ঐতিহাসিক মুজিবনগরের ভাস্কর্য রক্ষায় বসছে সিসি ক্যামেরা

76
Spread the love

মেহেরপুর প্রতিনিধি

মুজিবনগর কমপ্লেক্সে ভাস্কর্যের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের সময় মেহেরপুরের স্থানীয় ১২ আনসার সদস্য কর্তৃক প্রথম সরকার প্রধান সৈয়দ নজরুল ইসলামসহ সরকার প্রধানদের গার্ড অব অনার প্রদানের চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। মেহেরপুরের ঐতিহাসিক মুজিবনগরের মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য রক্ষায় গতকাল পর্যন্ত ১৭টি সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। আরো অন্তত ১০টি ক্যামেরা স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে কর্তৃপক্ষের। পাশাপাশি ট্যুরিস্ট পুলিশ, আনসার বাহিনী ও মুজিবনগর থানা পুলিশের টহল বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া ভাস্কর্য প্রাঙ্গণে যাওয়ার আগে গাড়ির গতিরোধক ব্যবস্থা ও চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। ক্যামেরাগুলো ভাস্কর্য ও সারাদেশ থেকে আসা দর্শনার্থীসহ মুজিবনগর কমপ্লেক্সে অবস্থানরত প্রত্যেককে পর্যবেক্ষণের মধ্যে রাখা সম্ভব বলে জানিয়েছেন মুজিবনগর উপজেলা প্রশাসন। সূত্র জানায়, বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী রাজধানী, স্বাধীনতার সূতিকাগারের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৮৮ সালে মুজিবনগরে নির্মাণ করা হয় স্মৃতিসৌধ। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ১৯৯৬ সাল থেকে তিন ধাপে শতকোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় মুজিবনগর কমপ্লেক্স। শেষ ধাপে ২০০৫-১১ সালে সেখানে নির্মিত হয় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক নানা ভাস্কর্য। বর্তমানে মুজিবনগর কমপ্লেক্সের ভেতরে ও বাইরের দিকে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ, তত্কালীন সরকারের শপথ, ১৬ ডিসেম্বরে পাকিস্তানিদের আত্মসমর্পণের ভাস্কর্যসহ মুক্তিযুদ্ধের উল্লেখযোগ্য গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার ৬০০টি ছোট-বড় ভাস্কর্য রয়েছে। মুজিবনগর কমপ্লেক্সের এসব গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসহ সব ধরনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সিসিটিভি স্থাপন করেছে গণপূর্ত বিভাগ। একই সঙ্গে মেরামত করা হয়েছে বিকল ল্যাম্পপোস্টগুলোও। মুজিবনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুজন সরকার জানান, কিছুদিন আগে কুষ্টিয়ায় নির্মাণাধীন ভাস্কর্য ভেঙে দেয়ার ঘটনায় মুজিবনগর কমপ্লেক্সের মধ্যে থাকা মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ ভাস্কর্য রক্ষার্থে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন ও নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। বর্তমানে সশস্ত্র আনসার সদস্যরা পালাক্রমে দিন-রাত দায়িত্ব পালন করছেন। গণপূর্ত বিভাগের পক্ষ থেকে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। এতে ভাস্কর্যসহ মুজিবনগর কমপ্লেক্সের সব কিছুর নিরাপত্তায় প্রযুক্তিগতভাবে নিশ্চয়তা পেয়েছে। জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ মুনসুর আলম বলেন, বাংলাদেশের ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ স্থান মুজিবনগর। সেখানে গড়ে তোলা হচ্ছে আন্তর্জাতিক মানের মুক্তিযুদ্ধ পর্যটন কেন্দ্র। ফলে সেখানে ভাস্কর্যসহ সব স্থাপনার নিরাপত্তা নিশ্চিতে এখন পর্যন্ত ১৭টি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। পুরো এলাকা সিসিটিভির আওতায় আনতে যে ক’টা ক্যামেরা লাগবে সেগুলোও দ্রুত বসানো হবে।

মুজিবনগরে ভাস্কর্যের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের নানা গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।