করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সরকার ঘোষিত লকডাউনের মধ্যেই খুলে দেয়া হয়েছে দোকানপাট-শপিংমল। রোববার (২৫ এপ্রিল) থেকে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত দোকানপাট-শপিংমল খোলা থাকবে এমন ঘোষণা এক প্রকার ঝাঁপিয়ে পড়েছিল খুলনাবাসী। করোনার কোনো ভয়ই ছিল না কারো মধ্যে। খুলনা মহানগরীর ডাকবাংলা মোড়, পিকচার প্যালেস মোড়, রেলওয়ে মার্কেট, শপিং কমপ্লেক্স, জলিল মার্কেট, হকার্স মার্কেট, মশিউর রহমান মার্কেট, কবি কাজী নজরুল ইসলাম মার্কেট, এসএমএ রব শপিং মার্কেট, দরবেশ চেম্বার, নান্নু সুপার মার্কেট, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মার্কেটে ঈদের আগাম কেনাকাটা করতে ক্রেতারা ভিড় করেছেন। সেখানে গাদাগাদি করে লোকজন চলাচল করতে দেখা গেছে। রাস্তা দিয়ে অসংখ্য মানুষ পারাপার হওয়ার কারণে ডাকবাংলা মোড়ে রীতিমতো যানজটের সৃষ্টি হয়। এ সময় অনেকের মুখে মাস্কও দেখা যায়নি। সকাল ১০টা থেকে বিভিন্ন মার্কেটের ব্যবসায়ীরা দোকানপাট খুলতে শুরু করেন। কিছু ক্রেতাকে আবার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলার আগে দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতেও দেখা গেছে।
খুলনা নগরীর পিকচার প্যালেস মোড়ে এপেক্স গ্যালারীর ম্যানেজার মুরাদ জমাদ্দার জানান, দোকানের আয়তন বড় হলেও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে একসঙ্গে ১০ জনের বেশি ক্রেতাকে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। গেটের বাইরে শরীরের তাপমাত্রা পরিমাপ যন্ত্র দিয়ে পরীক্ষা করেই ক্রেতাদের ভেতরে প্রবেশ করার অনুমতি দেয়া হয়েছে। এরপর হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও অন্যান্য লিকুইড দেয়া হচ্ছে। লকডাউনের পর রোববার বেচাকেনা ভাল হবে বলে আশা ছিল, কিন্তু তা হয়নি।
খাজা খানজাহান আলী হকার্স মার্কেটের ব্যবসায়ী ফাইয়াজ জানান, ক্রেতারা যেনো এক সঙ্গে সবাই দোকানে প্রবেশ করতে প্রতিযোগিতা করেছে। ক্রেতাদের ভিড় ও প্রচ- গরমে হিমশিম খেতে হয়েছে দোকানীদের।
খুলনা বিপণী কেন্দ্রের সবুজ এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. সবুজ জানান, প্রতিবার রোজার প্রথম দিকে বেচাকেনা ভাল হলেও লকডাউনের কারণে ব্যবসা মন্দা। রোববার সকালে দোকান খোলার প্রথম দিকে কিছু ক্রেতার দেখা মিললেও দুপুরের পর এর সংখ্যা খুবই কম। তাছাড়া গণ পরিবহন বন্ধ থাকায় খুলনার আশপাশের লোকজন কাপড় ক্রয় করতে মার্কেটে আসতে পারছেন না। নিউ মার্কেটের ক্রেতা লিলি আক্তার বলেন, দেশের পরিস্থিতি ভালো নয়। কখন আবার লকডাউন দেয় বলা যায় না তাই নিজের ও বাচ্চাদের জন্য কিছু কেনাকাটা করতে বের হয়েছি। সোহেল হাসান নামে আরেক ক্রেতা বলেন, দীর্ঘদিন দোকানপাট বন্ধ, তাই আজ খুলতেই চলে আসছি।
এ বিষয়ে সিভিল সার্জন ডা. নিয়াজ মোহাম্মাদ বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনেই দোকানপাট খুলতে বলা হয়েছে। এরপরেও যদি কেউ স্বাস্থ্যবিধি না মেনে চলে তাহলে খুলনাসহ সারাদেশ ঝুঁকিতে পড়বে।
– স্টাফ রিপোর্টার