ভারতে ভয়াবহ অক্সিজেন সঙ্কটের পর বাংলাদেশে তার চাহিদা, উৎপাদন, সরবরাহ, মজুদ ইত্যাদি বিষয়গুলো নতুন করে আলোচনার পাশাপাশি দুশ্চিন্তারও জন্ম দিয়েছে। অক্সিজেন নিয়ে গত দুইদিন দেশের বেশিরভাগ গণমাধ্যম বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তাদের প্রতিবেদনে করোনাভাইরাসের ক্রমাগত বৃদ্ধিতে অক্সিজেন সঙ্কট তৈরি হওয়ার আশঙ্কার কথা বলা হয়েছে।
এমন শঙ্কার বড় কারণ ভারত থেকে আমদানি করা অক্সিজেন হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে যাওয়া। আমরা জানি, নিজ দেশে সঙ্কট তৈরি হওয়ার পর বাংলাদেশসহ অন্য দেশগুলোতে অক্সিজেন রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ভারত।
দেশের গণমাধ্যমগুলো অক্সিজেন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান এবং সরকারের একাধিক সূত্রের উল্লেখ করে বলছে, ভারত রপ্তানি বন্ধের কারণে দৈনিক চাহিদার একটা অংশ পূরণ করা কঠিন হয়ে পড়তে পারে। কেননা দেশের হাসপাতালে স্বাভাবিক সময়ে দৈনিক ১০০ থেকে ১২০ টনের মতো মেডিকেল গ্রেড অক্সিজেন দরকার হয়। যা দেশেরই উৎপাদিত হয়। কিন্তু সম্প্রতি করোনা রোগী বেড়ে যাওয়ায় ভারত থেকে বাড়তি অক্সিজেন আমদানি করতে হচ্ছিল।
এমন পরিস্থিতিতে জনগণকে সাহস দিয়ে আজ মঙ্গলবার স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, অক্সিজেন নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। তবে স্বাভাবিক অবস্থার চেয়ে রোগী বেড়ে গেলে সঙ্কট হবে। সে জন্য যাতে রোগী না বাড়ে সে ব্যবস্থার করতে হবে।
তার দাবি, বেসরকারি খাতে তরল অক্সিজেনের উৎপাদন প্রায় ১৫০ টন। আর গ্যাস মাস্ক অক্সিজেন ২৫০ থেকে ৩০০ টন। আর চাহিদা ১২৫ থেকে ১৫০ টন। তাই অতিরিক্ত চাপ না হলে অক্সিজেনের সমস্যা হবে না।
মোট কথা রোগী না বাড়লে অক্সিজেনের সঙ্কট হবে না। কিন্তু রোগী যে বাড়বে না সেই নিশ্চয়তা আমাদের কেউ কি দিতে পারে? যদি বেড়েই যায় তাহলে কি হবে? আর বাড়লেও ঠিক কতটা বাড়তে পারে? সেই পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমরা কি তৈরি?
তাই আমরা বলতে চাই, শুধু কথার কথা বললে হবে না- অক্সিজেন নিয়ে পুরো পরিকল্পনা থাকতে হবে। কারণ ভারতের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, সঙ্কট শুধু অক্সিজেনের জন্যই হয় না; সিলিন্ডার, ঠিক সময়ে সরবরাহ, পরিবহনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোও তার সঙ্গে জড়িয়ে আছে।
আমরা মনে করি, সামনের দিনগুলোতে অক্সিজেনের সঙ্কট হবে- সেটা ধরে নিয়ে এখনই আগাম সুষ্ঠু পরিকল্পনা জরুরি। প্রাণ বাঁচাতে এই প্রাণবায়ুর সরবরাহ নিশ্চিতের কোনো বিকল্প নেই।