ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের দখলে মণিরামপুর হাসপাতালে

8
Spread the love

যশোরের মণিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের দৌরাত্ম্য বেড়েছে। প্রতিদিন সকাল হতে দুপুর পর্যন্ত হাসপাতালের বহিঃবিভাগ চষে বেড়াচ্ছেন তারা। করোনার পর থেকে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের হাসপাতালে প্রবেশ নিষেধ থাকলেও তারা তা মানছেন না। ডাক্তার দেখিয়ে ব্যবস্থাপত্র হাতে বেরিয়ে আসতেই তাদের কবলে পড়তে হয় রোগীদের। নিয়মিত রোগীরা কোম্পানির প্রতিনিধিদের দ্বারা হয়রানির শিকার হলেও কর্তৃপক্ষ এই ব্যাপারে রয়েছেন নিরব।

শনিবার (৬মার্চ) সরেজমিন বেলা ১১টার দিকে মণিরামপুর হাসপাতালের বহিঃবিভাগে ৫-৭জন ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের দেখা মেলে। রোগীরা ব্যবস্থাপত্র হাতে হাসপাতালের ফার্মেসির সামনে ওষুধ নিতে আসতেই তাদের ঘিরে ধরছেন কোম্পানির লোক। তারা ব্যবস্থাপত্র কেড়ে নিয়ে ছবি তুলে আবার রোগীদের হাতে দিচ্ছেন। এগিয়ে গিয়ে সাংবাদিক পরিচয়ে কথা বলতে চাইলে তাদের একজন পরিচয় না দিয়ে জানান, কোম্পানীর পক্ষ থেকে অডিট চলছে। তাই তারা হাসপাতালে এসেছেন। তাৎক্ষণাত বিষয়টি হাসপাতাল প্রধানকে জানানো হয়। পরে তিনি লোক পাঠিয়ে আর কাউকে পাননি। এরআগেও গত সপ্তাহে ওষুধ কোম্পানীর প্রতিনিধিদের হাসপাতালে একই কাজ করতে দেখা গেছে। তখনও টিএইচওকে জানানো হয়েছিল। সাংবাদিকরা বিষয়টি নজরে আনলে উপস্থিত তৎপর হন কর্তৃপক্ষ। এরপর আবার পুরনো চিত্র দেখা যায়।

হাসপাতালের একটি সূত্র বলছে, শুধু দিনে নয় রাতেও কোম্পানির লোকজন হাসপাতাল ছাড়েন না। ডাক্তারদের কক্ষে বসে থাকেন তারা। বিভিন্ন উপঢৌকনের মাধ্যমে তারা ডাক্তারদের নিজের কব্জায় আনেন। পরে রোগী আসতেই নিজের কোম্পানির ওষুধ লিখিয়ে নেন।

মণিরামপুর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. অনুপ বসু বলেন, করোনার আগ থেকেই ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের হাসপাতাল ভিজিট বন্ধ। তাদের হাসপাতালে ঢুকতে নিষেধ করা আছে। আজ (শনিবার) সকালে টিএইচও ম্যাডাম আর আমি চারজনকে তাড়িয়েছি।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডা. শুভ্রারানী দেবনাথ বলেন, আমি হাসপাতালে যোগ দেওয়ার পর ওষুধ কোম্পানির লোকদেরকে দুইভাগে বিভক্ত হয়ে সপ্তাহে রোববার ও বুধবার দুপুর একটার পর একদিন করে ডাক্তার ভিজিটের সুযোগ দিয়েছি। তারা নিজেদের মধ্যে সমঝোতায় আসতে পারেননি। এই কারণে তাদের হাসপাতাল ভিজিট একেবারেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

কোম্পানির লোকদের নানাভাবে অপমানিত করা হচ্ছে। তাদের পুলিশে দেওয়ার হুমকি পর্যন্ত দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু কাজ হচ্ছে না। ওষুধ কোম্পানির লোকজন যেন হাসপাতালে আর ঢুকতে না পারেন সেই ব্যাপারে কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, বলেন টিএইচও শুভ্রা রানী।

-মণিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি