বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ গেমসের বর্ণিল উদ্বোধন

3
Spread the love

হু হু করে বাড়ছে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা। গতকাল দেশে রেকর্ড শনাক্তের দিনে মৃত্যু হয়েছে ৫৯ জনের। এরমধ্যেই ৫ হাজার ৩শ’ ক্রীড়াবিদ নিয়ে ৩১ ডিসিপ্লিনে শুরু হয়েছে নবম বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ গেমস। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে বর্ণিল এই আয়োজনের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে স্টেডিয়ামে এসে নয়, তিনি উদ্বোধন করেন ভার্চ্যুয়ালি। বাংলাদেশ গেমস মানেই জমকালো উদ্বোধনী ও সমাপনী অনুষ্ঠান; কিন্তু এবার করোনাভাইরাসের কারণে খেলোয়াড়, কোচ, কর্মকর্তা, দর্শকের সুরক্ষার প্রয়োজনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান আয়োজনে কাটছাঁট করেছে বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন (বিওএ)।

দুই হাজার ৯৫৩ দিন বিরতির পর বাংলাদেশ গেমসের উদ্বোধন উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে প্রবেশদ্বারগুলো দর্শকদের জন্য খুলে দেয়া হয় বিকাল ৩টায়। সাড়ে ৬টায় পবিত্র কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে শুরু হয় মূল অনুষ্ঠান। এরপর অডিও ভিজ্যুয়াল প্রদর্শনীর মাধ্যমে পর্দায় তুলে ধরা হয় বাংলাদেশের খেলাধুলার উল্লেখযোগ্য সাফল্যগাথা।

সন্ধ্যা পৌনে ৭টায় জাতীয় সংগীতের পরই শুরু হয় অডিও ভিজ্যুয়াল প্রদর্শনী। যার মাধ্যমে এক ঝলকে তুলে ধরা হয় দেশের খেলাধুলার নানা ইতিহাস-ঐতিহ্য। দলগুলো মাঠে প্রবেশ করে এর পরেই। এরপর প্রতিযোগিতার শপথবাক্য পাঠ করান দেশের তারকা আরচার রোমান সানা। ৭টা ৮ মিনিটে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিওএর মহাসচিব সৈয়দ শাহেদ রেজা। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন বিওএ সভাপতি ও গেমসের সাংগঠনিক কমিটির নির্বাহী চেয়ারম্যান সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল এমপি। এ সময় ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা জানেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু ৯ম বাংলাদেশ গেমস আমরা আয়োজন করতে যাচ্ছি। এ গেমস আয়োজনে আমরা সবার সহযোগিতা কামনা করছি।’

প্রতিমন্ত্রী যোগ করেন, আপনারা অবগত আছেন যে, এই গেমস গত বছর অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কোভিড পরিস্থিতির কারণে আমরা করতে পারিনি। এখনো কোভিড পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। তারপরও আমরা আটটি বিভাগে আয়োজন করছি। খেলোয়াড়রা একসঙ্গে থাকলে পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই আমরা খেলাকে দেশব্যাপী ছড়িয়ে দিয়েছি।

সোয়া ৭টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চ্যুয়ালি গেমসের উদ্বোধন ঘোষণার পর মশাল প্রজ্বালন করেন গলফার সিদ্দিকুর রহমান ও সাঁতারু মাহফুজা খাতুন শীলা।

১৯৭৮ সালে বাংলাদেশ অলিম্পিক নামে অনুষ্ঠিত হয়েছিল গেমসের প্রথম আসর। এরপর ২০০২ সাল পর্যন্ত নিয়মিত গেমস হলেও বড় একটি গ্যাপ হয়ে যায় এরপর থেকে। ১১ বছর ১১ মাস ১১ দিন পর অষ্টম আসর হয়েছিল ২০১৩ সালে। ওটিই বাংলাদেশ গেমসের সর্বশেষ আসর। চার বছর ২০১৭ সালে ৯ম বাংলাদেশ গেমস্‌ করতে চেয়েছিল বিওএ। পরিবর্তে বাংলাদেশ গেমসের চিন্তা বাদ দিয়ে ২০১৮ সালে যুব গেমস আয়োজন করে তারা। জেলা, বিভাগ ও জাতীয় পর্যায়ের তিন স্তরে আয়োজিত সাড়া জাগানো এ যুব গেমসে গোটা দেশের অনূর্ধ্ব-১৭ বছর বয়সী প্রায় ৩০ হাজার খেলোয়াড় ও কর্মকর্তা ২০টি ডিসিপ্লনে অংশ নেয়। বাংলাদেশ গেমস আয়োজনের সিদ্ধান্ত হয় ২০২০ সালে। ওই বছরের ৫ই মার্চ  নবম বাংলাদেশ গেমসের লোগো ও মাসকট উন্মোচন করে বিওএ। এই গেমসটি শুরু হওয়ার কথা ছিল ২০২০ সালের ১লা এপ্রিল। কিন্তু করোনা প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ায় গেমস স্থগিত করে বিওএ। ঠিক এক বছর পর গতকাল ৩১ ডিসিপ্লিনে ৫৩০০ জন ক্রীড়াবিদ ১২৭১টি ইভেন্টে ১২৭১টি পদকের লড়াই শুরু করেন।

– স্পোর্টস রিপোর্টার