ক্রমশ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে পরিস্থিতি

5
Spread the love

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর মিছিলকে কোনোভাবেই ঠেকানো যাচ্ছে না। প্রতিদিন সেই মিছিল দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে। আমরা কেউই বলতে পারছি না, ঠিক কোথায় গিয়ে থামবে এই মৃত্যুর মিছিল। এরই মধ্যে সেই মিছিলে সামিল হয়েছে বিশ্বের ৩০ লাখেরও বেশি মানুষ। রোববার সকাল পর্যন্ত তাতে যুক্ত হয়েছে বাংলাদেশেরও ১০ হাজার ৩৮৫ জন। করোনাভাইরাসের সার্বিক পরিসংখ্যান রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারর্স ডট ইনফো বলছে, সারাবিশ্বে শেষ ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ১১ হাজার ৫৯৬ জনের। এর আগের দিন এই সংখ্যা ছিল ১২ হাজার ৬৩৭ জন। আর তার ঠিক আগের দিন মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ১৩ হাজার ৯১৩ জন। তার মানে মাত্র তিনদিনে মৃত্যু হয়েছে ৩৮ হাজার ১৪৬ জনের। আমরা জানি, আগের সব রেকর্ড ভেঙে এই সময়ে বাংলাদেশে প্রাণ হারিয়েছে যথাক্রমে ১০১, ১০১ এবং ১০২ জন। সবমিলিয়ে এই তিনদিনে মৃত্যু হয়েছে ৩০৪ জনের। শুধু তাই নয়, এই সময়ে প্রতিদিনই আগের রেকর্ড ভেঙে মৃত্যুর নতুন রেকর্ড হয়েছে। দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের পর গত শুক্রবারের আগে শতাধিক মৃত্যুর কথা কেউ শোনেনি। উপরের দুই পরিসংখ্যানেই করোনাভাইরাসের বর্তমান ভয়াবহতা বোঝানোর জন্য যথেষ্ঠ। বিশেষ করে আমাদের দেশে দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হওয়ার পর। এরই মধ্যে হাসপাতালে আইসিইউ থেকে শুরু করে সাধারণ বেডেরও সঙ্কট তৈর হয়েছে। রোগীদের জায়গা দিতে পারছে না হাসপাতালগুলো। বলতে গেলে চিকিৎসা পেতে মানুষের মধ্যে প্রকট হাহাকার তৈরি হয়েছে। এমন পরিস্থিতির মধ্যে নতুন করে আরেকটি কোভিড হাসপাতালের উদ্বোধন করেছে সরকার। রাজধানীর মহাখালীতে অবস্থিত উত্তর সিটি করপোরেশনের চালুর অপেক্ষায় থাকা একটি শপিংমলকে হাসপাতালে রূপান্তরিত করা করা হয়েছে। তাতে হাজার রোগীকে স্থান দেওয়া যাবে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। সেখানে ১১২টি আইসিইউ বেড ২৫০টি এইচডিইউ বেড ছাড়াও ১৩৮টি আইসিইউ মানের বেড রয়েছে। এরই বাইরেও অন্য হাসপাতালগুলোর সক্ষমতা বাড়িয়ে করোনায় আক্রান্ত রোগীদের সেবা দেওয়ার প্রচেষ্টা চলছে। কিন্তু তাতেও কি শেষ রক্ষা হচ্ছে? দেশের মৃত্যুর পরিসংখ্যান কিন্তু সে কথা বলে না। আমরা নিশ্চিত করেই বলতে পারি, প্রতিদিন যাদের মৃত্যু হচ্ছে; তাদের একটা অংশ সঠিক চিকিৎসা না পেয়েই মারা যাচ্ছেন।

তবে এই সঙ্কট শুধু যে বাংলাদেশেই; তা কিন্তু নয়। বিশ্বের বহু উন্নত দেশের চিত্রও এর কোনো অংশে কম নয়। কেননা এক সঙ্গে এত এত রোগীকে সেবা দেওয়ার ক্ষমতা আসলে পৃথিবীর কোনো দেশেরই পক্ষেই সম্ভব নয়। আর কারণেই তারা করোনার চিকিৎসা দেওয়ার চেয়ে তা প্রতিরোধের ওপর জোর দিয়েছে। কোনো কোনো দেশ তাতে সাফল্যও পেয়েছে। আমরাও তাই মনে করি। করোনাভাইরাসকে প্রতিরোধ করা না গেলে পরিস্থিতি ক্রমশই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে। তখন আর কারো কিছু করার থাকবে না। তাই লকডাউনের এই সময়ে কষ্ট হলেও সম্মিলিত প্রচেষ্টায় মহামারি থেকে আমরা মুক্তি লাভ করবো। এছাড়া আর কোনো বিকল্প নাই। সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মানতেই হবে।