করোনাভাইরাস নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেয়া তথ্য-উপাত্ত সঠিক ধরলে নিশ্চিত করেই বলা যায় বাংলাদেশে করোনার সংক্রমণ যেমন কমেছে; তেমনি কমেছে মৃত্যুর হারও। উল্টো দিকে অনেকগুণ বেড়েছে সুস্থতার হার। রোববার শেষ ২৪ ঘণ্টায় এই ভাইরাসে দেশে আরও ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। নতুন আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে ৩৬৯ জন। শতাংশের হিসাবে এই হার ৩.০২%। পাশাপাশি এই সময়ে সুস্থ হয়েছেন ৪৪৭ জন। মানে আক্রান্তের চেয়ে সুস্থতার হার বেশি।
এসব পরিসংখ্যান হিসাব করে সিদ্ধান্তে আসাই যায়- বাংলাদেশে করোনার উপদ্রব কমেছে। তবে বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসের যে পরিস্থিতির কথা আমরা জানতে পারছি; তা কিন্তু ভিন্ন কথা বলছে। অনেক দেশেই নতুন করে বাড়ছে এর প্রকোপ। কোনো কোনো দেশে আবার ভ্যাকসিন দেওয়ার পরও পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না। যার অন্যতম উদাহরণ যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য।
সর্বশেষ হিসাবে রোববার সকাল পর্যন্ত বিশ্বে করোনাভাইরাসে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১০ কোটি ৩১ লাখের বেশি। মৃত্যু ছাড়িয়েছে ২২ লাখ ২৯ হাজার আর সুস্থতার সংখ্যা প্রায় ৭ কোটি ৪৭ লাখ। এই পরিসংখ্যানই প্রমাণ করে ভ্যাকসিন আসার পর করোনা নিয়ন্ত্রণে যে প্রত্যাশা মানুষের মধ্যে জন্ম নিয়েছিল; তা ব্যর্থ হয়েছে। মানুষকে দুঃশ্চিন্তায় ফেলেছে সাউথ আফ্রিকায় পাওয়া করোনাভাইরাসের নতুন ধরন।
এমন পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা আবার দাবি করছেন, করোনাভাইরাস তার বৈশিষ্ট্য পরির্বতন (মিউটেশন) করে আরো বেশি সংক্রামক এবং ভ্যাকসিনকে ফাঁকি দিতে সক্ষম হয়েছে। তাই এই মহামারী থেকে মুক্তির পথ বেশ লম্বা হবে। তাদের ধারণা, ২০২১ সালেও গত বছরের মতোই দাপট দেখাবে করোনাভাইরাস।
তার মানে এরই মধ্যে করোনাভাইরাস ভ্যাকসিন ফাঁকি দেওয়ার মতো শক্তি অর্জন করে ফেলেছে। আর যেভাবে এই ভাইরাস তার বৈশিষ্ট্য পরিবর্তন করছে, তাতে উদ্ভাবিত ভ্যাকসিন শেষ পর্যন্ত কাজ করবে না বলেই মনে করছেন তারা। তাই নতুন ভ্যাকসিন উদ্ভাবনে মনোযোগী হতে পরামর্শ দিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
এখন তাহলে কী হবে? মানব জাতি কী হেরে যাবে করোনার কাছে? নতুন নতুন চরিত্রে আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবে সারাবিশ্বকে থমকে দেওয়া ভাইরাসটি? আমরা মনে করি, পরিস্থিতি আসলে বেশ জটিল। শুধু ভ্যাকসিন দিয়েই এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব হবে না। স্বাস্থ্যবিধি এবং সামাজিক দূরত্বে মানার ক্ষেত্রে আরও কঠোর অবস্থান নিতে হবে।