বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘গণমাধ্যমের কণ্ঠ নিস্তব্ধ করতেই ভোট ডাকাতির নির্বাচনে খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র হওয়া আব্দুল খালেকের ষড়যন্ত্রে সাংবাদিক আবু তৈয়ব মুন্সীকে ফাঁসানো হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক এবং সাজানো মামলা দিয়ে জেলে পাঠানো হয়েছে। আমরা অবিলম্বে মামলা প্রত্যাহার করে তার মুক্তি দাবি করছি।’
তিনি বলেন, ‘খুলনার মেয়র ও তার স্বজনদের দুর্নীতি, অনৈতিক ও বেআইনি অপকর্মের বিরুদ্ধে সত্য সংবাদ প্রকাশের জন্যই সিনিয়র সাংবাদিক আবু তৈয়বকে টার্গেট করেছেন মেয়র।’
শুক্রবার (২৩ এপ্রিল) বিএনপির ভারপ্রাপ্ত দফতর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মতো নিবর্তনমূলক কালো আইন ব্যবহারের মাধ্যমে দমন-নিপীড়ন চালাচ্ছে। বর্তমান সরকার জনগণের সরকার নয় বলেই সামান্য সমালোচনাও সহ্য করতে পারছে না। অনৈতিক সরকারের ব্যর্থতা, অযোগ্যতা, দমন-নিপীড়ন, গণতন্ত্র ও গণবিরোধী কার্যকলাপ এবং ক্ষমতাসীন দলের মন্ত্রী, এমপি ও নেতাকর্মীদের দুর্নীতি, লুটপাট, অনৈতিকতা, অনিয়ম, বেপরোয়া আচরণ বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখালেখির জন্য ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দেয়া হচ্ছে। এই কালা কানুন থেকে লেখক, সাংবাদিক, কবি, কার্টুনিস্ট, মানবাধিকার কর্মীরা কেউ রেহাই পাচ্ছে না।
ফখরুল বলেন, ফেনী ও নোয়াখালীর চাটখিলে বিএনপি এবং অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের এবং গ্রেফতার ও হয়রানি করা হচ্ছে। শুধুমাত্র বিএনপি করার কারণে তাদের ওপর নিপীড়ন চালানো হচ্ছে। এটি নিঃসন্দেহে মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও সরকারবিরোধী রাজনীতির ওপর চরম আঘাত। গণমাধ্যম কর্মী এবং বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের ওপর জুলুম-নির্যাতন বন্ধ করে স্বাধীনতার প্রকৃত চেতনা গণতন্ত্র এবং স্বাধীন মত প্রকাশের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দেয়া না হলে সরকারকে তাদের শোচনীয় পরিণতির জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘ফেনী জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক গাজী হাবিবুল্লাহ মানিক, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন দোলন, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সালাউদ্দিন মামুন, ছাত্রদলকর্মী এমরানুল হক এবং নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার রামনারায়ণপুর ই্উনিয়ন যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক আব্দুল করিম পাটোয়ারী মিন্টুর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। যুবদল নেতা আব্দুল করিম পাটোয়ারী মিন্টু এবং ফেনীর ছাগলনাইয়া পৌর বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য ও সাবেক কমিশনার জয়নাল আবেদীন ফারুককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আওয়ামী সরকারের এসব ন্যাক্কারজনক ঘটনা চলমান ভয়াবহ দুঃশাসনের খণ্ডচিত্র মাত্র।’
ফখরুল বলেন, ‘কালো আইনের মাধ্যমে জনগণের বাকস্বাধীনতা, লেখার স্বাধীনতা, মুক্তচিন্তার স্বাধীনতা কেড়ে নেয়া হয়েছে এবং জনরোষ থেকে নিজেদেরকে রক্ষা করতে এই আইনটি ব্যবহার করা হচ্ছে। চলমান বৈশ্বিক অতিমারি করোনার মধ্যেও এই আইনের অপপ্রয়োগ করে নিজেদের ফ্যাসিবাদী চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন দিয়ে সরকার স্বাধীন ও বিরুদ্ধ মতকে দমন করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।’
বিবৃতিতে ফখরুল খুলনার সাংবাদিক আবু তৈয়ব মুন্সী ও ফেনী জেলা এবং নোয়াখালীর চাটখিলে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলা প্রত্যাহার ও হয়রানি বন্ধসহ নিবর্তনমূলক ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের জোর দাবি জানান।
-ঢাকা অফিস