যশোর অফিস
আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি যশোর পৌরসভা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। মেয়র প্রার্থী হতে চান প্রধান রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির ১০ পরিচিত মুখ। এর মধ্যে আওয়ামীলীগের ৬ জন ও বিএনপির ৪ জর নির্বাচন করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। ইতোমধ্যে তারা প্রচারণাও শুরু করেছেন। আবার অনেকে দলীয় মনোনয়ন পেতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। বর্তমান মেয়র জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম চাকলাদার রেন্টুর স্থলে প্রার্থী হতে চান জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তফা ফরিদ আহম্মেদ চৌধুরী, জেলা যুব মহিলালীগের সভাপতি মঞ্জুন্নাহার নাজনীন সোনালী, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক শিল্প ও বাণিজ্যিক বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ূন কবীর কবু, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আসাদুজামান মিঠু, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হায়দার গণি খান পলাশ।
অপরদিকে, বিএনপি থেকে প্রার্থী হতে চান সাবেক পৌরমেয়র ও নগর বিএনপির সভাপতি মারুফুল ইসলাম, নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মুনির আহমেদ সিদ্দিকী বাচ্চু, জেলা বিএনপির সাবেক প্রচার সম্পাদক অ্যাড, আনিছুর রহমান মুকুল ও জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য রফিকুল ইসলাম চৌধুরী।
বর্তমান মেয়র জহিরুল ইসলাম চাকালাদার রেন্টু বলেন, দল যে আশা নিয়ে আমাকে নৌকা প্রতিক দিয়েছিল, তা আমি সফলভাবে পূরণ করতে সক্ষম হয়েছি। গত ৫ বছরের যশোর পৌরসভায় অভাবনীয় উন্নয়নমূলক কর্মযজ্ঞ চালানো হয়েছে। এখনও অনেক উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে। পরীক্ষিত নেতা হিসেবে দলীয় নেত্রী যদি আবারো আমার হাতে নৌকা তুলে দেন, তাহলে যশোর পৌরসভাকে সারাদেশের মধ্যে মডেল হিসেবে গড়ে তুলবো। সেইসাথে শতভাগ নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করা হবে।
এদিকে, সাবেক পৌরমেয়র মারুফুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত যশোর পৌরসভায় উন্নয়ন কাজ শুরু হয় আমি দায়িত্বে থাকাকালে। আমার শুরু করা কাজই চলমান রয়েছে। যার ক্রেডিট নিচ্ছেন বর্তমান মেয়র। এখনও নানাভাবে অবহেলিত পৌরসভার সাধারণ মানুষ। তারা তাদের সুখ-দুঃখের কথা মেয়রকে বলার সুযোগ পান না। অথচ, তাদের সুবিধা-অসুবিধাগুলো দেখভাল করাই পৌরপিতার কাজ। আমি নির্বাচিত হলে জনমানুষের প্রত্যাশা পূরণে কাজ করবো। একইসাথে উন্নয়ন কর্মকান্ড পরিচালনার পাশাপাশি যশোর পৌরসভাকে নাগরিকদের জন্য আস্থার প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলবো।
এদিকে, মেয়র প্রার্থী গতে ইচ্ছুক মোস্তফা ফরিদ আহম্মেদ চৌধুরী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে দলের নিবেদিত কর্মী হিসেবে কাজ করে যাচ্ছি। একজন পরীক্ষিত নেতা হিসেবে দলের কাছ থেকে আমি কিছুই পাইনি। আমি মনে করি দলের হাইকমান্ড বিবেচনা করে আমার হাতে নৌকা তুলে দিলে সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ডের সাথে যশোরবাসীকে সম্পৃক্ত করতে পারবো। সেইসাথে জনমনে এ সরকারের জন্য আস্থা তৈরি করতে সক্ষম হবো। এছাড়া পৌরবাসীর সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে শতভাগ নাগরিক সুবিধা নিশ্চিতে কাজ করবো।
যশোর পৌরসভার ইতিহাসে এবারই প্রথম কোনো নারী মেয়র প্রার্থী হিসেবে নিজেকে প্রকাশ করেছেন জেলা যুবমহিলা লীগের সভাপতি মঞ্জুন্নাহার নাজনীন সোনালী। তিনি বলেন, ব্রিটিশ ভারতের দ্বিতীয় ও বাংলাদেশের প্রথম পৌরসভা যশোর পৌরসভা। এই পৌরসভায় কখনো নারীরা নেতৃত্ব দেয়নি। বর্তমান সরকার ও আওয়ামী লীগের দলীয় প্রধান নারীর ক্ষমতায়নে বিশ্বাসী। দলের একজন পরীক্ষিত কর্মী হিসেবে দলীয় প্রধান আমাকে মনোনয়ন দেবেন- এমনটা প্রত্যাশা করি। দলীয় মনোনয়ন পেলে ও নির্বাচিত হলে আমি যশোর পৌরসভার উন্নয়নে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চাই।
জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি আসাদুজামান মিঠু বলেন, আমি দলের একজন পরীক্ষিত কর্মী। তাছাড়া, সামাজিক কাজকর্ম ও দেশের যুবসমাজকে মাদকসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকান্ড থেকে বিরত রাখতে ক্রীড়া ক্ষেত্রে কাজ করছি। সবকিছু বিবেচনায় রেখে দল আমাকে মনোনয়ন দেবে বলে প্রত্যাশা করছি। দলীয় মনোনয়ন পেলে ও নির্বাচিত হলে যশোরের উন্নয়নে কাজ করতে চাই।
হুমায়ূন কবীর কবু বলেন, আমি রাজনীতির ঊর্ধ্বে থেকে মানুষের জন্য কাজ করি। সাধারণ মানুষের জন্য কিছু করতে পারলে আমি তৃপ্ত হই। আমার প্রতিষ্ঠান কুইন্স হসপিটালে অসহায় মানুষের চিকিৎসা করাতে টাকার চিন্তা করি না। সমাজের একজন ছোটখাট সেবক ও দলের পরীক্ষিত একজন কর্মী হিসাবে আমাকেই মনোনয়ন দেওয়া উচিত। অবশ্যই দলের হাইকমান্ড সবকিছু বিবেচনায় রেখে আমাকেই মনোনয়ন দেবেন। নৌকার মাঝি হিসেবে সর্বদা মানুষের সেবা করে যেতে চাই।
নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মুনির আহম্মেদ সিদ্দিকী বাচ্চু, বিএনপি নেতা আনিছুর রহমান মুকুল ও রফিকুল ইসলাম চৌধুরী ওরফে মুল্লূক চানের বক্তব্য প্রায় একই। তারা বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে কী নির্বাচন হবে সেটা সবার জানা। যদি নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি হয় এবং দল মনোনয়ন দেয় তাহলে নির্বাচন করতে আগ্রহী। মেয়র হিসাবে প্রথম কাজটি হবে নাগরিক সুবিধাগুলোর বাস্তবায়ন।