করোনাভাইরাসের কারণে চলমান লকডাউনে ক্ষতিগ্রস্ত দরিদ্র, দুঃস্থ, ভাসমান এবং অসচ্ছল মানুষকে সহায়তার লক্ষ্যে জেলা প্রশাসকদের অনুকূলে অর্থ বরাদ্দ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চলমান লকডাউনে যারা কর্মহীন হয়ে পড়েছেন তাদের সহায়তায় এ উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। গত ৫ এপ্রিল থেকে লকডাউন চলছে বাংলাদেশে। ১৪ এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছে সর্বাত্মক লকডাউন। এই লকডাউন আগামী ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এই অবস্থায় কর্ম হারিয়ে বা কর্ম সীমিত হয়ে ঝুঁকিতে কয়েক কোটি মানুষ। যদিও মাত্র ১০ কোটি টাকা সেই হিসেবে তাদের জন্য তেমন কিছুই না, তারপরেও তা ধারাবাহিকভাবে সমাজের বিভিন্ন স্তরে একটা ইতিবাচক প্রভাব রাখতে পারবে বলে আমরা মনে করি। নগদ অর্থ, খাবার, টিসিবির মাধ্যমে সাশ্রয়ে নিত্যপণ্য বিক্রি, কৃষকদের সহায়তার মতো এসব উদ্যোগে প্রান্তিক জনগোষ্ঠির জন্য নেয়া উদ্যোগে কিছু প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। এরমধ্যে সবচেয়ে প্রথমে আসে দুর্নীতি ও দলীয়করণ। যাদের কথা চিন্তা করে প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রের এই টাকা খরচের উদ্যোগ নিলেন, সেই টাকা তারা সঠিকভাবে পাবে কিনা তা নিয়ে শঙ্কা অতীত অভিজ্ঞতায় যুক্তিযুক্ত। সহায়তার এ অর্থ গতবছরের মতো এ বছর উপকারভোগী প্রত্যেকে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে হাতে পাবেন বলা হলেও, ওই উপকারভোগীর তালিকা করাও একটি বড় চ্যালেঞ্জ। মাঠপর্যায়ে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ও তৃণমূলে থাকা ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের পছন্দের নয়তো পরিবাবের লোকজনের মধ্যে নানা সময়ে নানা সাহায্য বিতরণের নেতিবাচক সংবাদ জাতি ইতিপূর্বে বহুবার প্রত্যক্ষ করেছে, গতবছরেও তা দেখা গেছে। বিষয়টি খুবই গুরুত্ব সহকারে দেখা দরকার বলে আমরা মনে করি। গতবছরের করোনাকালীন ছুটির সময়ে সাধারণ ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের পাশে নানা সংগঠন ও অবস্থাসম্পন্ন মানুষকে দাঁড়াতে দেখা গিয়েছিল। কিন্তু এবছর সে সাহায্য করার ধারা দেখা যাচ্ছে না বললেই চলে। কাজেই ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের বড় ভরসার জায়গা সরকারি সাহায্য। এই সাহায্য ঠিকভাবে তাদের মধ্যে না পৌঁছালে পেটের তাগিদে অনেককে অপরাধের পথে দেখা যেতে পারে বলে আমাদের শঙ্কা। আমাদের আশাবাদ, সরকারের সাহায্যের এসব উদ্যোগ সঠিকভাবে বাস্তবায়নে সব কর্তৃপক্ষ মনোযোগী হবেন।