দেশে আবারও বেড়ে চলেছে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা। দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুও। এই মহামারি থেকে বাঁচতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো বিকল্প নেই বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। নিয়মিত মাস্ক ব্যবহারের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।
কিন্তু অনেক অসচেতন মানুষ নিয়ম ভেঙে মাস্ক ছাড়াই অফিস, আদালত, ধর্মীয় ও ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করছেন। এতে একদিকে যেমন স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন হচ্ছে, অন্যদিকে করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধির প্রবণতাও বাড়ছে।
এ অবস্থায় বাসা, অফিস, ধর্মীয় উপাসনালয় কিংবা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে এক দিগন্তকারী যন্ত্র আবিষ্কার করেছে রিয়াদ আহমেদ শিথিল (২০) নামের এক যুবক। তিনি এই যন্ত্রটির নাম দিয়েছেন ‘কোভিড-১৯ সেফটি ফেস মাস্ক ডিটেকটিভ ইন ডোর’।
যন্ত্রটির সুবিধা হলো- ফেস মাস্ক ছাড়া কেউ দরজা দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করতে পারবে না। শুধুমাত্র মুখে মাস্ক থাকলে একটি সবুজ বাতি জ্বলে উঠবে এবং দরজা খুলে যাবে। মুকে মাস্ক না থাকলে মাস্ক পরার অনুরোধ জানানো হবে। মাস্ক থাকলে প্রবেশকারীকে স্বাগতম জানাবে যন্ত্রটি।
আবিষ্কৃত এ যন্ত্র সময়োপযোগী ও কার্যকারী হলেও অর্থের অভাবে সামনের দিকে এগোতে পারছেন না এই যুবক। সরকারি বা বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় উদ্যোগটি বাস্তবায়ন হলে করোনা মোকাবিলায় অগ্রণী ভূমিকা রাখবে বলে মন্তব্য করেছেন সচেতন ব্যক্তিরা। শিথিল কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলাধীন পান্টি ডিগ্রি কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র। তার জন্ম পান্টি ইউনিয়নের পান্টি গ্রামের এক মধ্যবিত্ত পরিবারে। বাবা নজরুল ইসলাম কম্পিউটারে অনলাইন সার্ভিস করে জীবিকা নির্বাহ করেন। মা শেলী খাতুন পেশায় একজন গৃহিণী।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, শিথিল শুধু স্বপ্নবাজ ছেলে নয় বরং স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে বিশ্বাসী। তিনি বিশ্বাস করেন অধ্যবসায় আর আত্মবিশ্বাসই পারে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে।
উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে ৪২তম বিজ্ঞান মেলায় অংশ নেন শিথিল। পান্টি কলেজ থেকে অংশ নিয়ে ‘কোভিড-১৯ সেফটি ফেস মাস্ক ডিটেকটিভ ইন ডোর’ নামর এই যন্ত্রটি উপস্থাপনা করেন তিনি। বিচারে প্রথম স্থান অর্জন করে কলেজ। সময়োপযোগী আবিষ্কারের জন্য বিভিন্ন মহল থেকে ভূয়সী প্রশংসাও কুড়িয়েছেন।
রিয়াদ আহমেদ শিথিল বলেন, ‘অর্থেও অভাবে আমার সফলতাগুলো ঝরে পড়ছে। সরকারি বা বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে নতুন কিছু উপহার দিতে চাই দেশবাসীকে।’
শিথিলের মা শেলী খাতুন বলেন, ‘খুব ছোট থেকেই বিজ্ঞান নিয়ে চিন্তা ভাবনা ওর। কিন্তু গরীব হওয়ায় এগোতে পারেনি। কারও সহযোগিতা পেলে ভালো কিছু করবে শিথিল।’
– কুষ্টিয়া প্রতিনিধি