খুলনায় প্রতিবেশীর ডাক শুনে বাইরে এসে খুন

1
Spread the love

হবিগঞ্জে নিজ ঘরে বৃদ্ধাকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা : সুনামগঞ্জে ঘরে স্বামীর লাশ রেখে পলাতক স্ত্রী : গাজীপুরে যুবক খুনের ঘটনায় গ্রেপ্তার ৬

খুলনাঞ্চল রিপোর্ট::

খুলনার তেরখাদায় প্রতিবেশীর ডাকে সাড়া দিয়ে সহায়তা করতে গিয়ে ডাকাতের হাতে খুন হয়েছেন এক যুবক। হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলায় নিজ ঘরে এক বৃদ্ধাকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে ঘরে স্বামীর লাশ রেখে পালিয়ে গেছেন দ্বিতীয় স্ত্রী। গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে শ্বশুরের ঘুষিতে মারা গেছেন ঘরজামাই। এদিকে গাজীপুরে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় ৬ জন গ্রেপ্তার হয়েছে।

খুলনা : তেরখাদায় ডাকাতের ছুরিকাঘাতে জামাল শেখ নামের এক যুবক খুন হন। শনিবার রাত ৩টার দিকে উপজেলার বারাসাত ইউনিয়নের আড়পাঙ্গাসিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। জামাল শেখ ওই এলাকার ছাত্তার শেখের ছেলে। পেশায় তিনি দর্জি।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্র জানায়, রাত ৩টার দিকে আড়পাঙ্গাসিয়া গ্রামের শিক্ষক কাজী আবদুল্লাহর বাড়িতে ১৫-১৬ জনের একদল ডাকাত হানা দেয়। এ সময় কাজী আবদুল্লাহর স্ত্রী শাহনাজ ফোন দিয়ে জামাল শেখকে ডেকে নেন। ঘটনার একপর্যায়ে ডাকাত দলের সদস্যের ছুরিকাঘাতে তিনি আহত হন। এ ঘটনায় ব্যাপক হৈচৈ শুরু হলে ডাকাত দল ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করার পর গতকাল ভোরে জামাল মারা যান। তেরখাদা থানার ওসি গোলাম মোস্তফা জানান, ডাকাত সদস্যদের আটকে অভিযান চলছে।

সুনামগঞ্জ : জগন্নাথপুরে পারিবারিক কলহের জেরে দ্বিতীয় স্ত্রীর লাঠির আঘাতে এক দিনমজুর নিহত হন। তার নাম মো. আলেক মিয়া। শুক্রবার রাতের কোনো এক সময় এ ঘটনা ঘটে। আলেক মিয়া উপজেলার পাইলগাঁও ইউনিয়নের আমিনপুর গ্রামের মৃত মাছিম উল্লাহর ছেলে। পুলিশ সূত্র জানায়, আলেক মিয়ার প্রথম স্ত্রীর ঘরে তিন মেয়ে ও দুই ছেলে রয়েছে। দ্বিতীয় স্ত্রীর কোনো সন্তান নেই। তিনি থাকতেন দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে। শুক্রবার রাতের কোনো এক সময় তিনি মারা যান। আলেক মিয়ার মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ঘটনার পর থেকে দ্বিতীয় স্ত্রী পলাতক। তার নাম-পরিচয় জানাতে পারেনি পুলিশ। পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান জানান, ধারণা করা হচ্ছে আলেক হত্যায় তার দ্বিতীয় স্ত্রীর সংশ্লিষ্টতা রয়েছে।

হবিগঞ্জ : বানিয়াচং উপজেলায় নিজ ঘরে হাতুড়ি দিয়ে এক নারীকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। শুক্রবার রাতে উপজেলার চৌধুরীপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহতের নাম জাকিরা। তিনি ওই গ্রামের মৃত আবদুল হান্নান ঠাকুরের স্ত্রী। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের ছেলে গোলাম কিবরিয়া ঠাকুর জোবায়েরকে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। জোবায়ের জানান, ঘরে তিনি ও তার মা থাকতেন। সন্ধ্যা ৭টার দিকে তিনি মাকে ঘরে রেখে কেনাকাটার জন্য গ্যানিংগঞ্জ বাজারে যান। এসে দেখেন সামনের দরজায় তালা লাগানো। মাকে ডাকাডাকি করলে ঘরের ভেতর বা বাইরে কোথাও না পেয়ে পেছনে গিয়ে দেখেন দরজা ভাঙা এবং ভেতরে মায়ের লাশ। হাতুড়ির আঘাতে মায়ের মাথা থেঁতলানো এবং হাতুড়িটাও মাথায় আটকে রয়েছে। এ অবস্থায় তিনি চিৎকার করলে লোকজন এগিয়ে আসে।

