মণিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি :
যশোরের মণিরামপুরে রাস্তার সংস্কার কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।মণিরামপুর-নওয়াপাড়া সড়কের হোগলাডাঙা থেকে হাজিরহাট বাজার পর্যস্ত তিন হাজার ২০০ মিটার (৩.২কি.মি) রাস্তায় মানহীন ইটের খোয়া ব্যবহার করে রোলার দেওয়ার কাজ চলছে। প্রকাশ্যে এমন অনিয়ম হলেও অদৃশ্য কারণে স্থানীয়রা কেউ প্রতিবাদ করছেন না। আর রাস্তার কাজে অনিয়মের ব্যাপারে খবর রাখেন না উপজেলা প্রকৌশলী অফিসের দায়িত্বরত কেউ। কাজ চলাকালীন একজন উপ-সহকারী প্রকৌশলী উপস্থিত থেকে কাজ বুঝে নেওয়ার কথা থাকলেও তিনি রাস্তায় যাননা বলে অভিযোগ।
বৃহস্পতিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সরেজমিন গিয়ে সড়কের পাঁচবাড়িয়া বাজারে নিন্মমানের খোয়া দিয়ে কাজ চলতে দেখা গেছে। রাস্তার দুই ধারে মানহীন ইটের খোয়া পড়ে রয়েছে। এসময় দায়িত্বরত উপ-সহকারী প্রকৌশলী নেয়ামত হোসেনকে সেখানে পাওয়া যায়নি।
দুই কোটির অধিক টাকায় মণিরামপুর-নওয়াপাড়া সড়কের হোগলাডাঙা থেকে হাজিরহাট বাজার পর্যন্ত তিন হাজার ২০০ মিটার সড়ক সংস্কারের (পাকাকরণ) কাজ পান যশোরের শাহারুল ইসলাম নামে এক ঠিকাদার। গতবছর কাজ শেষ করার কথা থাকলেও সেটা হয়নি।
ফলে দীর্ঘদিন ভোগান্তিতে রয়েছেন সড়কে চলাচলকারী পথচারীরা। ইটের ধুলোয় নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ। চরম কষ্টে দিন কাটছে ওই রাস্তার দুই ধারে বসবাসকারীদের।
দীর্ঘদিন বিরতি দিয়ে কয়েকদিন ধরে আবার কাজ শুরু করেছেন ঠিকাদার। নতুন করে শুরু করা কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে মানহীন ইটের খোয়া। ওই খোয়া ব্যবহার করে রাস্তার রোলারের (ফিনিশিং) কাজ চলছে।
ঠিকাদারের পক্ষে কাজ দেখভাল করছেন রাজারহাট এলাকার আব্দুর জব্বার নামে একব্যক্তি। তিনি বলেন, ভাটা থেকে এরকম খোয়া আনা হয়েছে। যেমন পেয়েছি তেমন কাজ চালাচ্ছি।
পাঁচবাড়িয়া এলাকার পরিতোষ নামে একব্যক্তি বলেন, ইটের খোয়া যা দেওয়া হচ্ছে, তার উপর দিয়ে হেঁটে গেলেই গুড়ো হয়ে যাচ্ছে।
ওই এলাকার অমল নামে অপর একজন বলেন, ‘এখানে কথা বলার কেউ নেই।’
স্থানীয় হরিদাসকাঠি ইউপি চেয়ারম্যান বিপদ ভঞ্জন পাড়ে বলেন, ‘রাস্তার যে কাজ হচ্ছে তা একেবারে বাতিল। আমি কয়েকবার বলেছি কাজ হচ্ছে না।’
কাজ দেখভালের দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারী প্রকৌশলী নেয়ামত হোসেন বলেন, ‘আমি আজকে (বৃহস্পতিবার) ওই রাস্তায় যেতে পারিনি। এখনি খবর নিচ্ছি।’
পরে তিনি ঠিকাদারকে দিয়ে এই প্রতিবেদককে ফোন করিয়ে নিউজ না করতে নিষেধ করেন।
রাস্তার কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার শাহারুল ইসলাম বলেন, জলাবদ্ধতার কারণে গতবছর কাজ করাতে পারিনি। রাস্তা ফিনিশিং দেওয়ার সময় এই খোয়া ব্যবহার করতে হয়। নিউজ দিয়ে ঝামেলা না করার জন্য তিনি পরামর্শ দেন।
এই ব্যাপারে মোবাইলে কথা বলতে উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী সানাউল হককে একাধিক বার কল করলেও তিনি ফোন ধরেননি।