কেউ যেন দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে: প্রধানমন্ত্রী

0
Spread the love

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘সুবর্ণজয়ন্তীর এই শুভক্ষণে আমাদের শপথ নিতে হবে কেউ যেন বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে। দেশের গণতান্ত্রিক এবং উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করতে না পারে। আসুন, সকল ভেদাভেদ ভুলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে আমরা বাংলাদেশকে জাতির পিতার স্বপ্নের উন্নত-সমৃদ্ধ অসাম্প্রদায়িক সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলি।’

মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে এ কথা বলেন তিনি। ভাষণটি বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেতারে সরাসরি প্রচার করা হয়।

জনগণের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা প্রমাণ করেছেন, বাংলাদেশের মানুষ অনুকূল পরিবেশ পেলে যেকোন অসম্ভবকে সম্ভব করে তুলতে পারে। আমাদের বিগত ১২ বছরের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে আর্থ-সামাজিক সূচকে বাংলাদেশ অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছে। গত মাসে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের চূড়ান্ত সুপারিশ লাভ করেছে। গড় আয়ু, লিঙ্গ সমতা, সর্বজনীন প্রাথমিক শিক্ষা, নারী শিক্ষা, নারীর রাজনৈতিক অধিকার, নারী ও শিশু মৃত্যুহার, স্যানিটেশন, খাদ্য প্রাপ্যতা- ইত্যাদি নানা সূচকে বাংলাদেশ শুধু তার প্রতিবেশি দেশগুলোর চেয়ে এগিয়ে যায়নি, অনেক ক্ষেত্রে অনেক উন্নত দেশকেও ছাড়িয়ে গেছে।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আজকের এই উত্তরণের পথ মোটেই মসৃণ ছিল না। দেশের ভিতরে-বাইরে স্বাধীনতা এবং মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তি বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করতে নানা অপতৎপরতা চালিয়েছে। সে প্রক্রিয়া এখনও অব্যাহত আছে। কাজেই আমাদের সকলকে অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে দেশবিরোধী সকল অপতৎপরতা রুখে দাঁড়াতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করছি। তবে এই উদযাপন যেন শুধু আনুষ্ঠানিকতা-সর্বস্ব না হয়। জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীকে সামনে রেখে আমাদের দেশকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার নতুন করে শপথ নিতে হবে।’

ভাষণের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২৬ মার্চ আমাদের মহান স্বাধীনতা দিবস। এবার স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি হচ্ছে। আমরা উদযাপন করছি স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। একই সঙ্গে উদযাপিত হচ্ছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি – তিনি আমাদের এই সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের তৌফিক দান করেছেন।’

দেশের অভ্যন্তরে এবং বাইরে বসবাসকারী বাংলাদেশের নাগরিকদের স্বাধীনতা দিবসের  আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি কৃতজ্ঞতাভরে স্মরণ করছি সেইসব বন্ধুরাষ্ট্র, প্রতিষ্ঠান এবং ব্যক্তিকে যারা আমাদের চরম দুঃসময়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন।’

ভাষণের শেষে শেখ হাসিনা বলেন, ”এবারের স্বাধীনতা দিবস অন্যান্য বছরের স্বাধীনতা দিবসের মতো নয়। এবার স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি হলো। এই দিন আনন্দে অবগাহনের দিন। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাষায় তাই আহ্বান জানাই: আনন্দধ্বনি জাগাও গগনে/ কে আছ জাগিয়া পূরবে চাহিয়া/ বলে ‘ওঠ ওঠ’ সঘনে গভীর নিদ্রামগনে।/হেরো তিমির রজনী যায় ওই, হাসে ঊষা নব জোতির্ময়ী-/নব আনন্দে, নব জীবনে,/ফুল্ল কুসুমে, মধুর পবনে, বিহগ কলকূজনে।”

ঢাকা অফিস