ফ্রান্সে ১৮ বছরের কম বয়সী মুসলিম কিশোরীদের প্রকাশ্যে হিজাব পরা নিষিদ্ধের প্রস্তাব সিনেটে পাশ হয়েছে। তবে বিতর্কিত এই বিল পাশের পর তা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, বিলটির বিরোধিতা করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে #HandsOffMyHijab লিখে প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন অনেকে।
সম্প্রতি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁর বিতর্কিত পৃথকীকরণ বিলের অনুমোদনের পক্ষে ভোট দিয়েছে ফরাসি সিনেট। দেশটির ধর্মনিরপেক্ষ ব্যবস্থার কথা প্রচারের চেষ্টা করে বিলটিকে ‘বিচ্ছিন্নতাবাদবিরোধী’ বিল হিসেবে সিনেটে তোলা হয়। সিনেটে অনুমোদন পেলেও এটি এখনও আইনে পরিণত হয়নি। এই বিল আইন হয়ে গেলে ১৮ বছরের কম বয়সী ফরাসি মুসলিম কিশোরীদের জনসম্মুখে হিজাব পরা নিষিদ্ধ করা হবে।
তবে এই বিলের বিরোধিতা করেছেন অনেকে। প্রস্তাবিত এই আইনকে ‘ইসলামবিরোধী আইন’ বলে আখ্যায়িত করেছেন তাঁরা। এর মাধ্যমে মুসলিম সংখ্যালঘুদের একঘরে করা হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেছেন তাঁরা।
টুইটারে মানার নামে একজন লিখেছেন, ফ্রান্সে ১৫ বছর বয়সীদের যৌনতায় সম্মতি আছে। আর ১৮ বছরের কম বয়সীদের হিজাব পরার অনুমতি নেই। এটি হিজাববিরোধী কোনো আইন নয়। এটি ইসলামবিরোধী আইন। #হ্যান্ডসঅফমাইহিজাব, #ফ্যান্সহিজাবব্যান।
নাজওয়া জেবিয়ান নামে একজন লিখেছেন, জোর করে কাউকে হিজাব পরানো যেমন অন্যায়, তেমনি জোর করে কাউকে হিজাব খুলতে বাধ্য করাও অন্যায়। এটি একান্তই তার ব্যক্তিগত ব্যাপার।
অনেক জনপ্রিয় ব্যক্তিও এই বিলের বিরোধিতা করেছেন। অলিম্পিক অ্যাথলেট ইবতিহাজ মুহাম্মাদ ইনস্টাগ্রামে একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন। তিনি বলেছেন, সিনেটে অনুমোদন দেয়া বিলটি ফ্রান্সে ইসলামোফোবিয়ার বিষয়টি যে আরও তীব্র হচ্ছে তারই ইঙ্গিত দেয়।
মুসলিম উইমেন’স ডে এবং মুসলিম গার্ল ওয়েবসাইটের প্রতিষ্ঠাতা আমানি আল-খাতাহবেহ টুইট করেছেন, একজন নারী কোন পোশাক পরবে বা কোন পোশাক পরবে না, তা কোনো সরকারই নির্ধারণ করতে পারে না।
সোমালিয়ান বংশোদ্ভুত মডেল রাওদাহ মোহাম্মদ টুইটারে নিজের ছবি শেয়ার করে লিখেছেন, ফ্রান্সের সিনেটের এই কর্মকাণ্ড ‘সমতার বিপরীত’।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি গত মাসে প্রস্তাবিত এই বিলটিকে ‘ফ্রান্সে অধিকার এবং স্বাধীনতার উপর ভয়াবহ আক্রমণ’ বলে আখ্যায়িত করেছে। এই বিলের অনেক আপত্তিকর অংশ ছেঁটে ফেলা দরকার বলে জানায় তারা।
–খুলনাঞ্চল ডেস্ক
