বিশেষ প্রতিনিধি::
দীর্ঘদিন ধরে ভারত বাংলাদেশের কাছে ট্রানজিট সুবিধা চেয়ে আসছে এবং পেয়েছে। এখন বৃহত্তর আঞ্চলিক কানেক্টিভিটির জন্য ভারতের কাছে ট্রানজিট সুবিধা চাইছে ঢাকা।
ভুটানের সঙ্গে বাংলাদেশ অগ্রাধিকার বাণিজ্য চুক্তি করেছে এবং নেপালের সঙ্গে আগামি কয়েক মাসের মধ্যে একই চুক্তি করবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই চুক্তিগুলো পূর্ণ বাস্তবায়নের জন্য ভারতের কাছে একাধিক রুটে ট্রানজিট সুবিধা চেয়েছে বাংলাদেশ। এরমধ্যে নেপালের সঙ্গে চারটি নতুন রুট এবং ভুটানের সঙ্গে দুটি নতুন রুটের প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশ।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে নেপালে যাওয়ার জন্য পণ্য ফুলবাড়ি-বাংলাবান্ধা বন্দর দিয়ে ভারতে প্রবেশ করে এবং একটি নির্দিষ্ট রাস্তা দিয়ে নেপালের কাঁকড়াভিটা সীমান্তে যায়। আমরা আরও তিনটি রাস্তা যাতে ব্যবহার করা যায় সেটির অনুমতি চেয়েছি। এছাড়া রেলপথে পণ্য পাঠানোর জন্যও তাদেরকে অনুরোধ করেছি।’
ভুটানের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এখানে দুটি রাস্তা ব্যবহারের অনুমতি দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। এর মধ্যে চিলাহাটি-হলদিবাড়ি সীমান্ত এবং আখাউড়া-আগরতলা সীমান্ত ব্যবহার করে ভুটানে যাওয়ার পণ্য প্রেরণের জন্য রাস্তা ব্যবহারের অনুমতি চাওয়া হয়েছে।’
আরেক কর্মকর্তা বলেন, ‘এই রাস্তাগুলি তৈরি করা আছে এবং নতুন করে কিছু তৈরি করার প্রয়োজন নেই। ভারত অনুমতি দিলে এখানে উপ-আঞ্চলিক বাণিজ্য বৃদ্ধি পাবে।’
এদিকে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন তার ভারত সফর উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে রবিবার বলেন, ‘কানেক্টিভিটি বড় আকারে দেখা হলে সবার জন্য সুবিধা হবে। আমরা প্রস্তাব দিয়েছি। এখন তারা বিবেচনা করবে।’
এই অঞ্চলটি সবচেয়ে কম কানেক্টেড জানিয়ে তিনি বলেন, ‘১৯৬৫ সালের আগে অনেক কিছু ছিল কিন্তু তারপরে এটি বন্ধ হয়ে গেছে। কিন্তু অল্প চেষ্টাতেই এটি পুনরুজ্জীবিত করা সম্ভব। দুইদেশই তাদের নিজের স্বার্থের অবস্থান থেকে দেখবে এবং আমরা জানি তাদের আগ্রহের জায়গা কোনগুলি। আমাদের জায়গাগুলি আমাদের আস্তে আস্তে জানতে হবে, বুঝতে হবে এবং সে অনুযায়ী দর কষাকষি করতে হবে।’
পররাষ্ট্র সচিব আরও বলেন, ‘ভুটানের সঙ্গে একটি অগ্রাধিকার চুক্তি করেছি এবং নেপালের সঙ্গেও একই চুক্তি করতে আগ্রহী।’ এই চুক্তিগুলির পুরোপুরি সুবিধা নিতে গেলে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে হবে। আমরা তাদের স্বার্থ দেখব, তারাও আমাদের স্বার্থ দেখবে। একই সঙ্গে পুরো অঞ্চলের স্বার্থ দেখব। সেই হিসাবে আমরা আগাচ্ছি।
তিনি বলেন, আমরা বলি যে বাংলাদেশ দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে ব্রিজ এবং যদি আমরা এটি ব্যবহার করতে চাই তবে দীর্ঘমেয়াদী ভিশন মাথায় রেখে কানেক্টিভিটির স্পটগুলি নির্ধারণ করতে হবে। সেখানে স্থল, পানি, রেল, শিপিং সব রয়েছে।
মাতারবাড়িতে গভীর সুমদ্র বন্দর শিগগির পাবো বলে এবং সেটিকে পূর্ণ ব্যবহার করতে হলে ব্যাপক প্রস্তুতির বিষয় রয়েছে। শুধু বাংলাদেশের কথা বিবেচনা করলে অনেক কিছুই অব্যবহৃত থেকে যাবে। আমাদের একটি বড় লক্ষ্য থাকা দরকার।-বাংলা ট্রিবিউন