেন তিনি।
গত বুধবার আবারও শ্বাসকষ্ট ও বুকে ব্যথা অনুভবন করেন খালেদা জিয়া। ওই দিন রাতেই তার ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিতে সরকারের কাছে আবেদন করেন। আবেদনটি এখন আইনমন্ত্রীর মতামতের অপেক্ষায় রয়েছে।
জানা গেছে, খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিতে বেশ কিছু কাজ এগিয়ে রাখা হয়েছে। তবে কবে নাগাদ বিদেশ নেওয়া হতে পারে, সেটা নির্ভর করছে সরকারের অনুমতি ও মেডিকেল বোর্ডের প্রতিবেদনের ওপর।
-ঢাকা অফিস