সহিংসতা-বর্জনেই ভোট

18
Spread the love



সিরাজগঞ্জে বিজয়ী কাউন্সিলর খুন, বিভিন্ন স্থানে বিএনপির ভোট বর্জন


খুলনাঞ্চল রিপোর্ট


দ্বিতীয় ধাপে দেশের ৬০টি পৌরসভায় শনিবার ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিচ্ছিন্ন কিছু সহিংসতার ঘটনা ছাড়া বেশিরভাগ পৌরসভায় শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণের খবর পাওয়া গেছে। সিরাজগঞ্জে খুন হয়েছেন নবনির্বাচিত কাউন্সিলর মো. তরিকুল ইসলাম খান (৪৫)। কয়েকটি কেন্দ্রে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে হাতাহাতি, মারামারি ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। কিছু এলাকায় গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটেছে। তা ছাড়া কেন্দ্র দখল, ভোটারদের বাধা, এজেন্টদের বের করে দেওয়া, হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগে দেশের পাঁচটি পৌরসভায় ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপি মেয়র প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। এই পাঁচটি পৌরসভা হলোÑ বাগেরহাটের মোংলা পোর্ট পৌরসভা, কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর পৌরসভা, রাজশাহীর বাগমারার ভবানীগঞ্জ পৌরসভা, পাবনার ঈশ^রদী পৌরসভা ও মেহেরপুরের গাংনী পৌরসভা। আবার ফেনীর দাগনভূঞা পৌরসভার একটি কেন্দ্রে ককটেল বিস্ফোরণে আনসার ও পুলিশ সদস্যসহ চারজন আহত হয়। বাগেরহাটের মোংলায় দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে ১০ জন আহত হয়েছে। ঝিনাইদহের শৈলকুপায় সংঘর্ষে দুজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সেখানে এক মেয়র প্রার্থীর গাড়ি ভাঙচুরসহ আরও কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনার খবর জানা গেছে। সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়। অনেক কেন্দ্রে ভোটারদের লম্বা লাইন দেখা গেছে। বেলা ১১টার পর কোথাও কোথাও বিএনপির এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া, মারধর, বিএনপির চিহ্নিত ভোটারদের কেন্দ্রে ঢুকতে না দেওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগ আসতে থাকে। দ্বিতীয় ধাপের ৬০টির মধ্যে ২৮টি পৌরসভায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ করা হয়। বাকি ৩২টিতে ব্যালট পেপারের মাধ্যমে ভোট হয়। ৬০ পৌরসভায় মেয়র প্রার্থী ২২১, সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর ৭৪৫ এবং সাধারণ আসনের কাউন্সিলর পদে ২ হাজার ৩২০ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এসব পৌরসভায় মোট ভোটার ২২ লাখ ৪০ হাজার ২২৬ জন। তাদের মধ্যে পুরুষ ১১ লাখ ৮ হাজার ৪৩১ এবং নারী ১১ লাখ ৩১ হাজার ৮৩১ জন। ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ১ হাজার ৮০টি এবং ভোটকক্ষ ৬ হাজার ৫০৮টি।
সিরাজগঞ্জ : সিরাজগঞ্জ পৌর নির্বাচনে ৬নং ওয়ার্ডের বিজয়ী বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর মো. তরিকুল ইসলাম খানকে (৪৫) হত্যা করেছে প্রতিপক্ষরা। শনিবার রাত ৮টার দিকে শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। তারিকুল ইসলাম শহরের নতুন ভাঙাবাড়ী মহল্লার আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে। তিনি পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের সাধারণ কাউন্সিলর পদে ডালিম প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ৮৫ ভোটে জয়লাভ করেছেন।
