উপমহাদেশের প্রখ্যাত কওমী আলেম বর্ষিয়ান রাজনীতিবিদ সাবেক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মুফতি মোহম্মদ ওয়াক্কাস আর নেই। বুধবার (৩১মার্চ) ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে রাজধানীর মহাখালী শেখ রাসেল গ্যাষ্ট্রোলিভার ইনষ্টিটিউটের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মত্যুবরণ করেন তিনি। ইন্না লিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিউন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। তিনি স্ত্রি, তিন ছেলে ও চার মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
বেশ কয়েকদিন ধরে নানা রোগে ভুগছিলেন মুফতি ওয়াক্কাস। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে গত ২২ মার্চ তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর ২৪ মার্চ তাকে মহাখালী শেখ রাসেল গেষ্ট্রোলিভার ইন্সটিটিউটের আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার ভোরে তিনি শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মরহুমের ছেলে মাওলানা আব্দুর রশিদ ওয়াক্কাস বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মুফতি ওয়াক্কাস মণিরামপুরের কৃতী সন্তান। তার মৃত্যুতে মণিরামপুরের সর্বস্তরের মানুষের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। উপজেলার মাদানিনগরের প্রখ্যাত জামেয়া ইমদাদিয়া মাদানিনগর মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা তিনি। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে তিনি ওই প্রতিষ্ঠানের মুহতামিম ছিলেন।
মুফতি ওয়াক্কাস বাংলাদেশ কওমি মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড বেফাকের সিনিয়র সহ-সভাপতি, হাইয়াতুল উলিয়ার কো-চেয়ারম্যান, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের একাংশের সভাপতি ছিলেন। রামপুরা ঢাকার জামিয়া আরাবিয়া দারুল উলুম নতুনবাগ মাদরাসার প্রধান মুফতি ও শায়খুল হাদিসের দায়িত্বে ছিলেন তিনি।
ইসলাম প্রচারের পাশাপাশি রাজনীতির মাঠে সরব ছিলেন মুফতি ওয়াক্কাস। এরশাদ সরকারের শাসনামলে ১৯৮৬ সালে তিনি মণিরামপুর থেকে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ১৯৮৮ সালে হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদ প্রতিষ্ঠিত জাতীয় পার্টি থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে ধর্মমন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। পরে তিনি জাতীয় সংসদের হুইপ নির্বাচিত হন। ২০০১ সালে বিএনপির সাথে জোটবদ্ধ হয়ে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করে মণিরামপুর থেকে আবারো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন মুফতি ওয়াক্কাস। এরপর ২০০৮ ও ২০১৮ সালে ধানের শীষে নির্বাচন করে হেরে যান তিনি। বুধবার সন্ধ্যায় জানাজা শেষে মাদানিনগর মাদরাসা চত্বরে সমাহিত করা হয় বিশিষ্ট এই ব্যক্তিকে।
– মণিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি