ডিআইজি বরাবর এলাকাবাসীর লিখিত অভিযোগ
স্টাফ রিপোর্টার:
খুলনার রূপসায় শীর্ষ সন্ত্রাসী মিনা কামাল র্যাবের ক্রসফায়ারে নিহত হওয়ার পর কয়েক মাস যেতে না যেতেই তার সহযোগীরা নতুন করে ফের বেপরোয়া হয়ে উঠেছে তার বিশাল বাহিনী। এ ঘটনায় উপজেলার বাগমারা গ্রামের ভুক্তভোগী এলাকাবাসীর পক্ষে মোঃ রবিউল ইসলাম নামে এক ভুক্তভোগী গত ৩ ফেব্রুয়ারী বুধবার খুলনা রেঞ্জ ডিআইজি বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন।
লিখিত অভিযোগ ও অনুসন্ধানী সূত্র থেকে জানায়, সন্ত্রাসী মিনা কামাল নিহত হওয়ার পর তার রয়ে গেছে বিশাল বাহিনী। বর্তমানে এই বাহিনীর নেতৃত্বে রয়েছে মোঃ কিবরিয়া। উক্ত কিবরিয়ার নাম প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে অন্তর্ভুক্ত থাকা সত্ত্বেও বিন্দু মাত্র পূর্বের কোন কর্মকা- থেমে নেই। এই কিবরিয়া ছিলো মিনা কামালের সেকেন্ড ইন কমান্ড এবং বর্তমানে মৃত মিনা কামালের অস্তিত্ব ধরে রাখতে আবারও বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকান্ড এবং এলাকার মাদক ব্যবসায়ীদের সমন্নয় করে তার অপরাধমূলক কর্মকা-সমূহ চালিয়ে যাচ্ছে। কিবরিয়ার ভাই জাকারিয়া নিজ বাড়ির আশপাশে থেকে গাজা এবং ইয়াবার ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। যা আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা অবগত রয়েছেন। জাকারিয়া বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে পুলিশের নাকের ডগার উপর দিয়ে কিবরিয়া মাদকের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে কিবরিয়া বাহিনীর প্রকাশ্যে নেতৃত্ব দিচ্ছে মোঃ গোলাম রসুল খান। গোলাম রসুল একজন পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী।
সে পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টি (এমএলএম) জনযুদ্ধের মৃত বিডিয়ার আলতাপ, রশিদ, সোয়েব ও সুমনের সহযোগী ছিলো। এই গোলাম একজন বহুরুপী অভিনেতা কৌশলী। সে বর্তমানে ক্ষমতাশীন দলের বিভিন্ন নেতাদের ছত্রছায়ায় তাদের নাম ভাঙ্গিয়ে চলছে। গোলাম রসুল খান কখনও নেতা এবং কখনও বিভিন্ন পত্রিকার সংবাদকর্মী বলে নিজের পরিচয় পেশ করেন। তাছাড়া সে একজন পর্দার আড়ালে থাকা মাদক বিক্রেতা ও প্রতারক। তার এই কর্মকা- চালানোর জন্য তার সহযোগী রয়েছেন জয়পুর এলাকার শহিদুল ইসলাম। সে এলাকায় তালা তাসলির স্বামী নামে পরিচিত। এছাড়াও রয়েছে মুরাদ সহ এলাকার সংঘবদ্ধ চক্র। এরা কোন কর্ম না করেও বহাল তবিয়তে রাজার হালে চলে বলে অভিযোগ রয়েছে। তারা রাতের আধারে বিভিন্ন এলাকা থেকে গরু চুরি করে এনেও বিক্রি করে বলে অভিযোগ আছে। গোলাম বাহিনীর অপর আর এক ব্যক্তি পূর্ব রূপসা কদমতলা এলাকার মুকিদ। সে কিছুদিন আগে জাবুসা প্রামে চুরি করতে গিয়ে গরু সহ এলাকাবাসীর কাছে আটক হয়।
পরবর্তীতে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। সে উল্লেখিত গোলামের নেতৃত্বে দিনের বেলায় ভদ্রবেশ ধারন করে এলাকার খোজ খবর নেয় এবং রাতের আধারে চুরি করায়। এই গোলামের কাছে রয়েছে বিভিন্ন আগ্নেয়াস্ত্র, যা বর্তমানে সে বিভিন্ন ছিনতাইকারী ও ডাকাত দলের কাছে ভাড়া দিয়ে থাকে। তাছাড়া তার কাছে রয়েছে দেশীয় অস্ত্র যেমন, রামদা, চাপাতি, গুপ্তি এবং চুরি। গোলাম খান পুলিশের তালিকাভুক্ত অপরাধী কথিত লিমন ওরফে এতিম মাসুমের সহযোগী হয়ে বাগমারা গ্রামের বিভিন্ন মাছ ব্যবসায়ী সহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষের কাছ থেকে চাঁদা নেয়। সে বিভিন্ন বাহিনীর সোর্স বলে নিজেকে দাবী করে এবং বিভিন্ন মানুষকে হুমকি-ধামকিও দিয়ে বেড়াচ্ছে এমন অভিযোগও রয়েছে। শুধু তাই নয়, এই গোলাম খান মাঝে মধ্যে আত্মগোপন করে আবার হঠাৎ করে এলাকায় এসে তান্ডব চালায়। অপরদিকে বাগমারা এলাকার মাদক সম্রাট মতি গাজীর বড় ভাই বাবুল গাজী এদের নামে এলাকার বাহিরে সহ এলাকায় ডাকাতি- ছিনতাই সহ চুরির মামলাও রয়েছে। কিছুদিন আগে বাবুল গাজী পূর্ব রূপসাস্থ রবের মোড়ে মাসুমের ফ্লাক্সিলোডের দোকান থেকে ২ লক্ষ টাকা সহ মালামাল চুরি করে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়।
পরে তার নামে রূপসা থানায় তার নামে অভিযোগ করা হয়। এই বাবুল গাজী কামাল বাহিনীর অন্যতম সদস্য ছিলো। এখন কিবরিয়া বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে রয়েছে। পাশাপাশি আযাহার গাজী একসময় এলাকার চিহ্নিত ডাকাত সরদার ছিলো। যার নেতৃত্বে স্বাধীনতার আগে থেকে শুরু করে স্বাধীনতার পরেও অনেক মানুষ হত্যা হয়েছে। তার মাধ্যেমে হাজারও মানুষের স্বর্ণালঙ্কার সহ মালামাল ও জমি হারিয়েছে। প্রবাদে আছে বাদর বুড়ো হলেও গাছে ওঠা ভোলেনা, এই আযাহার গাজী তার প্রমান। সে কামাল বাহিনীর সদস্য ছিলো। এখন তার দুই ভাই মতি গাজী, বাবুল গাজী ও তার ছেলে রসুল গাজীকে সাথে নিয়ে বর্তমানে কিবরিয়া বাহিনীকে প্রতিষ্ঠিত করতে বিভিন্ন অপরাধ সংঘটিত করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
রসুল গাজী বর্তমানে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সোর্স হিসেবে কাজ করে বলে সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি দেখায় এবং সোর্স এর ক্ষমতা বলে চাচাদের এবং বাবার মাদক ব্যবসা সহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ডের শেল্টার দেয়। রসুল গাজীর একটি মাত্র ফোন কলে চলে আসে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু অসাধু লোক। যার ফলে রসুল গাজীর সোর্সের ক্ষমতা যে বিদ্যমান তা প্রতিষ্ঠিত করে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওই ব্যক্তি কিবরিরা বাহিনীর কাছ থেকে মাসিক মোটা অংকের টাকা সহ ঘেরের মাছ নেয়। উক্ত এই ব্যক্তির সাথে নিবিড় বন্ধুত্বের সম্পর্ক রয়েছে এই সন্ত্রাসী বাহিনীর সাথে।
যা এলাকায় তথা বাগমারা গ্রামে ব্যাপক আলোচিত। অন্যদিকে আব্দুল্লাহ নামের আর একজন ছিলো মিনা কামালের সঙ্গী। আব্দুল্লাহও বর্তমানে কিবরিয়া বাহিনীর অন্যতম সদস্য হিসেবে কাজ করছে। এছাড়াও ওই সোর্স রসুল গাজীর রয়েছে এলাকা সহ নতুন বাজার চরের কিছু কিশোর মাদক ব্যবসায়ী চক্র। রসুল অসাধু উল্লেখিত ব্যক্তিদের ব্যবহার করে বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজের শেল্টার দাতা হিসেবে নিজেকে এলাকায় প্রতিষ্ঠিত করে ফেলেছে। তার বাস্তব সহযোগিতা করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু অসাধু ব্যক্তিরা। যে কারনে এলাকার মানুষ ভয়ে মুখ খোলে না। একদিকে রয়েছে অসাধু ক্ষমতা আর একদিকে রয়েছে মাদক কারবারি সহ সন্ত্রাসী বাহিনীর দাপট। ফলে রসুল গাজীর ক্ষমতার অপব্যবহার করে কিবরিয়া বাহিনীকে প্রতিষ্ঠিত করছে। এব্যাপারে ভুক্তভোগী এলাকাবাসী জানমালের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।
উল্লেখিত বিষয়সমূহ যাচাই এবং বিবেচনায় এনে এই কিবরিয়া, গোলাম রসুল খান, বাবুল গাজী আযাহার গাজী, রসুল গাজী, আলামিন গাজী ও মাদক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি মতি গাজীর হাত থেকে এলাকার সাধারণ মানুষকে হেফাজত করতে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। এদিকে চাঞ্চল্যকার সারজিল ইসলাম সংগ্রাম হত্যাকান্ডের প্রকৃত আসামীরা সম্প্রতী জামিনে মুক্তি পেয়ে খুলনা ও রূপসার বিভিন্ন এলাকায় নিহত মিনা কামালের সহযোগী ও মামলার আসামীরা ওপেন সিক্রেট ভাবে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে এলাকাবাসী, বাদীপক্ষরা ও মামলার স্বাক্ষিরা আতংকে রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।