সাধারণত কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় বিশুদ্ধ পানির সংকট বাড়লে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তীব্র গরমের কারণেও ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়ে যায়।
আবার কখনো কখনো মানুষের অসচেতনতার কারণেও ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়ে যেতে পারে। গতকাল যুগান্তরে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, দেশের দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় লাফিয়ে বাড়ছে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা।
বিভিন্ন হাসপাতালে রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় পরিস্থিতি মোকাবিলায় হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক ও নার্সসহ সেবাদাতারা। ইতোমধ্যে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত বেশ কয়েকজনের মৃত্যুর খবরও পাওয়া গেছে।
করোনা মহামারির মধ্যে হঠাৎ ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় মহামারির সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক আছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। করোনা রোগীদের চিকিৎসার কারণে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীসহ অন্যান্য রোগীর চিকিৎসা যেন ব্যাহত না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে কর্তৃপক্ষকে।
কেউ কেউ মনে করছেন, বৈরী আবহাওয়া, দূষিত ও লবণাক্ত পানি ব্যবহারের কারণে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। চৈত্র-বৈশাখ মাসে পুকুরগুলোর পানি তলানিতে নেমে যায়। যারা বাধ্য হয়ে ওই দূষিত পানি ব্যবহার করছেন, তাদের ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা প্রবল। অনেক সময় বিকল্প ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও কেউ কেউ পুকুরের পানি ব্যবহার করে থাকে। এ পানি ব্যবহারের ফলে ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যায়।
যে কোনো কারণে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়ে গেলে সময়মতো যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে। ডায়রিয়ার কারণে শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দেয়। তাই এর লক্ষণ দেখা দেওয়া মাত্রই রোগীকে প্রয়োজনমতো স্যালাইন খাওয়ানোর পাশাপাশি চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। এ রোগের কারণে রোগী দ্রুত দুর্বল হয়ে পড়ে।
তাই সমস্যা বাড়লে কোনো রকম জটিলতা সৃষ্টির আগেই রোগীকে নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। বস্তুত একটু সচেতন হলেই পানিবাহিত রোগ এড়ানো সম্ভব। সব সময় দূষিত পানি ও বাসি খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।
খাওয়ার আগে যথাযথ নিয়মে হাত ধুতে হবে। কোথাও বিশুদ্ধ পানির সংকট সৃষ্টি হলে কর্তৃপক্ষকে সময়মতো যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে। সাধারণত মানুষ এসব বিষয়ে সচেতন। তারপরও যেহেতু বিভিন্ন এলাকায় ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে; তাই এর প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করতে কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।