নারায়ণগঞ্জের রিসোর্ট থেকে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককে উদ্ধার করে হেফাজত কর্মীদের হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায় আরও তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। শুক্রবার সোনারগাঁও থানায় এসব মামলা দায়ের করা হয়। একটি মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে হেফাজত নেতা মামুনুল হককে।
সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান জানান, উপজেলা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় উপজেলা যুবলীগের প্রচার সম্পাদক নাসির উদ্দীন বাদী হয়ে স্থানীয় হেফাজত ও বিএনপির ১১১ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে একটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককে। এ ছাড়া অজ্ঞাত আরও ৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে এই মামলায়।
ওসি আরও জানান, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলামের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাড়ি ঘর ভাংচুরের ঘটনায় রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে হেফাজতে ইসলাম ও বিএনপির ১১৯ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত ২৫০ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
এ ছাড়া অপর মামলাটি দায়ের করেছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সোহাগ রনির বাবা শাহ জামাল তোতা। এ মামলায় বিএনপি ও হেফাজতে ইসলামের সাত জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত নামা ২৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এদিকে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) শুক্রবার জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে হেফাজতে ইসলামের কর্মী খালেদ সাইফুল্লাহ (৩৪), কাজী সমির (৩২), অহিদুল ইসলাম (৩৬), আব্দুল আউয়ালকে (৩৯) গ্রেপ্তার করেছে।
গত ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ের রয়্যাল রিসোর্টে স্থানীয়দের হাতে নারীসহ আটক হন হেফাজত কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক। পরে সেখানে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা উপস্থিত হন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় উপজেলা প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও। খবর পেয়ে হেফাজত ইসলামের কর্মীরা রিসোর্টে হামলা ভাঙচুর চালিয়ে মামুনুল হককে ‘ছিনিয়ে নিয়ে’ যান। পরে হেফাজত কর্মীরা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় ও যুবলীগ, ছাত্রলীগ দুই নেতার বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর চালান।
এ ঘটনায় সোনারগাঁও থানায় পৃথক তিনটি মামলা দায়ের করা হয়। যার মধ্যে দুটি মামলার বাদী পুলিশ ও আরেকটি মামলায় বাদী আহত এক সাংবাদিক।
এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের শান্তিনগর দারুন নাজাত নুরানি মাদ্রাসায় গোপন বৈঠকের অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া সাত জনকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়। আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। আগামী রোববার রিমান্ডের উপর শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।
-ঢাকা অফিস