বেনাপোল স্থলবন্দরে ২ বছর ধরে বন্ধ আছে মোবাইল স্ক্যানার মেশিন

2
Spread the love

বেনাপোল বন্দরে দুই বছর ধরে বন্ধ আছে মূল্যবান মোবাইল স্ক্যানার মেশিনটি। কাস্টমস ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সমঝোতায় না আসায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। সমঝোতার কোনো উদ্যোগও দৃশ্যমান নয়।

বন্দর ব্যবহারকারীরা বলছেন, অত্যাধুনিক স্ক্যানার মেশিন বন্ধ থাকায় বাড়ছে চোরাচালান। তবে, কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বলছেন, স্ক্যানিং মেশিন পরিচালনার জন্য অর্থের প্রয়োজন। বিষয়টি ইতোমধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) জানানো হয়েছে।

বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদারে প্রায় তিন বছর আগে চারটি স্ক্যানার বাংলাদেশকে অনুদান হিসেবে দেয় চীন সরকার। ২০১৮ সালে বেনাপোল স্থলবন্দরে ভারতীয় পণ্যবাহী ট্রাকের প্রবেশদ্বারে একটি মেশিন বসানো হয়। অত্যাধুনিক মেশিনটি পণ্যবাহী ট্রাকে আসা রাসায়নিক, মাদক, অস্ত্র শনাক্ত করতে সক্ষম।

মেশিনটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ফাইবার অ্যাসোসিয়েটস বিনামূল্যে পরিচালনা করেছে ছয় মাস। পরে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ টেন্ডারের মাধ্যমে চুক্তিতে না আসায় বন্ধ হয়ে যায় এর কার্যক্রম।

ব্যবসায়ী নেতারা বলছেন, নিরাপদ আমদানি-রফতানি বাণিজ্য সচল রাখতে স্ক্যানিং কার্যক্রম চালু করা জরুরি।

আমদানি পণ্যবহনকারী বেনাপোল ট্রান্সপোর্ট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আজিম উদ্দীন গাজী বলেন, ‘স্ক্যানারটি সচল থাকলে আমরাও নিরাপদ থাকতে পারি। কোনো দুষ্কৃতির মাধ্যমে বন্দর থেকে ট্রাকে অবৈধ পণ্য চালান পরিবহন হতে পারবে না।’

বেনাপোল বন্দরের আমদানি-রফতানিকারক সমিতির সহ-সভাপতি আমিনুল হক বলেন, ‘বেনাপোল বন্দরের স্ক্যানারটি দীর্ঘ দুই বছর বন্ধ থাকলেও কর্তৃপক্ষের কোনো মাথাব্যথা নেই। আমরা মনে করি, নিরাপত্তার স্বার্থে স্ক্যানারটা পুনরায় চালু করা অতি জরুরি।’

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন বলেন, ‘নিরাপদ বাণিজ্যের ক্ষেত্রে স্ক্যানারটি সচল রাখা খুব জরুরি। কাস্টমস কর্তৃপক্ষ দ্রুত ব্যাপারে পদক্ষেপ নেবে বলে আশা রাখছি।’

বেনাপোল বন্দরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক (প্রশাসন) আব্দুল জলিল বলেন, বন্দরে স্ক্যানার চালু থাকলে স্বচ্ছতার দিক দিয়ে অনেকটা নিশ্চিত থাকা যায়।

ফাইবার অ্যাসোসিয়েটসের পক্ষে প্রকৌশলী শপু বড়ুয়া জানান, কাস্টমস কর্তৃপক্ষ চুক্তিতে না আসায় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে স্ক্যানিং কার্যক্রম দুই বছর ধরে বন্ধ রাখা হয়েছে। চুক্তি হলে আবার তারা কাজ শুরু করবেন।

বেনাপোল কাস্টমস হাউজের অতিরিক্ত কমিশনার ড. মো. নেয়ামুল ইসলাম বলেন, স্ক্যানার পরিচালনার জন্য এখনো সরকারের বাজেট পাওয়া যায়নি। এনবিআর থেকে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নতুন করে চুক্তি হবে। টেন্ডার যাচাই-বাছাই করে এনবিআরের অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে। যেকোনো স্থলবন্দরে স্ক্যানিং মেশিন থাকা খুব জরুরি। স্ক্যানিং মেশিন স্বচ্ছ বাণিজের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে বছরে প্রায় ৪৮ হাজার কোটি টাকার পণ্য আমদানি-রফতানি হয়।

– বেনাপোল প্রতিনিধি