জানা যায়, ৬নং ওয়ার্ডের ৩টি কেন্দ্রে ভোট ঘোষণায় ৬ জন প্রার্থীর মধ্যে মো. তারিকুল ইসলাম খানকে বিজয়ী ঘোষণা করেন প্রিসাইডিং কর্মকর্তারা। বিজয়ী ঘোষণা করায় প্রতিপক্ষরা পেটে ছুরিকাঘাত করে। ছুটিকাঘাতে গুরুতর অবস্থায় আভিসিনা হসপিটালে কর্তব্যরত ডাক্তাররা মৃত ঘোষণা করেন। ৬নং ওয়াডেং তরিকুল ইসলাম খান, শাহাদৎ হোসেন, শাহাদৎ হোসেন বুদ্দিন, রাশেদুল ইসলাম ফসি, তারেক, সাইফুল ইসলাম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। সিরাজগঞ্জ সদর থানার ওসি বাহাউদ্দিন ফারুকী তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। জেলার সদর, বেলকুচি, রায়গঞ্জ, উল্লাপাড়া ও কাজীপুর পৌরসভার অধিকাংশ কেন্দ্রে বিএনপির কোনো এজেন্টকে দেখা যায়নি। নৌকা প্রতীকের এজেন্টরা ভোটারদের মেয়র পদের ব্যালট পেপারে প্রকাশ্যে সিল মারতে বাধ্য করছে। রায়গঞ্জ পৌরসভায় এই চিত্র দেখা গেছে। বিএনপি মনোনীত প্রার্থী সাইদুর রহমান বাচ্চু ভোট কারচুপি, পোলিং এজেন্টদের বের করে দেওয়া, জোর করে সিল মারার প্রতিবাদে বিকাল ৪টায় সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ভোট বর্জন করেন।

ফরিদপুর : জেলার বোয়ালমারী পৌরসভা নির্বাচনে কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। ৯নং ওয়ার্ডের দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকের মধ্যে সংঘর্ষে কুশাডাঙ্গা গ্রামের ১০-১২টি বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে দুজন। আহত উত্তম কুমার দাসকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও হাসান শেখকে বোয়ালমারী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
কুমিল্লা : জেলার চান্দিনা পৌরসভার নির্বাচনে দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে চারজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে একজনকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শনিবার ভোট শুরুর পর পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের হারং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের পাশে এ সংঘর্ষ হয়। স্থানীয় সূত্র জানায়, ভোটারদের কেন্দ্রে যাওয়াকে কেন্দ্র করে ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী পাঞ্জাবি প্রতীকের বিল্লাল হোসেনের সমর্থকদের সঙ্গে উটপাখি প্রতীকের কাউন্সিলর প্রার্থী নাজমুল হাসানের সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়।
ফেনী : দাগনভূঞা পৌরসভায় বিচ্ছিন ঘটনার মধ্য দিয়ে ইভিএমে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের গনিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গোলাম জিলানী রিঙ্কু (ডালি), সালাহউদ্দিন রুবেল (উটপাখি), কামরুল ইসলাম ক্লাইভ (টেবিল ল্যাম্প) ও জিয়াউল হক (পাঞ্জাবি) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। এ সময় ককটেল বিস্ফোরণে আনসার সদস্য ওমর ফারুক ও পুলিশ সদস্য আরিফ হোসেন আহত হয়। খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ ও র‌্যাব গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ছাড়া উদরাজপুর কেন্দ্রে টেবিল ল্যাম্প প্রতীকের পোলিং এজেন্টকে বের করে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
মৌলভীবাজার : জেলার কুলাউড়া পৌরসভা নির্বাচনে একটি কেন্দ্রে ত্রিমুখী ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এজন্য প্রায় ঘণ্টাখানেক ভোট বন্ধ থাকে। বাকি সময় শান্তিপূর্ণভাবেই ভোট গৃহীত হয়েছে। জেলায় এবার ভোটকেন্দ্র পুরুষের চেয়ে নারী ভোটারের উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়। কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার মহিউদ্দিন আহমদ ভূঁইয়া জানান, ঘণ্টাখানেক ভোট বন্ধ থাকলেও ফের ভোটগ্রহণ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মল্লিকা দে জানান, উত্তেজনাকর মুহূর্তে কেউ অবৈধভাবে ভোট দিয়ে থাকলে সেগুলো বাতিল করা হবে।
