করোনায় খালেদা জিয়ার সময় কাটছে যেভাবে

5
Spread the love

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ১৪তম দিন পার করছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। দ্বিতীয় সপ্তাহ খুব ‘ক্রুশিয়াল’ বলে জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা। তবে তারা এও জানান, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার ক্রমান্বয়ে উন্নতি হচ্ছে। পাশাপাশি নিবিড় পর্যবেক্ষণও অব্যাহত আছে। আজ বুধবার (২১ এপ্রিল) রাত ১০টার দিকে মেডিকেল টিমের সদস্যরা আবারও তার স্বাস্থ্যের খোঁজ নিতে গুলশানের ফিরোজায় যাবেন।

পরিবার রাজনৈতিক কার্যালয়ের দায়িত্বশীলদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, খালেদা জিয়ার মানসিক অবস্থা অটুট আছে। তিনি তার বাসভবন ফিরোজায় কর্মরত কয়েকজন করোনা আক্রান্তের নিয়মিত খোঁজ-খবর রাখছেন। সকালে ইবাদতের মাধ্যমে দিন শুরু হয় তার। এরপর পত্রিকা পড়েন। বিরতি নিয়ে দেখেন টেলিভিশনও।

চিকিৎসকদের একজন জানান, তার বাসার যারা আক্রান্ত, তিনি তাদের নিয়মিত খোঁজ রাখছেন। চিকিৎসকরা যখন তার শারীরিক অবস্থার আপডেট নেন, ওই সময় অন্যদের স্বাস্থ্যের বিষয়টিও ফলোআপে রাখতে অনুরোধ করেন খালেদা জিয়া। মঙ্গলবার (২০ এপ্রিল) রাতে ডা. জাহিদ হোসেন বিএনপি চেয়ারপারসনকে পর্যবেক্ষণ শেষে বেরিয়ে সাংবাদিকদের জানান, খালেদা জিয়া দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন এবং সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার অনুরোধ করেছেন।

দায়িত্বশীল একজন জানান, ইতোমধ্যে চিকিৎসকদের মাধ্যমে বিএনপি প্রধান দেশবাসীকে নিয়মিত মাস্ক পরতে উৎসাহিত করেছেন। একইভাবে নিজের বাসায়ও তিনি বাকিদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে উৎসাহ দিচ্ছেন।

পরিবারের একটি সূত্র জানায়, প্রতিদিন নিয়ম করেই খালেদা জিয়া তার লন্ডনস্থ সন্তান তারেক রহমান, পুত্রবধূ ডা. জোবাইদা রহমান নাতি-নাতনিদের সঙ্গে কথা বলেন। কখনও ভিডিও কলে, কখনও ফোনে যোগাযোগ রাখছেন প্রয়াত সন্তান আরাফাত রহমান কোকোর পরিবারের সঙ্গেও। ইতোমধ্যে খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আসা কয়েকজন জানিয়েছেন, তার মনোবল বেশ দারুণ। একজনের ভাষ্য, ৭৬ পার হতে চললেও বয়স তাকে কাবু করতে পারেনি।

বিএনপি চেয়ারপারসনের মেডিকেল টিমের সদস্য অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বুধবার বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, আজ রাত ১০টার দিকে মেডিকেল টিমের প্রধান অধ্যাপক ডা. এফএম সিদ্দিকীসহ বাকিরা যাবেন খালেদা জিয়ার শারীরিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে।

ডা. জাহিদ বলেন, ‘ম্যাডামের অবস্থা আলহামদুলিল্লাহ ভালো। আগামী কয়েক দিন খেয়াল রাখতে হবে আরও গভীরভাবে। আজ তার ১৪তম দিন পার হচ্ছে। করোনা রোগীদের ক্ষেত্রে সময়টা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আগামী সপ্তাহ নাগাদ আমরা আবার তার করোনা পরীক্ষা করাবো। তবে, তার শারীরিক অবস্থা বর্তমানে স্থিতিশীল আছে।’

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় পাঁচ বছরের সাজা (কারাদ-) হয় খালেদা জিয়ার। ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকারের নির্বাহী আদেশে তার ছয় মাসের মুক্তি হয়। পরে ওই বছরের সেপ্টেম্বরে তার মুক্তির সময় আরও ছয় মাস বাড়ায় সরকার। বছরের মার্চে তৃতীয়বারের মতো ছয় মাসের মেয়াদ বাড়ানো হয়। চলতি ১১ এপ্রিল করোনা টেস্ট পজিটিভ আসে খালেদা জিয়ার।

ঢাকা অফিস