মণিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি ॥
যশোরের মণিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা (টিএইচও) ডা. শুভ্রারানী দেবনাথকে মারপিটের ঘটনা ঘটেছে। রোববার সকাল পৌনে ১০ টার দিকে হাসপাতাল চত্বরে ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ অভিযুক্ত উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার (সেকমো) আবু তৌহিদকে গ্রেফতার করেছে। এই ঘটনায় শুভ্রারানী দেবনাথ বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন। তবে হামলার কারণ জানা যায়নি।
আবু তৌহিদ উপজেলার নোয়ালী পারখাজুরা গ্রামের লুৎফর রহমানের ছেলে। সে রাজগঞ্জ উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কর্মরত।
এদিকে খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক মণিরামপুর হাসপাতালে আসেন যশোরের সিভিল সার্জন ডা.শেখ আবু শাহীন।
শুভ্রারানী বলেন, সকালে হাসপাতালের প্রধান ফটকে দাঁড়িয়ে কয়েকজন চিকিৎসকের সাথে আমি ফুল বাগানের কাজ দেখছিলাম। এসময় মোটরসাইকেল হাকিয়ে সেখানে আসেন আবু তৌহিদ। আমি জানতে চাই, উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র ছেড়ে কেন সে এখানে এসেছে। কোন উত্তর না দিয়ে সে হাতে থাকা একটি তালা আমার দিকে ছুড়ে দেয়। এরপর গালিগালাজ করে সে আমার মুখে ও মাথায় কয়েকটি চড়থাপ্পড় মারে। তখন সাথে থাকা চিকিৎসকরা ও আমার গাড়ি চালক আবু মুসা তাকে থামানোর চেষ্টা করেন।
শুভ্রারানী দেবনাথের গাড়ি চালক আবু মুসা বলেন, মোটরসাইকেলের উপর বসে থেকে ম্যাডামকে মারপিট করে তৌহিদ। ওইসময় আমি তাকে ঝাঁপটে ধরে ম্যাডামকে রক্ষা করি।
এদিকে প্রধানের উপর হামলার ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে অভিযুক্ত সেমকো তৌহিদকে মারপিট করে একটি কক্ষে আটকে রাখেন হাসপাতালের অন্যরা। পরে পুলিশ সেখানে হাজির হয়ে তাকে উদ্ধার করে।
হাসপাতালের একাধিক স্টাফ জানান, গত শনিবার (২ জানুয়ারি) একবার হাসপাতালে আসেন তৌহিদ। এরপর ম্যাডামের সাথে তার বাকবিত-া হয়। তখন সিভিল সার্জনও হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন।
তারা জানান, রাজগঞ্জ কেন্দ্রে যে কক্ষে তৌহিদ বসেন সকালে সেই কক্ষটি তালাবন্ধ পেয়ে হাসপাতালে আসেন তিনি। আসার পথে চ-িপুর কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ দেখতে পান তৌহিদ। সেন্টার বন্ধ থাকলেও তালা খোলা দেখতে পেয়ে তিনি সেই তালা সাথে নিয়ে আসেন। এরপর ম্যাডামের কাছে ক্লিনিক বন্ধ থাকার কারণ জানতে চান।
শুভ্রারানী দেবনাথ বলেন, রাজাগঞ্জ উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে দায়িত্বরত চিকিৎসক সুমনগুপ্ত অসুস্থ হয়ে খুলনায় চিকিৎসা নিচ্ছেন। সেই কারণে সেকমো তৌহিদের সেখানে ডিউটি করার কথা।
অভিযুক্ত আবু তৌহিদ বলেন, হাসপাতালে ঢোকার পর কি হয়েছে আমি বলতে পারব না। আমি ম্যাডামকে মারিনি। হাসপাতালের সবাই আমাকে খুব মেরেছেন।
মণিরামপুর থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, সরকারি কাজে বাধা দেওয়া ও হাসপাতালের প্রধানের উপর হামলার ঘটনায় টিএইচও শুভ্রারানী বাদি হয়ে থানায় মামলা করেছেন। হামলাকারী থানা হেফাজতে রয়েছে।
যশোরের সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন বলেন, খবর শুনে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। অভিযুক্ত আবু তৌহিদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।