বাগেরহাট : মোংলা পোর্ট পৌরসভা নির্বাচনের ৫নং ওয়ার্ডের বন্দর বহুমুখী কওমি মাদ্রাসা কেন্দ্র থেকে ভোটারদের বের করে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত উটপাখি প্রতীকের লোকজন পানির বোতল প্রতীকের ভোটারদের কেন্দ্রে ঢুকতে না দিয়ে তাদের বের করে দেওয়ার অভিযোগ করেন প্রতিপক্ষ প্রার্থী মাছুম বিল্লাহ। মোংলা উপজেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নয়ন কুমার রাজবংশী জানান, একটু সমস্যা হয়েছিল, ওখানে নিয়োজিত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের চেষ্টায় বিষয়টি সমাধান করা হয়েছে। এদিকে ভোট শুরুর আড়াই ঘণ্টা যেতে না যেতেই বিএনপি সমর্থিত মেয়রসহ কাউন্সিলররা ভোট বর্জন করেন। কেন্দ্র দখল, এজেন্টদের বের করে দেওয়াসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ এনে বিএনপির মেয়রপ্রার্থী জুলফিকার আলীসহ ১২ কাউন্সিলর ভোট বর্জন করেন।
রাজশাহী : ভোট শুরুর ২ ঘণ্টা পর প্রশাসনের সহযোগিতায় ভোট ডাকাতির অভিযোগ তুলে বাগমারার ভবানীগঞ্জ পৌরসভার বিএনপির প্রার্থী আব্দুর রাজ্জাক ভোট বর্জন করেন। তিনি বলেন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনের সহযোগিতায় নয়টি কেন্দ্রের মধ্যে ছয়টি কেন্দ্রে তার কোনো এজেন্টকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। আব্দুর রাজ্জাক প্রামাণিক অভিযোগ করেন, কোনো কেন্দ্রে বিএনপি প্রার্থীর এজেন্ট নেই। সবাইকে বের করে দেওয়া হয়েছে। আর তিনি যখন ভোট দিতে যান, তখন কেন্দ্রে তাকে লাঞ্ছিতও করা হয়েছে। এর প্রতিবাদে তিনি ভোট বর্জন করছেন। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র আব্দুল মালেক ম-ল জানান, এখন বেলা ১১টা। ভোট যা হওয়ার হয়ে গেছে। এখন ভোট বর্জন করে লাভ আছে?
কিশোরগঞ্জ : ভৈরবের কুলিয়ারচরে পৌর নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী ভোট বর্জন করেছেন। এজেন্টকে কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়াসহ প্রার্থী অপমানের অভিযোগ এনে নির্বাচন বর্জন করেন বিএনপির প্রার্থী নূরুল মিল্লাত। শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় কুলিয়ারচর পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ড বেতিয়ারকান্দি কেন্দ্রীয় বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক ও কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি শরিফুল আলমের গ্রামের বাড়িতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন তিনি।
মেহেরপুর : গাংনী পৌর নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ করেছেন বিএনপি, স্বতন্ত্র ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী ও সমর্থকরা। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সরকার দলীয় প্রার্থী ও তার সমর্থকরা। এদিকে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল ইসলামসহ আরও ৩ প্রার্থী নির্বাচন বর্জন করেছেন। তবে জেলা রিটার্নিং অফিসার আহমেদ আলী জানান, কোনো অনিয়ম পরিলক্ষিত হয়নি। একটি কেন্দ্রে অনিয়মের অভিযোগ পেয়ে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
ঝিনাইদহ : জেলার শৈলকুপা পৌরসভায় একটি কেন্দ্রে দুই মেয়র পদপ্রার্থী সমর্থকদের মধ্যে মারামারি ও অন্য কেন্দ্রে মেয়র পদপ্রার্থীর গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার দুপুরে ঝাউদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী মেয়র পদপ্রার্থী তৈয়বুর রহমান খান কেন্দ্রের বাইরে গাড়ি রেখে ভেতরে যান। এ সময় পেছন থেকে কয়েকজন তার গাড়িটি ভাঙচুর করে চলে যায়। পরে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা এসে পরিস্থিতি শান্ত করে। এ ছাড়া বেলা পৌনে ১১টার দিকে পৌরসভা এলাকার খালকুলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের বাইরে আওয়ামী লীগ ও বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে মারামারি হয়। এতে আলাউদ্দিনসহ (৪৫) দুজন আহত হয়েছেন। তাকে শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ছাড়া শৈলকুপা পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের বাইরে ভোটারদের নানাভাবে ভয় দেখিয়ে ফেরত পাঠানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
