গবেষণায় জালিয়াতি : সামিয়া রহমানসহ ঢাবির তিন শিক্ষকের পদাবনতি

1
Spread the love

ঢাকা অফিস

গবেষণা জালিয়াতির দায়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) তিন শিক্ষকের পদাবনতি হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাবির মাসিক সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিন্ডিকেট সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. হাসানুজ্জামান। তিনি বলেছেন, ‘ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ওমর ফারুকের বিরুদ্ধে থিসিসে জালিয়াতি করায় তার পিএইচডি ডিগ্রি বাতিল করা হয়েছে। এ ছাড়া তাকে লেকচারার পদে অবনমন করা হয়েছে। আর সামিয়া রহমানকে সহযোগী অধ্যাপক থেকে সহকারী অধ্যাপক পদে অবনমন করা হয়েছে। এ ছাড়া মারজানকে আগামী দুই বছর পদোন্নতি থেকে বিরত রাখা হয়েছে।’

পদাবনতি হওয়া তিন শিক্ষক হলেন-গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সামিয়া রহমান, অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক সৈয়দ মাহফুজুল হক মারজান, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ওমর ফারুক। পদাবনতি হওয়া শিক্ষকদের মধ্যে সামিয়া রহমানকে সহযোগী অধ্যাপক থেকে সহকারী অধ্যাপক পদে পদাবনতি করা হয়েছে। সৈয়দ মাহফুজুল হক মারজান শিক্ষা ছুটিতে রয়েছেন। ছুটি শেষে তিনি চাকরিতে যোগদান করার পর আরও দুই বছর তিনি প্রভাষক পদে থাকবেন। সহকারী অধ্যাপক ওমর ফারুকের পিএইচডি ডিগ্রি বাতিলসহ তাকে প্রভাষক পদে অবনমন করা হয়েছে।

২০১৬ সালের ডিসেম্বরে সামিয়া রহমান ও মাহফুজুল হক মারজানের যৌথভাবে লেখা ‘এ নিউ ডাইমেনশন অব কলোনিয়ালিজম অ্যান্ড পপ কালচার : এ কেস স্ট্যাডি অব দ্য কালচারাল ইমপেরিয়ালিজম’ নামক আট পৃষ্ঠার একটি গবেষণা প্রবন্ধ বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সোশ্যাল সায়েন্স রিভিউ’ নামের একটি জার্নালে প্রকাশিত হয়।

তবে তা ১৯৮২ সালের শিকাগো ইউনিভার্সিটির জার্নাল ‘ক্রিটিক্যাল ইনকোয়ারি’তে প্রকাশিত ফরাসি দার্শনিক মিশেল ফুকোর ‘দ্য সাবজেক্ট অ্যান্ড পাওয়ার’ নামের একটি নিবন্ধ থেকে প্রায় পাঁচ পৃষ্ঠা হুবহু নকল বলে অভিযোগ ওঠে।

২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে এক লিখিত অভিযোগে মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে এই চুরির কথা জানিয়েছিল ইউনিভার্সিটি অব শিকাগো প্রেস। শুধু মিশেল ফুকোই নন, বুদ্ধিজীবী এডওয়ার্ড সাঈদের ‘কালচার অ্যান্ড ইমপেরিয়ালিজম’ গ্রন্থের পাতার পর পাতাও সামিয়া ও মারজান হুবহু নকল করেন বলে অভিযোগ ওঠে।

এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৭ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক নাসরিন আহমেদকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট। দীর্ঘদিন তদন্ত শেষে গত বছর ওই কমিটি প্রতিবেদন জমা দেয়। প্রতিবেদনে অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ার কথা বলা হলে তাদের বিরুদ্ধে কোনো শাস্তির সুপারিশ করা হয়নি।

পরে বিষয়টি নিয়ে আইনি সুপারিশ করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এ এফ এম মেজবাহউদ্দিনকে দায়িত্ব দেয় বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট। প্রায় তিন বছর পর বুধবার সিন্ডিকেটের সভায় তদন্ত কমিটির রিপোর্ট উত্থাপন করা হয়।