৪২ নাগরিকের অভিযোগ উড়িয়ে দিলেন ইসি কবিতা খানম

3
Spread the love

ঢাকা অফিস::

নির্বাচন কমিশনের দুর্নীতির বিরুদ্ধে ৪২ জন বিশিষ্ট নাগরিকের অভিযোগে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয় গত বছরের শেষ থেকেই। এই আগুনে আবার ঘি ঢেলে দিয়েছে সম্প্রতি রাষ্ট্রপতির কাছে বিএনপি পন্থী আইনজীবীদের আবেদন। তারাও কমিশনের দুর্নীতির বিরুদ্ধে শাস্তি দাবি করেন। তবে এসব অভিযোগ এবার উড়িয়ে দিলেন কমিশনার কবিতা খানম।

এর আগে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা লিখিত এক বক্তব্যে এইসব অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করলেও কবিতা খানম বললেন, ব্যক্তি নয়, প্রতিষ্ঠানকে বিতর্কিত করতেই তারা এসব অভিযোগ তুলছেন।

বৃহস্পতিবার নির্বাচন ভবনে নিজ দপ্তরে কবিতা খানম সাংবাদিকদের বলেন, আমরা যারা এখানে আছি প্রত্যেকেই বিভিন্ন জায়গায় ৩০ থেকে ৩১ বছর চাকরি করে এসেছি। পূর্বের চাকরিতে যেভাবে স্বচ্ছ ছিলাম এখনো সেভাবেই স্বচ্ছ আছি। চাকরির শুরুদে নিশ্চয়ই কেউ জানতাম না যে কমিশনার হিসেবে যোগ দেব। আর যারা সারা জীবন স্বচ্ছ থেকেছি তারা মাত্র পাঁচ বছরের জন্য এখানে দায়িত্ব নিয়ে নিশ্চয়ই নিজেদের বিতর্কিত করব না। তাই আমি মনে করছি, আমাদের নয়, প্রতিষ্ঠানকে বিতর্কিত করতে কেউ কেউ বিভিন্ন অভিযোগ করছেন।

নির্বাচনে প্রশিক্ষণের দুর্নীতির সংশ্লিষ্টতা নিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যেহেতু রাষ্ট্রপতির কাছে অভিযোগ করেছেন তারা, এ ব্যাপারে আমার কিছু বলার নেই। প্রশিক্ষণ যখন থেকে চলছে, তখন থেকেই প্রশিক্ষণার্থীদের সম্মানী দেওয়া হচ্ছে। এখনও দেওয়া হয়। এটা কমিশন থেকে অনুমোদনপ্রাপ্ত।

নির্বাচন কমিশনের প্রশিক্ষণের ব্যয় সংক্রান্ত অডিট আপত্তির বিষয়ে কবিতা খানম বলেন, অডিট আপত্তি প্রত্যেকটা প্রতিষ্ঠানেই আসতে পারে। এটা দুর্নীতি না। আমি যে খাতে খরচ করেছি টাকাটা সঠিকভাবে খরচ করেছি কি না এজন্যই তো অডিট হয়ে থাকে।

এসময় স্থানীয় সরকার নির্বাচনে সহিংসতার কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, সহিংসতা রোধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সচেষ্ট রয়েছে। তবে আগের তুলনায় সহিংসতা অনেকটাই কম। নির্বাচনের পরিস্থিতি যাতে ব্যাহত না হয়, তার সব ধরনের পদক্ষেপ আমরা নিয়েছে। নির্বাচন কমিশন প্রত্যেকটা অভিযোগ তদন্ত করেছে। কিছু কিছু বিষয় থাকে ইসির এখতিয়ারের বাইরে সেগুলো সম্পর্কে আমরা পরামর্শ দিয়েছি। গত ৩০ জানুয়ারি পৌরসভা নির্বাচনে যে ঘটনা ঘটেছে, সে কেন্দ্রগুলোতে ভোট স্থগিত করেছি। তিনি বলেন, প্রার্থীরা যদি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়, তাহলে নির্বাচনের পরিবেশটা ভালো থাকবে বলে আমি মনে করি।

স্থানীয় সরকার নির্বাচন প্রসঙ্গে এই কমিশনার আরও বলেন, পুলিশ প্রশাসন ইসির পক্ষে মাঠ পর্যায়ে কাজ করেন। সুনির্দিষ্টভাবে কোনো অভিযোগ যদি আমাদের কাছে আসে তখন আমরা ব্যবস্থা নিতে পারব। রিটার্নিং অফিসারের কাছে যখন একটি অভিযোগ আসে তখন সে অভিযোগটি তদন্ত করেন এবং আমাদের কাছে প্রতিবেদন দাখিল করেন। ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে যে অভিযোগগুলো আমাদের কাছে আসে সেগুলো থানায় মামলার জন্য দেওয়া হয়। ভোটের মাঠে অবশ্য আমরা থাকি না। কিন্তু আপনাদের (সাংবাদিকদের) নিউজগুলো দেখি। যে ক্ষেত্রগুলোকে ব্যবস্থা নেওয়ার দরকার পরে তা সাথে সাথে নেই।

পৌরসভা নির্বাচনেই এই অবস্থা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন কীভাবে সামাল দেবেন- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শান্তিপূর্ণ অবস্থান রাখতে যা যা দরকার নির্বাচন কমিশন তা করবে।

একজন কমিশনার বলেছেন, নির্বাচনে অনিয়ম হয়েছে, এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে তার কথার বিরুদ্ধে আমি কোনো মন্তব্য করতে চাই না।