কিশোরগঞ্জ : কিশোরগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে ওয়ালী নেওয়াজ খান কলেজ কেন্দ্রে সহিংস ঘটনার কারণে ওই কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। শনিবার বিকালে রিটার্নিং অফিসার মোহাম্মদ আশ্রাফুল আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। জানা গেছে, শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এ কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের কয়েকজন আহত হয়। একপর্যায়ে ব্যালট পেপার ছিনতাইয়ের ঘটনাও ঘটে। এর পরিপ্রেক্ষিতে এ কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়।
পাবনা : ভোট কারচুপি ও কেন্দ্র দখলের অভিযোগ এনে ঈশ^রদী পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী রফিকুল ইসলাম নয়ন ভোট বর্জন করেছেন। শনিবার ভোট চলাকালে দুপুর ১টায় শহরের পূর্বটেংরি নিজ বাসভবনে তিনি নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন। এ সময় নয়ন অভিযোগ করেন, ভোট শুরুর সঙ্গে সঙ্গেই প্রতিটি কেন্দ্রে দখল করে আওয়ামী লীগ সমর্থকরা। তারা ভোটারদের প্রকাশ্যে ভোট দেওয়াতে বাধ্য করে। সাধারণ ভোটারদের বাধা দেয়। এ ছাড়া প্রতিটি কেন্দ্রে আমাদের এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েও তিনি পাননি বলে দাবি করেন।
গাইবান্ধা : সদর উপজেলার পৌর নির্বাচনে ৯নং ওয়ার্ডের পূর্বকোমরনই কেন্দ্রে ব্যালট পেপারসহ নির্বাচনি সরঞ্জামাদি আটকে দিয়েছে এলাকাবাসী। পরে পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবির সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে তারা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাবার বুলেট নিক্ষেপ করা হয়। এ সময় একটি সরকারি গাড়িতে আগুন ও তিনটি বেসরকারি গাড়িতে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে সংঘর্ষ শুরু হয়।
বগুড়া : জেলার শেরপুর পৌরসভা নির্বাচনে জাল ভোট দিতে গিয়ে আবু সাঈদ সরকার (৪০) নামে এক ব্যক্তি আটক হয়েছে। শনিবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে শহরের ডিজে হাইস্কুল ভোটকেন্দ্র থেকে তাকে আটক করা হয়। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে জাল ভোট দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগে তাকে সাতদিনের বিনাশ্রম কারাদ- দেওয়া হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও নন্দীগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আক্তার এই সাজা দেন। দ-াদেশ পাওয়া ওই ব্যক্তি উপজেলার গাড়ীদহ ইউনিয়নের বাংড়া গ্রামের মৃত মোকছেদ আলীর ছেলে।
হবিগঞ্জ : নবীগঞ্জ পৌর নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনায় ১০ জন আহত হয়েছে। নবীগঞ্জের গয়াহরি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাছে শুক্রবার রাত ২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে সফিক মিয়া (২২) নামে এক বিএনপি কর্মীকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তিনি চরগাঁও গ্রামের বাসিন্দা। এ ছাড়া একই গ্রামের মিজান মিয়া (৩৫), নাহিদ মিয়া ও সুজাপুর গ্রামের ছাত্রলীগ নেতা জাহেদ রুবেলসহ আহতদের নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।