মোংলায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে প্রতিপক্ষের হামলায় নারীসহ ৫ জন গুরুতর আহত হয়েছে। শুক্রবার রাতে এ ঘটনার পর আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হলে তাৎক্ষনিক দুইজনকে এবং শনিবার সকালে আরো একজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও আহতদের স্বজনেরা জানান, উপজেলার সুন্দরবন ইউনিয়নের গোড়া বাঁশতলা এলাকার সোবাহান হাওলাদারের সাথে একই এলাকার রোকা মিয়ার মধ্যে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে বিরোধ চলে আসছিল। সেই বিরোধের জের ধরে সোবাহান হাওলাদার (৬৫) ও তার ছেলে ইয়াছিন হাওলাদার (৪০), ফারুক হাওলাদার (৩৮) এবং জামাই খোকন শেখ (৩২) শুক্রবার রাতে রোকা মিয়ার (৫৫) উপর অতর্কিত হামলা চালায়। রোকা মিয়াকে মারধর করতে লাগলে তার ডাক চিৎকারের তার স্ত্রী সেলিনা বেগম (৪০) বেগম, ভাই হালিম (৪০), ভাইপো কামরুল (৩৫) ও ভাইপো কামরুলের স্ত্রী কুলসুম বেগম (২৫) ছুটে এলে তাদেরকেও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে সোবাহান গংরা। পরে আহতদেরকে তাদের আত্মীয়স্বজন উদ্ধার করে রাতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। আহতদের মধ্যে রোকা মিয়া ও হালিমের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদেরকে সঙ্গে সঙ্গে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এদিকে হাসপাতালে ভর্তি থাকা কামরুলকে শনিবার সকালে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডাঃ শাহানা মোরশেদ বলেন, শুক্রবার রোকাসহ যে ৫ জনকে হাসপাতালে আনা হয় তাদের মধ্যে দুইজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাৎক্ষনিক খুলনায় পাঠানো হয়েছে। কারণ তাদের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ধারালো অস্ত্রে মারাত্মক আঘাত রয়েছে এবং প্রচুর রক্তক্ষরণও হয়েছে। বাকীদের হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছিল। এরমধ্যে আরো একজনের শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় শনিবার সকালে তাকেও খুলনায় পাঠানো হয়েছে।
প্রতিপক্ষের হামলা গুরুতর আহত রোকা মিয়ার বড় ভাই জলিল বলেন, আমার ভাইয়ের সাথে একই এলাকার সোবাহানের বিরোধ চলে আসছিল। সেই বিরোধের জেরে আমার দুই ভাই, এক ভাবী, ছেলে ও ছেলের বউকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে মারাত্মক জখম করেছে সোবাহান গংরা। আহত ৫ জনের মধ্যে তিনজনকে খুলনায় পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় তিনি শনিবার দুপুরে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে জানান। তিনি অভিযোগ করে বলেন, এলাকায় সোবাহানের বিরুদ্ধে নানা অসামাজিক কর্মকান্ডের অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া সোবাহানের ছেলে ফারুক ও জামাই খোকনের বিরুদ্ধে সুন্দরবনে দস্যুতারও অভিযোগ রয়েছে বলেও জানান তিনি। তিনি আরো বলেন, তারা এখন সুন্দরবন ছেড়ে লোকালয়ের বাড়ী ঘরে ডাকাতি করছে। ভয়ে তাদেরকে কেউ কিছু বলতে পারেনা।
এ বিষয়ে সোবাহান হাওলাদার বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমাদের মধ্যে জমি জমা সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছিল। সেই বিরোধের জেরে শুক্রবার উভয়পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়েছে, এতে দুই পক্ষের লোকজনই আহত হয়েছে বলে দাবী করেছেন তিনি। তিনিসহ তার দুই ছেলেও আহত হয়েছেন বলে জানান তিনি।
মোংলা থানার অফিসার ইনচার্জ মো: ইকবাল বাহার চৌধুরী বলেন, এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ হয়েছে। অভিযোগের তদন্ত শেষে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
-মোংলা প্রতিনিধি