বানিয়াচং থানার ওসি মোহাম্মদ এমরান হোসেন জানান, প্রকৃত খুনিকে বের করতে পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট কাজ করছে। আশা করি খুব দ্রুত এ হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন করা সম্ভব হবে।

গাজীপুর : গাজীপুরে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে সাদেক আলী নামে এক যুবককে ছুরিকাঘাতে খুনের মামলার এজাহারভুক্ত চার আসামিসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। শুক্রবার নিহতের ছোটভাই মো. সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে চারজনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ৫ জনকে আসামি করে সদর থানায় মামলা করেন। শুক্রবার নগরীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা হলেন মামলার প্রধান আসামি পশ্চিম ভুরুলিয়া এলাকার মো. শফিকুল ইসলামের ছেলে কাওসার আহমেদ আকাশ, শহরের মধ্য ছায়াবীথি এলাকার মো. আমজাদ হোসেন মুকুলের ছেলে মো. মেহেদী হাসান বিজয়, মারিয়ালী-কলাবাগান এলাকার মো. নুরুজ্জামানের ছেলে মো. শামীম, কালীগঞ্জ উপজেলার কলাপাটুয়া এলাকার মো. রেজাউল করিমের ছেলে ইমন আহমেদ, সদর উপজেলার কুমুন এলাকার ইসমাইল হোসেনের ছেলে মোবারক হোসেন ওরফে মোবা ও মধ্য ছায়াবীথি এলাকার বাদল চন্দ্র বিশ্বাসের ছেলে নিলয় চন্দ্র বিশ্বাস।

শনিবার দুপুরে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম ও মিডিয়া) জাকির হাসান সদর থানায় এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান। তিনি আরও জানান, সাদেক আলী ঘটনার রাত ৯টার দিকে ছেলের জন্য বিস্কুট কিনতে বাসাসংলগ্ন জনৈক গোপালের দোকানে যান। সেখানে অভিযুক্ত যুবকদের সঙ্গে একটি তুচ্ছ বিষয় নিয়ে সাদেক আলীর সঙ্গে তর্কবিতর্ক হয়। পরে স্থানীয়রা তাদের সরিয়ে দিলে সাদেক বাসায় চলে যায়। পরে আসামিরা সাদেককে বাসা থেকে ফের রাস্তায় ডেকে আনে। একপর্যায়ে অভিযুক্তরা তাকে এলোপাতাড়ি মারধর ও চায়নিজ কুড়াল দিয়ে গলায় আঘাত করে। মৃত্যু নিশ্চিত করে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্তরা ঘটনার সঙ্গে সম্পৃত্ত থাকার কথা স্বীকার করেছে। এ ঘটনায় মামলার তদন্ত কাজ অব্যাহত আছে।

পলাশবাড়ী : গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে শ্বশুরের কিলঘুষিতে ঘরজামাই আনছার আলী নিহত হন। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় উপজেলার কিশোরগাড়ী ইউনিয়নের বেংগুলিয়া গ্রামে এ হত্যাকা- ঘটে। আনছার আলী রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার ষোলাগাড়ী গ্রামের আজগর আলীর ছেলে। তিনি ৬ সন্তানের জনক।

স্থানীয় সূত্র জানায়, বেংগুলিয়া গ্রামের চাঁন মিয়ার সর্দারের মেয়ে হামিদা বেগমকে বিয়ে করেন আনছার আলী। বিয়ের পর থেকে তিনি বেংগুলিয়া গ্রামে শ্বশুরবাড়িতে স্ত্রী ও ৬ সন্তান নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন। আনছার আলীর এক ছেলেকে নিয়ে নানা চাঁন মিয়া ঢাকায় কাজে যান। ঢাকা থেকে ফিরে আসার পর নাতির টাকা নিয়ে শ্বশুর-জামাইয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে চাঁন মিয়া জামাই আনছার আলীকে কিলঘুষি মারেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে গাইবান্ধা সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে।

থানা অফিসার ইনচার্জ মো. মাসুদুর রহমান মাসুদ জানান, এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী হামিদা বেগম বাবা চাঁন মিয়াকে আসামি করে থানায় মামলা করেন। আসামি গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।